দুর্নীতির দায়ে কারাবন্দী বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার জীবনী বই নিয়ে লেখা ‘বেগম খালেদা জিয়া: লাইফ এন্ড স্টোরি’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করা হয়েছে।
রোববার বিকেলে রাজধানীর লেকশোর হোটেলে সাংবাদিক মাহফুজ উল্লাহ’র লেখা ৭শ’ পৃষ্ঠার বইটির মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সাবেক রাষ্ট্রদূত আনোয়ার হাসিম, নিউএজ পত্রিকার সম্পাদক নুরুল কবির, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক আসিফ নজরুল, অধ্যাপক লায়লা এন ইসলাম৷
অনুষ্ঠানের শুরুতে মাহফুজ উল্লাহ বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়া ৩৬ বছর বয়সে বিধবা হওয়ার পর বাকি জীবন দেশের জন্য কাটিয়েছেন। সে সময় থেকে তিনি নিজ চেষ্টায় দেশের মানুষের মাঝে করে নিজের জায়গা করে নিয়েছেন৷’
‘‘জিয়াউর রহমানের অনুপস্থিতিতে যখন বিএনপির নেতৃত্ব নিয়ে শুরু হয় চরম দ্বন্দ্ব, বিএনপিতে কে হাল ধরবে তা নিয়ে যখন অনিশ্চয়তা শুরু হয় ঠিক তখন দায়িত্ব নেন বেগম খালেদা জিয়া। বাংলাদেশে নারী নেতৃত্বের শুরু হয় খালেদা জিয়ার হাত ধরে৷’
১৯৯১ সালে নির্বাচিত হওয়ার পর রাজনৈতিক সংস্কৃতির অনেক কিছু তাকে বহন করতে হয়েছে উল্লেখ করে লেখক বলেন, তাকে নিয়ে দলের ভেতর এবং বাইরে সমালোচনা আছে৷ কিন্তু সব সমালোচনার ঊর্ধ্বে তাকে যদি মূল্যায়ন করতে হয়, তাহলে একজন আপোসহীন-সংগ্রামী রাজনীতিক হিসেবে তার মূল্যায়ন করতে হবে।
বইটির নামকরণের বিশেষত্ব নিয়ে তিনি বলেন, ‘স্টোরি হলো তা, যা মানুষের মাঝে বিদ্যমান থাকে৷ তিনি মানুষের নেত্রী, জনগণের নেত্রী। তাই এই নামকরণ৷’
‘‘আমি একজন সাংবাদিক ছিলাম তাই, সে জায়গায় একজন সাংবাদিকের কলম দিয়ে বইটি লেখা৷ এটি লিখতে গিয়ে ২০০৮ সাল পর্যন্ত তার জীবনের উপর অনেক গবেষণা করতে হয়েছে, অনেক তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করতে হয়েছে। আমি মনে করি, এই বইটি এক মোহনীয় ব্যক্তিত্ব এবং সংগ্রামের এক অনন্য কাহিনী।’’
বইটির মূল্যায়নে আসিফ নজরুল বলেন, ‘জিয়াউর রহমান নিহত হওয়ার পর বেগম জিয়ার উত্থান হয়েছিলো সহানভূতি দিয়ে। কিন্তু একটি সময় তিনি নিজের সম্মোহনি শক্তি দিয়ে অনন্য বৈশিষ্ট্যের অধিকারী হয়েছেন। তিনি নানা সংগ্রামের মাধ্যমে নিজেকে তৈরি করেছেন৷ পরিচিতি পেয়েছেন আপোসহীন হিসেবে। তিনি যখন জনগণের কল্যাণের জন্য, মানবাধিকারের জন্য কোনো কথা বললে সেখান থেকে নড়েন না, মাথা নত করেন মা। এমন রাজনীতিবিদ বিরল।’
তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি বিএনপি নয় শুধু বিরোধীদেরও এই বইটি পড়া উচিত৷৷
যারা দেশের রাজনীতির ইতিহাস জানতে চায় তারা পড়তে পারেন।’
বইয়ের ব্যাখ্যায় আসিফ নজরুল বলেন, ‘বেগম জিয়ার জন্মদিন নিয়ে অনেকে বিতর্ক করেন৷ কিন্তু ১৫ আগস্ট তার জন্মদিন হিসেবে লিখতে শুরু করেন ১৯৯১ সালে থেকে৷ তখন প্রতিবাদ করেনি কেউ৷ কিন্তু এখন করা হচ্ছে৷ প্রতিবাদ করলে তখন থেকে করা উচিত ছিল৷’
খালেদা জিয়ার প্রশংসা করতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের ভাগ্য উনার সঙ্গে জড়িয়ে আছে। বাংলাদেশ ভালো থাকলে উনি ভালো থাকেন। বাংলাদেশ খারাপ থাকলে উনিও খারাপ থাকেন৷ আমরা যা আজ দেখতে পাচ্ছি৷ আমরা আশা করি, বাংলাদেশ এবং খালেদা জিয়া ভালো থাকবেন৷ খুব শিগগিরই খালেদা জিয়া এবং বাংলাদেশের ভালো সময় ফিরে আসবে।’
বইটিতে ২০০৮ সাল পর্যন্ত বেগম খালেদা জিয়ার জীবনের নানা দিক স্থান পেয়েছে।