গোলা নিক্ষেপ করে রুশ যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত করার জন্য ক্ষমা চাইবে না তুরস্ক। তুরস্কের রাজধানী আনকারায় বৃহস্পতিবার সিএনএনকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে এ কথা বলেন দেশটির প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান।
এরদোগান বলেন, ‘আমি মনে করি, যদি কোনো পক্ষের ক্ষমা চাইতেই হয়, তবে সে পক্ষটি আমরা নই। যারা আমাদের আকাশসীমা লঙ্ঘন করেছে তাদের আমাদের কাছে ক্ষমা চাওয়া উচিত। আমাদের পাইলট এবং সশস্ত্র বাহিনী শুধু তাদের দায়িত্ব পালন করেছে। আর তাদের দায়িত্ব ছিলো আমাদের পক্ষে আইন ভঙ্গ হলে তাতে প্রতিক্রিয়া দেখানো। আমার মনে হয় এটাই মূল কথা।’
এর আগে আনকারায় স্থানীয় নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে প্রেসিডেন্ট জানান, আজকেও যদি এমন কোনো পরিস্থিতির সৃষ্টি হয় তখনো তুরস্ক একইভাবে সাড়া দেবে।
মঙ্গলবার রুশ যুদ্ধবিমান ভূপাতিত হওয়ার পর থেকেই বারবার তুরস্ক বলে আসছে, অনেকবার সতর্ক করার পরও বিমানটি তুরস্কের আকাশসীমায় ঢুকে পড়লে বাধ্য হয়ে সেটিকে লক্ষ্য করে গোলা ছোঁড়া হয়।
তবে রাশিয়া প্রতিবারই তুরস্কের এই দাবি প্রত্যাখ্যান করেছে। যুদ্ধবিমানের উদ্ধারকৃত কো-পাইলট ক্যাপ্টেন কনস্টানটিন মুরাখতিন রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমকে জানান, আঘাত হানার আগে রেডিওর মাধ্যমে বা সরাসরি, কোনোভাবেই কোনো ধরণের সতর্কবার্তা দেয়নি তুরস্ক।
সতর্কবার্তার প্রমাণ হিসেবে তুর্কি সামরিক বাহিনী একটি অডিও ক্লিপ প্রকাশ করে। ক্লিপটিকে ভুয়া বা বানানো বলে রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বৃহস্পতিবার টুইটারে একটি পোস্ট দেয়।
বৃহস্পতিবার রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন মস্কোতে সাংবাদিকদের বলেন, হামলাটি অপ্রত্যাশিত ছিলো। কেননা তুরস্ককে রাশিয়া তার বন্ধু মনে করতো।
তিনি বলেন, ‘এমন একটি বন্ধুপ্রতিম পক্ষের কাছ থেকে আঘাতের শিকার হতে হবে তা আমরা কখনো কল্পনাই করতে পারিনি।’
পুতিন বলেন, সিরিয়ার সীমান্তের এক কিলোমিটার ভেতরে থাকা অবস্থাতেই যুদ্ধবিমানটিতে হামলা চালানো হয়।
এরদোগান সিএনএন-এর কাছে দাবি করেন, তুর্কি আকাশসীমায় ১৭ সেকেন্ড অবস্থানের পর বিমানটিকে লক্ষ্য করে গোলা ছোঁড়া হয়।
তিনি বলেন, ‘আমরা জানতাম বিমান ছিলো মোট দু’টি। তার মধ্যে একটি সিরিয়ায় ফিরে গিয়েছিলো। অন্যটি এরপরও তুর্কি আকাশসীমায় রয়ে যাওয়ায় সেটিকে ভূপাতিত করা হয়।’
এর আগে রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সার্গেই ল্যাভরভ বলেন, রুশ বিমান ভূপাতিত করা কোনো স্বতঃস্ফূর্ত ঘটনা ছিলো না। ‘দেখে মনে হচ্ছে এটি ছিলো পরিকল্পিত।’