পাটকল শ্রমিকদের বকেয়া পরিশোধের জন্য প্রধানমন্ত্রী এক হাজার কোটি টাকা বরাদ্দের ঘোষণা দিলেও খুলনা অঞ্চলের পাটকল শ্রমিকরা ধর্মঘট অব্যাহত রাখার কথা জানিয়েছে।
এ নিয়ে রাজধানীর সচিবালয়ে তাদের নেতাদের সঙ্গে অন্য অঞ্চলের শ্রমিক নেতাদের হাতাহাতির ঘটনা ঘটে।
তবে, বুধবারের মধ্যে ২৭টি পাটকলের শ্রমিকদের দুই সপ্তাহের বকেয়া মজুরি পরিশোধ করা
হবে জানিয়ে পাট প্রতিমন্ত্রী মির্জা আজম বলেছেন, এরপরও যারা আন্দোলন করবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বস্ত্র ও পাট প্রতিমন্ত্রী মির্জা আজম আন্দোলনরত পাটশ্রমিকদের প্রতি আগামীকালকের মধ্যেই কাজে যোগদান করার আহবান জানিয়ে বলেন, আগামীকালকের মধ্যেই দুই সপ্তাহের মজুরি আপনারা পেয়ে যাবেন এবং কয়েকদিনের মধ্যে সকল পাওনাদি আপনারা পেয়ে যাবেন। শ্রমিকদের এতোদিনের আন্দোলন যৌক্তিক ছিলো বলে কোন আইনি ব্যবস্থা নেয়া হয়নি বলেও দাবি করেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী তাদের দাবি মেনে নিয়েছেন ও দাবির প্রেক্ষিতে অর্থ বরাদ্দ দিয়েছেন উল্লেখ করে মির্জা আজম বলেন, এখন তাদের এই আন্দোলনের কোন যৌক্তিকতা নেই। তাই আগামীকাল থেকে যদি তারা কাজে যোগদান না করে বিজিএমসি’র রুল অনুযায়ী তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
বকেয়া মজুরি পরিশোধসহ ৭ দফা দাবিতে গত ৪ এপ্রিল থেকে খুলনা অঞ্চলের ৭টি পাটকলের শ্রমিকরা রেলপথ, রাজপথ অবরোধসহ অর্নিদ্দিষ্টকালের জন্য ধর্মঘট চালিয়ে আসছে।
এরকম অবস্থায় সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে রাষ্ট্রায়াত্ব ২৭টি পাটকলে কর্মরত শ্রমিকদের বকেয়া মজুরী, গ্রাচ্যুয়িটি, প্রভিডেন্ট ফান্ড পরিশোধ এবং পাট কেনার জন্য এক হাজার কোটি টাকার বরাদ্দ অনুমোদন করা হয়।
এরপর মঙ্গলবার বিকেলে সকল পাটকলের সিবিএ নেতাদের বৈঠকে ডাকে পাট মন্ত্রণালয়।
কিন্তু, আন্দোলন করছে না এরকম পাটকলগুলোর শ্রমিক নেতাদের বৈঠকে উপস্থিত দেখে খুলনা অঞ্চলের ৭টি মিলের সিবিএ নেতারা সভায় অংশগ্রহণে অপারগতা জানালে মন্ত্রী ইমাদউদ্দিন প্রামাণিক এবং প্রতিমন্ত্রী মির্জা আজম অন্য সিবিএ নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন।
ওই সময় সভাকক্ষের বাইরে অবস্থান করা খুলনা অঞ্চলের শ্রমিক নেতাদের পক্ষে সিবিএ-নন সিবিএ ঐক্য পরিষদের আহ্বায়ক সোহরাব হোসেন জানান, তাদের সঙ্গে আলাদা বৈঠক না করা পর্যন্ত তারা আন্দোলন সংগ্রাম চালিয়ে যাবেন।
পরে পাট প্রতিমন্ত্রী বুধবার বিকেলে তাদের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন বলে জানান।
কিন্তু, মন্ত্রী এবং প্রতিমন্ত্রী চলে যাওয়ার পরপরই খুলনা অঞ্চলের শ্রমিক নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে অংশ নেয়া শ্রমিক নেতারা বাক-বিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন। সচিবালয়ের ৬ নম্বর ভবনে পাট মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষের বানান্দায় এক সময় তা হাতাহাতির রূপ নেয়।
ঢাকায় এরকম অবস্থার মধ্যেই মঙ্গলবার সকাল থেকে শ্রমিকরা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে খালিশপুর নতুন রাস্তা, আটরা শিল্পাঞ্চল ও নওয়াপাড়ায় খুলনা-যশোর মহাসড়কে রেলপথ-রাজপথ অবরোধ করে রাখে।