ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক ও কোচ রে ইলিংওর্থ মারা গেছেন। খাদ্যনালীতে ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে শনিবার ৮৯ বছর বয়সে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন দেশকে ৩১ ম্যাচে নেতৃত্ব দেয়া অলরাউন্ডার।
রে’র মৃত্যুতে ইংল্যান্ড এন্ড ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ডের প্রধান নির্বাহী টম হ্যারিসন শোক প্রকাশ করেছেন। জাতীয় দল ও ইংলিশ ক্রিকেটে অসামান্য অবদানের জন্য রে’কে সবাই মনে রাখবে বলে বোর্ডের পক্ষে বিবৃতিতে উল্লেখ করেছেন তিনি।
‘অসাধারণ একজন ক্রিকেটার ছিলেন রে। ক্রিকেটের প্রতি ভালোবাসা এবং শ্রদ্ধার কারণে ক্যারিয়ার শেষ হয়ে যাওয়ার পরও নিজের ক্রিকেটীয় জ্ঞান দিয়ে ইংল্যান্ডকে সাহায্য করে গেছেন। তার পরিবার ও বন্ধুদের প্রতি সমবেদনা জানাচ্ছি।’
রে’র আজীবনের সঙ্গী ইয়র্কশায়ার ক্লাবও গভীর শ্রদ্ধা জানিয়েছে। ক্লাবটির চেয়ারম্যান লর্ড প্যাটেল রে’কে ইংল্যান্ড ও ইয়র্কশায়ারের অন্যতম সেরা ক্রিকেটার হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন। শোক প্রকাশ করেছে লেস্টারশায়ার, মেরিলিবোর্ন ও ফার্সলি ক্রিকেট ক্লাব।
খাদ্যনালীর ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ায় বেশ কিছুদিন ধরে রেডিওথেরাপি নিতে হচ্ছিল রে’কে। চলতি বছরের শুরুর দিকে ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মারা যান তার স্ত্রী শার্লি। স্ত্রীর মৃত্যুর পূর্বের অসহ্য যন্ত্রণা দেখে বেশ ভীতসন্ত্রস্ত রে অনেকটা হাল ছেড়ে দিয়েছিলেন।
‘আমার স্ত্রী তার জীবনের শেষ ১২ মাসে যে অসহ্য যন্ত্রণা সহ্য করেছে, সেটা আমি চাই না। ব্যথা নিয়ে হাসপাতাল থেকে হাসপাতালে অনেক বাজে সময়ই পার করেছিল সে। আমি বিশ্বাস করি শান্তির মৃত্যুতে। যে অসহ্য যন্ত্রণার মধ্য দিয়ে শার্লি শেষ ১২ মাস গিয়েছিল, ওভাবে বেঁচে থাকার কোনো মানে হয় না।’
সাবেক অধিনায়ক ইংলিশদের জন্য খেলেছেন মোট ১৫ বছর। সাদা জার্সিতে ৬১ টেস্ট খেলে প্রায় ২৪ গড়ে রান করেছেন ১,৮৩৬। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ১২২টি উইকেট আছে তার।
রে সদা পোশাকে ইংল্যান্ডকে নেতৃত্ব দিয়েছেন ৩১ ম্যাচে। যার মধ্যে জিতেছেন ১২টিতে। তার নেতৃত্বাধীন সবচেয়ে বড় জয় এসেছিল ১৯৭০-৭১ সালে। সেবছর অজিদের মাটিতে ২-০তে অ্যাশেজ জিতেছিল ইংলিশরা।
শুধু জাতীয় দলই নয়, ইংল্যান্ডের বিভিন্ন ক্লাবে ৩২ বছর প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট খেলেছেন রে। সেখানে ২১,১৩৪ রানের পাশাপাশি ২,০৭২টি উইকেট নিয়েছেন সফলতম অলরাউন্ডার হিসেবে। কাউন্টিতে ইয়র্কশায়ার এবং লেস্টারশায়ারে খেলেছেন।
ক্রিকেটে অসামান্য অবদান রাখায় ১৯৬০ সালে রে উইজডেন ক্রিকেটার অব দ্য ইয়ার সম্মাননা পান। ১৯৯৩-৯৬ পর্যন্ত ইংল্যান্ড ক্রিকেট বোর্ডের প্রধান নির্বাচকের দায়িত্ব পালন করেছেন। ১৯৯৫-৯৬ সালে ইংলিশ দলের কোচের ভূমিকায় ছিলেন।