খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের প্রতিহিংসামূলকভাবে অপসারণ ও বহিষ্কারের ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্কের পক্ষ থেকে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের প্রতি বেশ কিছু আহ্বান জানানো হয়েছে।
খুবি প্রশাসন এসব আহ্বানে সাড়া না দিলে পরবর্তী সময়ে তারা আরও কঠোর কর্মসূচি গ্রহণ করবে বলে সুস্পষ্ট ঘোষণা দিয়েছে। শিক্ষক নেটওয়ার্কের জানানো আহ্বান এবং আহ্বানের ব্যত্যয় ঘটলে যেসব কর্মসূচি নেওয়া হবে, সেগুলো হলো:
ক) খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে ৩ শিক্ষক ও ২ শিক্ষার্থীর প্রতি প্রতিহিংসামূলক শাস্তি প্রত্যাহার করে তাদের স্বপদে সসম্মানে ফিরিয়ে দেয়ার জন্য আগামী ৭ ফেব্রুয়ারী ২০২১ পর্যন্ত সময় দেয়া হয়। এর মধ্যে শাস্তি প্রত্যাহার করা না হলে কঠোরতর কর্মসূচিতে যাওয়া হবে।
খ) খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের বিরুদ্ধে আনীত সকল দুর্নীতির সুষ্ঠু তদন্ত করে দোষীদের বিচার করতে হবে।
গ) ভিসি ফায়েকুজ্জামান যিনি ব্যক্তিগত প্রতিহিংসা চরিচার্থ করতে শিক্ষক-শিক্ষার্থীর প্রতি অমানবিক শাস্তি চাপিয়ে দিয়েছেন এই শাস্তি প্রত্যাহার না হওয়া পর্যন্ত তাকে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ছাড়পত্র না দেবার দাবি জানায় নেটওয়ার্ক।
ঘ) অবৈধ সিন্ডিকেট বাতিল করে এর পেছনে যারা ছিল তাদের বিরুদ্ধে মামলা করতে হবে। অবৈধ সিন্ডিকেটে নেয়া সকল সিদ্ধান্ত অবৈধ এবং তা বাতিল করতে হবে।
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের প্রতি জারি করা প্রতিহিংসামূলক শাস্তি প্রত্যাহার এবং প্রশাসনের দুর্নীতি তদন্তের দাবিতে বৃহস্পতিবার ‘বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্ক’-এর পূর্বঘোষিত কর্মসূচির ডাকে সাড়া দিয়ে, দেশব্যাপী বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের স্ব স্ব ক্যাম্পাসে শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের প্রতিবাদ সমাবেশ ও মানববন্ধন শেষে এই আহ্বান জানানো হয়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবকগণ ‘বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্ক’-এর ব্যানারে উক্ত সমাবেশে অংশগ্রহণ করে এবং জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, গোপালগঞ্জের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা তাদের স্ব স্ব বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে এই প্রতিবাদে শামিল হন।
এসব ঘোষণার পাশাপাশি শিক্ষক বরখাস্তের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করতে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি বরাবর নেটওয়ার্কের পক্ষ থেকে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সাক্ষরিত পত্র ইমেইল ও ফ্যাক্সের মাধ্যমে পাঠানো হয়।
বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্ক জানায়: ‘‘আন্দোলনে অংশ নিয়ে শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবী তুলে ধরার ‘অপরাধে’ ২৩ জানুয়ারি খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষ ১ জন শিক্ষককে বরখাস্ত এবং ২ শিক্ষককে অপসারণসহ ২ শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করেছে, যা যেকোন বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য অত্যন্ত লজ্জাকর।
গত বছর জানুয়ারি মাসে শিক্ষার্থীরা আবাসিক সঙ্কট সমাধানসহ কিছু বিষয়ে দাবিদাওয়া জানাচ্ছিল। সেগুলোতে সমর্থন জানানোতে কর্তৃপক্ষের রোষানলে পড়েন এই শিক্ষকেরা।