বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের আন্দোলনে সমর্থন জানিয়েছে ক্রিকেটারদের প্রতিনিধিত্ব করা আন্তর্জাতিক সংস্থা ‘দ্য ফেডারেশন অব ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেটার্স অ্যাসোসিয়েশনস (ফিকা)’। মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে সাকিব-তামিমদের আন্দোলনকে সমর্থন জানানোর পাশাপাশি খেলোয়াড়দের একতা এবং একসাথে অবস্থান নেয়ার প্রশংসা করে সংস্থাটি।
১৯৯৮ সালে গঠিত হওয়ার পর থেকে সব দেশের জাতীয় খেলোয়াড়দের সংগঠনকে অন্তর্ভুক্ত করে পেশাদার ক্রিকেটারদের কার্যক্রম সমন্বয় করাই সংস্থাটির প্রধান কাজ। ফিকা’র মাধ্যমেই ‘আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিলের ক্রিকেট প্লেয়িং কমিটিতে’ খেলোয়াড়দের সমস্যাবলী তুলে ধরা হয়।
সোমবার ১১ দফা দাবির কথা জানিয়ে ধর্মঘটের ডাক দেন বাংলাদেশ জাতীয় ও ঘরোয়া দলের ক্রিকেটাররা। তাদের দাবিতে বেতন বাড়ানোসহ প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটের বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা বাড়ানোর কথা রয়েছে। দাবি মানা না পর্যন্ত সব ধরনের ক্রিকেট কার্যক্রম থেকে দূরে থাকার আল্টিমেটামও দেন তারা।
এমন অবস্থায় মঙ্গলবার জরুরি বৈঠক ডাকে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। বৈঠক শেষে সংবাদ সম্মেলনে ক্রিকেটারদের আচরণ ও ধর্মঘটে বিস্ময় প্রকাশ করেন বোর্ড প্রেসিডেন্ট নাজমুল হাসান পাপন। তিনি আর্থিক কারণে আন্দোলনে যুক্তি খুঁজে পাচ্ছেন না বলেও জানান। এছাড়া আন্দোলনকে ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে উল্লেখ করেন বোর্ড সভাপতি।
ফলে ক্রিকেটার ও বোর্ডের মুখোমুখি অবস্থানে ঘোলাটে হচ্ছে পরিস্থিতি। সংশয় তৈরি হয়েছে আসন্ন ভারত সফর ও বিপিএল হওয়া নিয়ে। এরমধ্যেই খেলোয়াড়দের সমর্থনে বিবৃতি দিল ফিকা।
বিবৃতিতে ফিকার নির্বাহী চেয়ারম্যান টনি আইরিশ বলেন, ‘পেশাদার ক্রিকেটার হিসেবে তাদের ন্যায্য সুরক্ষা নিশ্চিতে খেলোয়াড়দের একতা এবং একসাথে অবস্থান নেয়াকে প্রশংসা করছে ফিকা। বাংলাদেশে খেলোয়াড়দের এক হওয়ার মতো চ্যালেঞ্জিং পরিবেশ থাকা সত্ত্বেও এটি ঘটেছে। আমরা বাংলাদেশকে একটি গুরুত্বপূর্ণ ক্রিকেট দেশ হিসেবে যা বিবেচনা করি, তাতে খেলোয়াড়দের সাথে যেভাবে আচরণ করা দরকার, এটা সেই পরিবর্তনের প্রয়োজনীয়তার সুস্পষ্ট ইঙ্গিত।’
‘আমাদের কাছে এটাও স্পষ্ট যে, বাংলাদেশের খেলোয়াড়রা তাদের গুরুত্বপূর্ণ ক্যারিয়ারকে প্রভাবিত করে এবং তাদের জীবিকা নির্বাহ করে এমন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোর বিষয়ে শ্রদ্ধা বোধ করে না। খেলোয়াড়দের কণ্ঠ ও সম্মিলিত প্রতিনিধি ‘প্লেয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের’ ভূমিকা আমাদের কাছে উদ্বেগের। কারণ ক্রিকেটার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (সিডব্লিউএবি) তাদের ভূমিকা পালন করে না বলে মনে হয়। খেলোয়াড়দের জন্য এটা খুব জটিল সময়। এটি আরও উদ্বেগের বিষয় যে, সিডব্লিউএবির কর্মকর্তারা বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের পদে রয়েছেন’ যোগ করেন ফিকা চেয়ারম্যান।
বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের এই আন্দোলনে সমর্থন দেয়া গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘ইস্যুগুলোর সম্মিলিত প্রকৃতি দেখে আমরা বিশ্বাস করি, এই সময়ে খেলোয়াড়দের সমর্থন এবং সহায়তা দেয়া ফিকার জন্য গুরুত্বপূর্ণ।’
ক্রিকেটার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ এবং ফিকার সদস্যপদ
এই বিষয়ে ফিকার বক্তব্য, ‘এই (অক্টোবর) মাসের গোড়ার দিকে লন্ডনে অনুষ্ঠিত ফিকার বার্ষিক বৈঠকে এর সদস্যপদ এবং কাঠামোতে সংশোধনী আনার বিষয়ে আলোচনা ও অনুমোদনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে। সেখানে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে, নতুন সদস্যরা যাতে খেলোয়াড়দের সংগঠনগুলো ও বর্তমান খেলোয়াড় উভয়েরই প্রকৃত প্রতিনিধি হন এবং স্পষ্টতই সেখানে আরও একটি বিষয় নিশ্চিত করার দিকে দৃষ্টি নিবদ্ধ করা প্রাসঙ্গিক। সেটা হল নতুন সদস্যকে অবশ্যই অন্য যেকোনো ক্রিকেট পরিচালনা কমিটি থেকে স্বতন্ত্র হতে হবে।’