চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

খালেদার নাইকো মামলায় রুলের শুনানি বৃহস্পতিবার পর্যন্ত মুলতবি

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা নাইকো দুর্নীতি মামলায় জারি করা রুলের শুনানি বৃহস্পতিবার পর্যন্ত মুলতবি করেছেন হাইকোর্ট।বুধবার খালেদা জিয়ার পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী ব্যারিস্টার রাগিব রউফ চৌধুরী, এসময় দুদকের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন আইনজীবী খুরশীদ আলম খান ।

পরে মুলতবির আদেশ দেন বিচারপতি মো. নূরুজ্জামান ও বিচারপতি জাফর আহমেদের বেঞ্চ।গত রোববার দুদকের দায়ের করা বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি, গ্যাটকো ও নাইকো মামলা বাতিল প্রশ্নে বেগম খালেদা জিয়ার করা চার আবেদনের উপর শুনানি শুরু হয় হাইকোর্টে।

তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদার বিরুদ্ধে এই তিনটি মামলা হয়। স্থগিতাদেশ থাকা ওই মামলাগুলো সচলের উদ্যোগ নেয় দুদক। বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি মামলায় খালেদা জিয়ার পাশাপাশি তার মন্ত্রিসভার ১০ সদস্যসহ ১৬ জনকে আসামি করা হয়। ২০০৮ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি মামলার পর ৫ অক্টোবর ১৬ জনের বিরুদ্ধেই অভিযোগপত্র দেয় দুদক। চীনা প্রতিষ্ঠান কনসোর্টিয়াম অব চায়না ন্যাশনাল মেশিনারিজ ইম্পোর্ট অ্যান্ড এক্সপোর্ট কর্পোরেশনের (সিএমসি) সাথে বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির উৎপাদন, ব্যবস্থাপনা ও রক্ষণাবেক্ষণ চুক্তি করার মধ্য দিয়ে রাষ্ট্রের প্রায় ১৫৮ কোটি ৭১ লাখ টাকার ক্ষতি করার অভিযোগ আনা হয়েছে এই মামলায়।

২০০৮ সালের ১৬ অক্টোবর খালেদার বিরুদ্ধে এ মামলার কার্যক্রম তিন মাসের জন্য স্থগিত করেন হাইকোর্ট। মামলাটি কেন বাতিল করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুলও দেয়া হয়। হাইকোর্টের ওই আদেশ বহাল রাখেন আপিল বিভাগ।

সাত বছর পর চলতি বছরের শুরুতে দুদক মামলাটি সচল করার উদ্যোগ নিলে হাইকোর্টের দেয়া রুলের চূড়ান্ত শুনানি শুরু হয়। গত ৩ ও ৫ মার্চ বিচারপতি মো. মঈনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি জে বি এম হাসানের বেঞ্চে চূড়ান্ত শুনানির পর আদালত রায়ের জন্য ১০ মার্চ দিন রাখে। পরে তা পিছিয়ে ৫ এপ্রিল (রোববার) নতুন তারিখ রাখা হয়।

এরই মধ্যে খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা বেঞ্চ পরিবর্তনের জন্য হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় আবেদন করেন। এরপর গত ২ এপ্রিল তারা ওই আবেদনটি প্রধান বিচারপতির কাছে দেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে প্রধান বিচারপতি খালেদা জিয়ার আবেদন শুনানির জন্য বিচারপতি মো. নূরুজ্জামান ও বিচারপতি জাফর আহমেদের হাইকোর্টে বেঞ্চে পাঠিয়ে দেন।

নাইকো দুর্নীতি মামলা হয় ২০০৭ সালের ৯ ডিসেম্বর, পরের বছর ৫ মে খালেদা জিয়াসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয় দুদক। এতে অভিযোগ করা হয়, কানাডীয় কোম্পানি নাইকোর সাথে তেল গ্যাস অনুসন্ধান চুক্তির মাধ্যমে আসামিরা রাষ্ট্রের প্রায় ১৩ হাজার ৭৭৭ কোটি টাকার ক্ষতি করেছেন। ২০০৮ সালের ৯ জুলাই খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে নাইকো দুর্নীতি মামলার কার্যক্রম স্থগিত করেন হাইকোর্ট, সেই সাথে রুল জারি করেন। সেই স্থগিতাদেশ বহাল থাকে আপিল বিভাগে।

গ্যাটকো দুর্নীতি মামলা দায়ের করা হয় ২০০৭ সালের ২ সেপ্টেম্বর, পরে তা জরুরি ক্ষমতা আইনে অন্তর্ভুক্ত হয়। এ মামলায় খালেদা জিয়া, তার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোসহ ১৩ জনকে আসামি করে দুদক। এই মামলা হওয়ার পরদিন খালেদা জিয়া ও কোকোকে গ্রেফতার করা হয়। ২০০৮ সালের ১৩ মে খালেদা জিয়াসহ ২৪ জনের বিরুদ্ধে এ মামলায় অভিযোগপত্র দেয়া হয়।

মামলাটি জরুরি ক্ষমতা আইনের অন্তর্ভুক্ত করার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে এবং বিচারিক আদালতে মামলার কার্যক্রমের ওপর স্থগিতাদেশ চেয়ে ২০০৭ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর হাইকোর্টে আলাদা দুটি রিট আবেদন করেন খালেদা জিয়া। তিন দিন পর মামলার কার্যক্রম স্থগিত করে রুল দেন হাইকোর্ট। মামলাটি জরুরি ক্ষমতা আইনের অন্তর্ভুক্ত করা কেন বেআইনি ও কর্তৃত্ব বহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয় ওই রুলে। তবে হাইকোর্টের দেয়া স্থগিতাদেশ পরে আপিল বিভাগে বাতিল হয়ে যায়।

দুদক আইনে গ্যাটকো মামলা দায়েরের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ২০০৮ সালে আরেকটি রিট আবেদন করেন খালেদা জিয়া। তার আবেদনে হাইকোর্ট আবার মামলার কার্যক্রমের ওপর স্থগিতাদেশ দেন।