ইস্তাম্বুলের সৌদি কনস্যুলেটে সাংবাদিক জামাল খাশোগি হত্যাকাণ্ড নিয়ে সৌদি আরব মিথ্যাচার করছে বলে অভিযোগ করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
রোববার ওয়াশিংটন পোস্টকে দেয়া এক সাক্ষাতকারে তিনি একথা বলেন। তার এই মন্তব্যর পর সৌদি সরকারের উপর আন্তর্জাতিক চাপ আরও বাড়তে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, সাংবাদিক জামাল খাশোগি হত্যাকাণ্ড নিয়ে যদিও তারা মিথ্যা বলছে এবং প্রতারণা করছে, তবুও সৌদির ক্রাউন প্রিন্স মুহাম্মদ বিন সালমানের নেতৃত্বের প্রতি এখনো আস্থা রয়েছে।
এর আগে ট্রাম্প বলেছিলেন, যতক্ষণ পর্যন্ত আমরা উত্তর না পাব ততক্ষণ পর্যন্ত আমি সন্তুষ্ট নই। এটা ‘সম্ভব’ যে সৌদির ক্ষমতাধর ক্রাউন প্রিন্স এই হত্যাকাণ্ড সম্পর্কে কিছু জানেন না।
সৌদির বিরুদ্ধে অবস্থান নিতে ট্রাম্পের উপর যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ ক্রমাগত চাপ অব্যাহত রয়েছে। কয়েকজন সিনিয়র রিপাবলিকান বলেন, সৌদির প্রিন্স খাশোগি হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত। যদি তার সম্পৃক্ততা পাওয়া যায় তাহলে তার বিরুদ্ধে সম্মিলিত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
যুক্তরাষ্ট্রের বেশ কয়েকজন আইনজীবীসহ সৌদি আরবের কড়া সমালোচক রিপাবলিকান সিনেটর লিন্ডসে গ্রাহাম বলেছেন, খাশোগি হত্যার প্রতিবেদন বিষয়ে তারা সন্দিহান।
ট্রাম্প বলেন, গোয়েন্দা বিভাগ এমন কোন প্রমাণ দেখাতে পারেননি যা দিয়ে যুবরাজকে দোষী বলা যায়। কেউ আমাকে এখনো বলেনি যে সে হত্যার জন্য দায়ী। আবার কেউ বলেনি সে জড়িত না। সুতরাং আমরা এখনো এই সিদ্ধান্তে আসতে পারি না।
জামাল খাশোগি গত ২ অক্টোবর তুরস্কের ইস্তাম্বুলে সৌদি কনস্যুলেটে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিতে গিয়ে নিখোঁজ হন।শুক্রবার সৌদি আরব প্রথমবারের মতো স্বীকার করে খাশোগিকে হত্যা করা হয়েছে।
তারা জানায়, ইস্তাম্বুলে সৌদি কনস্যুলেটের ভেতরে ‘ধস্তাধস্তিতে’ খাশোগি নিহত হন। কিন্তু সৌদি আরবের এই বক্তব্য সংশয়ের জন্ম দেয়। সৌদি আরবের এই গল্প সারা বিশ্বে জায়গা করে নিয়েছে বলেও জানিয়েছেন ট্রাম্প।
এছাড়াও সৌদি আরবের ব্যাখ্যা অসম্পূর্ণ উল্লেখ করে বিষয়টি আরো গভীরভাবে তদন্তের দাবি জানিয়েছে বিভিন্ন দেশ। যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্সের পক্ষ থেকে বলা হয় খাশোগিকে হত্যায় সৌদি আরবের নতুন ব্যাখ্যা অসম্পূর্ণ।
অন্যদিকে খাশোগি হত্যাকাণ্ডের প্রকৃত সত্য ও বিস্তারিত সৌদি সরকারকে প্রকাশ করতে হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে তুরস্ক। এ ব্যাপারে কোন ধামাচাপা যুক্তি গ্রহণ করা হবে না বলেও জানিয়েছে তারা। এমনকি সৌদি যদি এ বিষয়ে সত্য প্রকাশ না করে তাহলে তুরস্ক বিস্তারিত প্রকাশ করবে বলেও হুঁশিয়ারি দেয়।