দুর্নীতির দায়ে দণ্ডপ্রাপ্ত বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার স্থানান্তর বিতর্কের মধ্যে তথ্যমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ প্রশ্ন রেখে বলেন: পুরাতন কেন্দ্রীয় কারাগারে রাখা হলে আপনারা (বিএনপি) বলছেন তাকে (খালেদা জিয়া) নির্জন কারাগারে রাখা হয়েছে আর এখন যখন কেরানীগঞ্জে নতুন কেন্দ্রীয় কারাগারে নেয়ার কথা হচ্ছে তখন এ আপনারাই আবার বলছেন তাকে নিয়ে ছিনিমিনি খেলা হচ্ছে। বিএনপির কাছে প্রশ্ন করতে চাই তাহলে বেগম জিয়াকে কি পাঁচ তারকা হোটেলে রাখা হবে?
বৃহস্পতিবার বিকালে ধানমন্ডিস্থ আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
হাছান বলেন: খালেদা জিয়ারকে পুরান ঢাকার কারাগারে রাখার পর বিএনপি সমালোচনা করে সংবাদ সম্মেলন করে বলেছিলো, খালেদা জিয়াকে পরিত্যক্ত নির্জন কারাগারে রাখা হয়েছে। আজ যখন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, প্রয়োজনে তাকে (খালেদা জিয়া) কেরানীগঞ্জের কেন্দ্রীয় কারাগারে রাখা হবে। তখন বিএনপি পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলন করে বলা হচ্ছে নির্মাণধীন কারাগারে নেয়ার চেষ্টা হচ্ছে। তাহলে বিএনপির কাছে আমার প্রশ্ন বেগম খালেদা জিয়াকে কোথায় রাখা হবে। এখানে রাখলে বলেন নির্জন কারাগারে আর কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগারে নেয়ার কথা বললে বলেন খালেদা জিয়াকে নিয়ে ছিনিমিনি খেলা হচ্ছে। তাহলে কি তাকে পাঁচ তারকা হোটেল রাখা হবে? বিএনপির কাছে আমার প্রশ্ন।
বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানকে বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রতিষ্ঠাতা বলা হলেও তিনি আসলে গণতন্ত্র নয়, কারফিউতন্ত্র চালু করেছিলেন দাবি করে এ সময় হাছান বলেন: জিয়াউর ক্ষমতায় থাকাকালীন ঢাকা শহরে সন্ধ্যার পরে ও রাত ১২ টার পর কারফিউ থাকতো। বিএনপি বলে জিয়াউর রহমান বহুদলীয় গণতন্ত্র চালু করেছিলো, প্রকৃত পক্ষে জিয়াউর রহমান কারফিউতন্ত্র চালু করেছিলেন। জিয়া অস্ত্র উচিয়ে ক্ষমতা দখল করেছে। অস্ত্রের মাধ্যমে ক্ষমতাকে পাকাপোক্ত করার জন্যে হাজার হাজার সেনা সদস্যকে হত্যা করেছে। তার রাষ্ট্রপতির পদকে পাকাপোক্ত করার জন্যে হ্যাঁ-না ভোট করেছিলো।
‘দেশে গণতন্ত্র নেই, এক নায়কতন্ত্র চালু হয়েছে’-বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের এমন বক্তব্যে কঠোর সমালোচনা করে তথ্যমন্ত্রী বলেন: মির্জা ফখরুল ইসলামের কাছে আমার প্রশ্ন, জিয়াউর রহমান কোন তন্ত্রের বলে বন্দুকের নল উঁচিয়ে ক্ষমতা দখল করেছিলো? যেই দলের জন্মদিন বন্দুকের নলের ওপর। যেই দলের জন্ম অস্ত্র উঁচিয়ে, ক্ষমতার উচ্ছিষ্টদের নিয়ে। সেই দলের মহাসচিব হচ্ছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বাংলাদেশ গণতন্ত্র আছে বিধায় ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেব প্রতিদিন গলা উঁচিয়ে সরকারের সমালোচনা করতে পারেন।
যোগ করেন: তিনি ( ফখরুল) বলেন, কথা বলার অধিকার নেই। সকালবেলা একবার কথা বলেন, আবার বিকেলবেলা কথা বলে, বলেন কথা বলার অধিকার নেই। এ কথাগুলো হাস্যকর। এদেশে গণতন্ত্রের ভিতকে শক্তিশালী করেছেন বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি গণতন্ত্রের জন্য বারবার মৃত্য উপত্যকায় গেছেন। তাকে ১৯ বার হত্যা করার চেষ্টা করা হয়েছে। তিনি গণতন্ত্রের প্রশ্নে, মানুষের অধিকারের প্রশ্নে আপোষ করেননি। বিএনপিতে সুবিধাবাধীদের সন্নিবেশ ঘটছে। এ দলের নেতারা এক সময়ে অন্য দল করতো।
গণতন্ত্রকে ব্যাহত করা চেষ্টা না করে বিএনপিকে রাজনীতিতে সহায়ক ভূমিকা পালন করারও আহ্বান জানান আওয়ামী লীগের এ মুখপাত্র।