মানবস্বাস্থ্য ও পরিবেশের ক্ষতি করে এমন কীটনাশক মনিটর করতে একটি স্বাধীন কমিশন গঠনের নির্দেশ কেন দেয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।
সেই সাথে গ্লাইফোসেট সমৃদ্ধ কীটনাশকের লাইসেন্স প্রদান এবং তার নবায়ন কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না রুলে তাও জানতে চাওয়া হয়েছে এবং আগামী আট সপ্তাহের মধ্যে সরকারকে এই রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা) সহ মোট ৭টি বেসরকারি পরিবেশবাদী সংস্থার করা এ সংক্রান্ত জনস্বার্থমূল রিটের শুনানি নিয়ে রোববার বিচারপতি এম এনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মোঃ মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ রুল সহ আদেশ দেন।
আদালত তার আদেশে গ্লাইফোসেট সমৃদ্ধ সকল কীটনাশকের ক্ষতিকারক প্রভাবের বিষয়ে প্রচারণার মাধ্যমে সচেতনতা সৃষ্টি করতে এবং গ্লাইফোসেট সমৃদ্ধ কীটনাশকের ব্যবহার থেকে সরে আসার বিষয়ে ৯০ দিনের মধ্যে কর্মপরিকল্পণা প্রণয়নের নির্দেশ দেন।
আদালতে বেলা’র পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। আর রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন সহকারী অ্যাটর্নী জেনারেল তৌফিক সাজোয়ার।
আজ শুনানিতে সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান আদালতকে বলেন: ‘ক্যান্সার গবেষণা বিষয়ক আন্তর্জাতিক সংস্থা আএআরসির একটি প্রকাশনাতে ‘গ্লাইফোসেট’ উপাদানটিকে “মানুষের জন্য সম্ভাব্য ক্যান্সার সৃষ্টিকারী” আখ্যা দেয়া হয়। পরবর্তীতে সানফ্রানসিসকো ও ক্যালিফোর্নিয়ার ৩টি আদালত গ্লাইফোসেট সমৃদ্ধ রাউন্ডআপ ব্যবহারে ক্যান্সার আক্রান্ত ব্যক্তিবর্গকে প্রচুর পরিমাণ ক্ষতিপূরণ প্রদানের নির্দেশ দেন এবং ইতোমধ্যে আইএআরসি’র প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করে ভারতের পাঞ্জাব ও কেরালা, বাহরাইন, অস্ট্রিয়া, জার্মানী, ডেনমার্ক ও ফ্রান্সসহ বেশকিছু দেশ গ্লাইফোসেট নিষিদ্ধ অথবা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে নিষিদ্ধ করতে এবং নিরাপদ বিকল্প প্রবর্তনে কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।
শুনানিতে এই আইনজীবী আরো বলেন: ‘উন্নত বিশ্ব গ্লাইফোসেট থেকে সরে আসার উদ্যোগ গ্রহণ করলেও বাংলাদেশে অন্তত ৭৯ ধরনের প্রচলিত কীটনাশকে গ্লাইফোসেটের উপস্থিতি রয়েছে। এছাড়া কেবল ইক্ষু এবং চাবাগানে গ্লাইফোসেট সমৃদ্ধ কীটনাশক ব্যবহার করা হয় এমন দাবি করা হলেও বেলা’র মাঠ পর্যায়ের গবেষণায় এটা স্পষ্ট হয়েছে যে, ইক্ষু এবং চা চাষ হয় না আমাদের দেশের এমন অঞ্চলেও অনিয়ন্ত্রিতভাবে গ্লাইফোসেট সমৃদ্ধ অন্যান্য কীটনাশক বিক্রি ও ব্যবহৃত হচ্ছে।’