দাস প্রথার পক্ষে সাফাই গাওয়া এক রাজনীতিবিদের নামে থাকা একটি কলেজের নাম পরিবর্তন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়। ক্যালহুন কলেজের নতুন নাম হবে নারী কম্পিউটার প্রকৌশলী গ্রেস মারি হপারের নামে। যিনি মানুষের প্রযুক্তি ব্যবহারের ধরনকে পরিবর্তন করতে সহায়তা করেছিলেন। হপার ১৯৩০ সালে ইয়েল থেকে ডিগ্রি লাভ করেন এবং ইউএস নেভির রিয়াল এডমিরাল হন।
রাজনীতিবিদ জন সি ক্যালহুনকে নিয়ে দীর্ঘদিনের বিতর্কের পর শনিবার এই সিদ্ধান্ত এলো। বিষয়টি নিয়ে ২০১৫ সালে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে প্রতিবাদ হয়েছিলো। ক্যালহুন ১৮০৪ সালে ইয়েলের শিক্ষার্থী ছিলেন। সাউথ ক্যারোলিনার সিনেটর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন এবং ১৮২৫ থেকে ১৮৩২ পর্যন্ত আমেরিকার ভাইস প্রেসিডেন্ট ছিলেন। তার অবস্থান ছিলো দাসপ্রথা বিলুপ্ত করণের বিরুদ্ধে।
এতোদিন শান্তিপূর্ণ ভাবে প্রতিবাদ চলছিলো। সর্বশেষ গত শুক্রবার আবাসিক কলেজের কাছে একটি রাস্তা আটকে প্রতিবাদ করা হলে চারজনকে গ্রেফতার করা হয়। ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেসিডেন্ট পিটার স্যালোভি গত এপ্রিলে ঘোষণা করেছিলেন কলেজটির নাম ক্যালহুনই থাকবে। এই সিদ্ধান্তের সত্যতা যাচাইয়ে পরে তিনি একটি উপদেষ্টা কমিটি গঠন করেছিলেন।
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বলছে যে, তারা ক্যাম্পাস থেকে ক্যালহুনের চিহ্ন মুছে ফেলবেন না এবং ক্যালহুনের নামের পরিবর্তে গ্রেস হপারের নাম দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যালামনাইরা তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যেতে পারবেন।
শনিবার স্যালোভি বলেন, ক্যালহুন কলেজ, যার নামকরণ ১৯৩০ সালে করা হয়েছিলো, এটি ছিলো একটি ব্যক্তিক্রমী বিষয়, কারণ যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক্তণ ভাইস প্রেসিডেন্টের চাওয়া ছিল বিশ্ববিদ্যালয়টির মূল্যবোধের বিপরীত।
তিনি আরোও বলেন, আমি এই বিষয়ে সব সময় সতর্ক ছিলাম এবং এখনও সতর্ক আছি যে আমরা ইতিহাসকে বাদ দিয়ে কোনো কাজ করবো না। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো ভবনের নাম পরিবর্তনের বিষয়ে আমাদের দৃঢ় আপত্তি আছে। তিনি আশা করছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সবাই এই গ্রেস হপারের নামকে স্বাগত জানাবে এবং তার সম্পর্কে আরও জানতে আগ্রহী হবেন।
গ্রেস হপার ইয়েল থেকে ১৯৩০ সালে স্নাতক সম্পন্ন করেন এবং ১৯৩৪ সালে গণিত এবং ভৌত গণিত বিষয়ে ডক্টরেট ডিগ্রি অর্জন করেন। হপার পরবর্তীতে নৌ বাহিনীতে নাম লেখান এবং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে তার গণিত ও ভৌত গণিতের জ্ঞানকে যুদ্ধের কাজে লাগান। তখন হপার প্রথম কম্পিউটার কম্পাইলার আবিষ্কার করেছিলেন। এটি কম্পিউটারকে সহজ কমান্ড বুঝতে সহায়তা করে। হপার ৭৯ বছর বয়সে নৌ রিয়াল এডমিরাল পদ থেকে অবসর নেন এবং ১৯৯২ সালে ৮৫ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন।