ভারতের বিপক্ষে টি-টুয়েন্টি ফরম্যাটে জয়ের খাতা খুলতে বাংলাদেশের সামনে লক্ষ্য ১৪৯ রানের। রোববার দিল্লিতে আগে ব্যাট করে ৬ উইকেটে ১৪৮ তুলেছে স্বাগতিকরা।
বিরাট কোহলি-মহেন্দ্র সিং ধোনি অনুপস্থিত। অন্যদিকে সাকিব আল হাসান ও তামিম ইকবালের না থাকা। ভারত-বাংলাদেশ দুই প্রতিবেশী যখন অরুণ জেটলি স্টেডিয়ামে সিরিজের প্রথম টি-টুয়েন্টিতে মুখোমুখি, তখন নিশ্চিতভাবেই ক্রিকেটপ্রেমীরা এই তারকাদের অভাব বোধ করবেন। তবে ম্যাচের উত্তেজনায় যে তার বিন্দুমাত্র প্রভাব পড়বে না সেটা দুদলের আগ্রাসী মেজাজ দেখেই বোঝা যায়!
ব্যাট-বলের লড়াই ছাপিয়ে প্রথম টি-টুয়েন্টিতে আলোচনার কেন্দ্রে ছিল দিল্লির দূষণ। ধোঁয়াশায় ঢাকা মাঠে খেলা কতটা নিরাপদ, তা নিয়ে গত কয়েকদিনে বিস্তর আলোচনা হয়েছে। ম্যাচ তথা সিরিজ শুরুর মুহূর্তে সেইসব আলোচনাও অবশ্য ধোঁয়াশার আড়ালে চলে গেছে। সামনে চলে আসে ক্রিকেটীয় উত্তাপ।
টস জিতে ভারতকে প্রথমে ব্যাট করার আমন্ত্রণ জানায় বাংলাদেশ। অধিনায়কের সিদ্ধান্ত শুরু থেকেই সঠিক প্রমাণ করেন বাংলাদেশের বোলাররা।
ইনিংসের প্রথম ওভারেই সাফল্য পায় বাংলাদেশ। শুরুর পাঁচ বলে ১০ রান আসলেও শেষ বলে রোহিত শর্মাকে এলবিডব্লিউ’র ফাঁদে ফেলেন শফিউল ইসলাম। রিভিউ নিয়েও শেষ রক্ষা পাননি ভারত অধিনায়ক।
রোহিতকে হারিয়ে ধীরে চলতে থাকে ভারত। বলের সঙ্গে রানের তাল রেখে চলতে থাকেন শেখর ধাওয়ান এবং লোকেশ রাহুল। এরমধ্যেই মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ বল তুলে দেন আমিনুল ইসলাম বিপ্লবের হাতে।
অধিনায়ককে হতাশ করেননি উঠতি তারকা। অধিনায়কের হাতেই ক্যাচ বানিয়ে রাহুলকে ফেরান বিপ্লব। ১৭ বলে ১৫ করতে সক্ষম হন রাহুল। পরে ২২ করা শ্রেয়াস আয়ারকে অভিষিক্ত নাঈম শেখের ক্যাচ বানান মাত্র দ্বিতীয় ম্যাচ খেলতে নামা লেগি।
এদিন স্বভাববিরুদ্ধ ব্যাটিং করেন ধাওয়ান। তার ধীরগতির ব্যাটিংকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেক ভারতীয় সমর্থক ‘ফৌজদারি অপরাধের’ সঙ্গে তুলনা করেন! ৪২ বলে ৪১ রান করে মাহমুদউল্লাহ-মুশফিকের যুগল চেষ্টায় রানআউট হন ধাওয়ান। তার ৪১-ই দলীয় সর্বোচ্চ ইনিংস।
বাংলাদেশের বোলিং চাপের কাছে নিজেকে সেট করতে পারেননি অভিষিক্ত শিভম দুবে। আফিফ হোসেন ফিরতি যে ক্যাচে তাকে ফিরিয়েছেন, সেটা ‘ক্যাচ অব দ্য সিরিজ’ হবে কিনা সেটা সময়ই বলবে, তবে প্রথম ইনিংস শেষে আপাতত ‘ক্যাচ অব দ্য ম্যাচ’ তো বটেই!
একরকম খাদ থেকে ভারতকে টেনে তোলার চেষ্টা করেছিলেন রিশভ পান্ট। কিন্তু ২৭ রানেই থামতে হয় ধোনির ‘উত্তরসূরি’কে। স্কোরবোর্ডের করুণ দশা দেখে বিগ শটে গিয়েছিলেন পান্ট। লংঅন দাঁড়িয়ে সহজ ক্যাচ নিয়ে শফিউলকে দ্বিতীয় উইকেট নিতে সাহায্য করেন নাঈম শেখ।
১৮ ওভার পর্যন্ত ভারতে চাপে রেখে ১৩০ রানের মধ্যেই আটকে রাখার অবস্থায় ছিল বাংলাদেশ। কিন্তু শেষ দুই ওভারে বোলারদের বেহিসেবি বোলিংয়ে সেটা সম্ভব হয়নি। ১৯তম ওভারে শফিউল দেন ১৪ রান, আর শেষ ওভারে আরও দুই রান বাড়িয়ে সেটা ১৬তে নেন আল-আমিন।
শেষ ১২ বলে ৩০ রান নিয়ে শিশির ভেজা মাঠে বাংলাদেশের জন্য টার্গেটটা চ্যালেঞ্জিং করে তুলল স্বাগতিকরা। যাতে বড় অবদান ক্রুনাল পান্ডিয়ার ৮ বলে ১৫ এবং ওয়াশিংটন সুন্দরের ৫ বলে ১৪ রানে অপরাজিত থাকেন।