চলতি বছরের শেষ নাগাদ বাংলাদেশ ক্রিকেট তার প্রশাসনিক কাঠামো বিকেন্দ্রিকরণের জন্য প্রথম পদক্ষেপ নিতে পারে বলে জানিয়েছেন বিসিবির ভাইস প্রেসিডেন্ট মাহবুবুল আনাম। দেশের আটটি বিভাগের একটিতে বহুল প্রতীক্ষিত ‘আঞ্চলিক ক্রিকেট সংস্থা’ পাইলট প্রকল্প হিসেবে চালু করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ ক্রীড়া সাংবাদিক সংস্থা আয়োজিত “আমাদের তৃণমুলের ক্রিকেট” শীর্ষক এক সেমিনারে একথা জানান মাহবুবুল।
তিনি বলেন, ক্রিকেটে আমরা স্থানীয় সক্ষমতার উন্নয়ন এবং বিভিন্ন বিভাগে একটি পৃথক ক্রিকেট বর্ষপঞ্জি তৈরির চেষ্টা করছি। যাতে করে শুধু ঢাকার কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে ক্রিকেট পরিচালিত না হয়।
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) নীতিমালায় আঞ্চলিক ক্রিকেট সংস্থার সংজ্ঞায় বলা হয়েছে, এটি এমন একটি পর্ষদ যার মাধ্যমে বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রশাসনিক বিভাগ থেকে ক্রিকেট পরিচালনা করা যায়। এর মাধ্যমে দেশজুড়ে আঞ্চলিক এবং জেলা ক্রীড়া সংস্থা (ডিএসএ) এর মাধ্যমে ক্রিকেট পরিচালনার নিশ্চয়তা দেবে বিসিবি।
যখন ৬৪ জেলায় ডিএসএ গঠন করা হয় তখন কাজ অব্যাহত রাখার পরও প্রায় দুই দশক ধরে আঞ্চলিক ক্রিকেট পর্ষদ প্রচারের আলোয় আসেনি। ২০১২ সালে বোর্ডের নীতিমালায় এই সংস্থার বিষয়টি অন্তর্ভূক্ত হয়।
মাহবুবুল বলেন, ক্রিকেটের যথাযথ বিকেন্দ্রিকরণ পদ্ধতির পরিবর্তে বর্তমানে জনপ্রিয়তার উপর ভিত্তি করে খেলাটি পরিচালিত হচ্ছে।
“ডিসেম্বর মাস থেকে আমরা পাইলট প্রকল্পের অধীনে অন্তত একটি বিভাগকে আলাদা করে দেবো। বিভাগটির আলাদ বর্ষপঞ্জি থাকবে। জনগণের কাছে সুযোগটি নিয়ে যেতে হবে। সুযোগের কাছে জনগণ আসবে, এমনটি প্রত্যাশা আমরা করতে পারি না। আমাদের স্থানীয় সক্ষমতা তৈরি করতে হবে। এছাড়া আমরা আঞ্চলিক ক্রিকেট সংস্থা চালাতে পারবো না।”
তিনি বলেন, বর্তমানে আমরা জনপ্রিয়তার ভিত্তিতে ক্রিকেট পরিচালনা করছি। কিন্তু আনুষ্ঠানিক ক্রিকেটে আমাদের অংশগ্রহণ সর্বনিম্ন পযার্য়ে। উৎসাহী সংগঠকদের দিয়ে আমরা আমাদের ক্রিকেটের পরিচালনা অব্যাহত রাখতে পারি না। তৃণমূল পর্যায়ে স্বতঃস্ফূর্ততা এবং পেশাদারিত্বের মধ্যে একটা ভারসাম্য আমাদের নিশ্চিত করতে হবে।
সেমিনারে বাংলাদেশের বিভিন্ন পর্যায়ের মানুষকে আমন্ত্রণ করা হয়েছিলো। এদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন কুমিল্লা, মাদারীপুর, রাজশাহী এবং বরিশালের ক্রিকেট কোচ এবং সংগঠক। দেশজুড়ে ক্রিকেটের বিস্তারে অসংখ্য প্রতিবন্ধকতা তুলে আনার জন্য এই প্রোগ্রামটি বিসিবির জন্য একটি প্ল্যাটফর্ম হয়ে উঠেছিলো।
বিসিবির প্রতিনিধি হিসেবে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মাহবুবুল আনাম, ক্রীড়া উন্নয়ন কমিটির চেয়ারম্যান খালেদ মাহমুদ এবং ক্রীড়া উন্নয়ন ব্যবস্থাপক নাজমুল আবেদিন।
রাজশাহী ক্রিকেটকে বলতে গেলে একাই বদলে দেওয়া বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক খালেদ মাসুদ বলেন, তার অঞ্চলে সুযোগ-সুবিধা কোনো সমস্যা নয়। কিন্তু রাজশাহীর প্রথম শ্রেণির প্রতিযোগিতায় সাম্প্রতিক দুর্যোগের জন্য দুর্বল ব্যবস্থাপনাকে দায়ী করেন তিনি।
কুমিল্লার অভিজ্ঞ কোচ এবং সংগঠক বদরুল হুদা বলেন, আঞ্চলিক ক্রিকেটে সবচেয়ে বড় সমস্যাগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো স্থানীয় লিগ আয়োজনের অভাব। তার জেলায় মাত্র একটি নকআউটভিত্তিক লীগের আয়োজন হয় বলে জানান তিনি।
বাংলাদেশেল সাবেক অধিনায়ক মাহমুদ বলেন, সেমিনারে যেসব বিষয় উঠে এসেছে সেগুলো দেশটির তৃণমূলের ক্রিকেটের বাস্তব চিত্র।
যেসব জেলা লিগ প্রতিযোগিতার আয়োজন করে না সেগুলোকে বিসিবি’র অর্থায়ন বন্ধ করে দেওয়ার দাবি জানান মাসুদ।
সূত্র: ক্রিক-ইনফো