একের পর এক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালিয়ে কোরীয় অঞ্চলকে অস্থিতিশীল করে রাখা নর্থ কোরিয়ার নেতা কিম জং উনের অবশেষে শুভবুদ্ধির উদয় হয়েছে। নর্থের প্রেসিডেন্ট সাউথ কোরিয়া সফর করেছেন। সেসময় চির বৈরী দুই কোরিয়ার নেতাদের মধ্যে করমর্দনের বিরল দৃশ্যও দেখেছে বিশ্ব। বিরল এই কারণে যে, ১৯৫৩ সালের কোরীয় যুদ্ধের পর ৬৫ বছরে এই প্রথম কোনো নর্থ কোরিয়ান নেতা পা রাখলেন সাউথে। তাই পারমাণবিক যুদ্ধের হুমকিতে বিশ্ব যখন অস্থিতিশীল, তখন কিমের সফর বিশ্ববাসীকে নতুন বার্তাই দিচ্ছে। সংবাদমাধ্যমের খবরে জানা যায়, ঐতিহাসিক এই সফরে বেশকিছু বিষয়ে একমত হয়েছেন দুই দেশের প্রেসিডেন্ট। কোরীয় উপদ্বীপে পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণে একমত হয়েছেন তারা। এছাড়া সেখানে সামরিক উত্তেজনা বন্ধের চেষ্টা করবেন তারা। পাশাপাশি কোরীয় যুদ্ধের ফলে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়া পরিবারগুলোর মধ্যে যোগসূত্র স্থাপনসহ দুই দেশের মধ্যে যোগাযোগ স্থাপনের ওপর গুরুত্ব দেয়ার বিষয়ে তারা একমত হয়েছেন। অস্ত্রের খেলা বন্ধ করে চীন ও যুক্তরাষ্ট্রকে সঙ্গে নিয়ে এ বছরই শান্তি চুক্তিতে সই করার বিষয়েও একমত হয়েছে দুই দেশ। তাদের এই নতুন দিগন্তের পথ উন্মোচনকে কিম জং উনের খামখেয়ালিপনা ভাবার সুযোগ নেই। হাস্যোজ্জ্বল চেহারায় আত্মবিশ্বাসী হয়ে তার সাউথ কোরিয়ার মাটিতে পা রাখা, আর একই ভঙ্গিমায় সাউথের প্রেসিডেন্ট মুন জায়ে-ইনের তাকে বরণ করে নেওয়া প্রকৃতপক্ষে নতুন বার্তাই দিচ্ছে। আমরা মনে করি, এ বার্তা শুধু দুই কোরিয়ার মানুষের জন্য নয়, বরং সীমানা ছাড়িয়ে তা ছড়িয়ে পড়বে বিশ্বব্যাপী। তাদের অস্ত্রের মহড়ায় যেমন ভীত হয় পুরো বিশ্ব, তেমনি তাদের শান্তির বার্তায় শান্তি ছড়িয়ে পড়বে। অস্ত্র দিয়ে কথিত শান্তি প্রতিষ্ঠার চেষ্টা নয়, বরং পারস্পরিক বিশ্বাস, সমঝোতা আর শ্রদ্ধাবোধ প্রকৃত শান্তি বয়ে আসুক পৃথিবীর বুকে। এই সফরের মাধ্যমে শান্তির এক নতুন যুগের শুরু হবে, এমনটাই আমাদের প্রত্যাশা।