খাদ্য মন্ত্রণালয় এবং জাতিসংঘের ফুড অ্যান্ড এগ্রিকালচার অর্গানাইজেশন (এফএও) বাংলাদেশে ক্ষুধা ও অপুষ্টির সমস্যা সমাধানের জন্য করা বিনিয়োগের প্রভাব বিশ্লেষণ করে একটি ফ্ল্যাগশিপ রিপোর্ট প্রকাশ করেছে।
২০২০ সালের মনিটরিং রিপোর্টটিতে ২০১৬ সালের জুন থেকে ২০২০ সালের জুন পর্যন্ত চার বছরের সময়কালে খাদ্য ও পুষ্টি (এফএনএস) বিনিয়োগের কার্যকারিতা প্রদর্শন করা হয়েছে এবং টেকসই খাদ্য ব্যবস্থা অর্জনের জন্য করণীয় সম্পর্কে প্রস্তাবনা উঠে এসেছে।
এফএও এবং অন্যান্য দাতাসহ যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা (ইউএসএআইডি) এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) প্রতিনিধিদের সঙ্গে উর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তাদের পাশাপাশি উপস্থিত ছিলেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার।
প্রতিবেদনে দেশগুলোর বিনিয়োগ পরিকল্পনায় নির্ধারিত লক্ষ্যসমূহের দিকে অগ্রগতির বিবরণ দেওয়া হয়েছে। সেখানে উঠে এসেছে পুষ্টি সংবেদনশীল খাদ্য পদ্ধতি যেটা সিআইপিটু নামে পরিচিত। সিআইপিটু-র লক্ষ্যমাত্রা হলো- খাদ্য পদ্ধতিগুলোকে পুষ্টি-সংবেদনশীল এবং টেকসই করে তৈরি করে সবার জন্য উন্নত খাদ্য সুরক্ষা এবং পুষ্টি অর্জন।
এফএও’র অপুষ্টির চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা (এমইউসিএইচ) প্রকল্প প্রতিবেদনটি তৈরির জন্য খাদ্য মন্ত্রণালয়ের খাদ্য পরিকল্পনা ও পর্যবেক্ষণ ইউনিটকে (এফপিএমইউ) প্রযুক্তিগত সহায়তা প্রদান করেছে।
বাংলাদেশে এফএও প্রতিনিধি রবার্ট ডি সিম্পসন জাতিসংঘের শূন্য ক্ষুধা অর্জনের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য অর্জনে অগ্রগতি পর্যবেক্ষণ করতে সহায়তা করার জন্য এই প্রতিবেদনের প্রশংসা করেছেন। লক্ষ্যমাত্রা বৃদ্ধির ব্যয়কে সমর্থন করে পুষ্টি উন্নয়নে আরও সংহত পদ্ধতির প্রয়োজনীয়তার উপরও জোর দিয়েছেন তিনি।
তিনি বলেন, অগ্রগতির পর্যবেক্ষণ এবং উচ্চমানের তথ্য ব্যবহারই সবচেয়ে কাজে আসবে কী কৌশল এবং হস্তক্ষেপ বেশি কার্যকর হবে তা জানার জন্য। কোনটি ভাল কাজ করবে এবং কোনটি কার্যকর হবে না তা জানার মাধ্যমেই আমরা সীমিত উপকরণ যেখানে সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন তার দিকে লক্ষ্য রাখতে পারবো।
ইউএসএআইডি বাংলাদেশের অর্থনৈতিক বৃদ্ধি অফিসের পরিচালক জন স্মিথ-রিন মন্তব্য করেন, বাংলাদেশে খাদ্য ও পুষ্টি সুরক্ষা পর্যবেক্ষণের সাফল্য উদযাপিত হওয়া দরকার। ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের অন্যান্য দেশের সাথে আমাদের শেখানো এই পাঠগুলি ভাগ করে নেওয়া উচিত।
তিনি বেসরকারী খাতের হাতে শক্তি প্রয়োগের উপর গুরুত্ব দেন। যেটার কথা ঢাকা নারী চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিষ্ঠাতা প্রেসিডেন্ট নাজ ফারহানা বলেছেন।
খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেন, আমরা বাচ্চাদের বিকাশে বাধা এবং অপুষ্টি হ্রাস করতে পেরেছি। মধ্যম আয়ের দেশে উন্নত হলে আমরা খাদ্য সুরক্ষার ক্ষেত্রে আনুপাতিকভাবে আরও কিছু অর্জন করব। আমরা আমাদের নতুন খাদ্য ও পুষ্টি সুরক্ষা নীতি বাস্তবায়নের জন্য পাঁচটি কৌশল গ্রহণ করেছি এবং শিগগিরই এসব বাস্তবায়ন করব।
এফএও খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা এবং অপুষ্টি দূরীকরণে বিভিন্ন নীতি, কৌশল, আইন ও কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের প্রক্রিয়াটিকে সহায়তা করে একটি স্বাস্থ্যকর, টেকসই ভবিষ্যতের জন্য বাংলাদেশের প্রচেষ্টাকে সমর্থন করে আসছে। বাংলাদেশের খাদ্য ও পুষ্টি সুরক্ষা নীতি আগামী মাসে চালু করার পরিকল্পনা করা হয়েছে।