পানামা পেপার্সে কর ফাঁকির নথি ফাঁসের পর ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরনের পদত্যাগের দাবিতে প্রায় দুই হাজার বিক্ষোভকারী ডাউনিং স্ট্রিট অভিমুখে মার্চ করেছে বলে জানিয়েছে ব্রিটিশ দৈনিক ডেইলি মেইল।
চাপের মুখে অফশোর একাউন্টের মাধ্যমে ৩০ হাজার ব্রিটিশ পাউন্ড লাভের কথা স্বীকার করার পর ক্যামরনের বিরুদ্ধে ‘ভণ্ডামি’র জোরালো অভিযোগ উঠেছে।
শনিবার হাজার হাজার বিক্ষোভকারী লন্ডনের হোয়াইটহলে সমবেত হয়ে দাবি তোলেন ক্যামেরন ‘এখনই পদত্যাগ করতে হবে।’
বিক্ষোভকারীরা পানামা হ্যাট পরে এবং ক্যামেরনের পদত্যাগের দাবি সম্বলিত প্ল্যাকার্ড নিয়ে ডাউনিং স্ট্রিটে সমবেত হন।
বিশাল একটি শুকরের মুখে ক্যামেরনের মুখোশ লাগিয়ে জনতা স্লোগান তোলেন ‘ডেভিড ক্যামেরন মাস্ট রিজাইন, ট্যাক্স ইভেশন ইজ এ ক্রাইম’।
বৃহস্পতিবার এক ক্যামেরন স্বীকার করেন যে তিনি তার প্রয়াত বাবা ইয়ানের অফসোর বিনিয়োগ থেকে সুবিধা পেয়েছেন।
যুক্তরাজ্যের আইটিভিকে দেওয়া এক সাক্ষাতকারে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী জানান, নিজের বাবার দেয়া অফশোর কোম্পানি বাল্টিমোর ইনভেস্টমেন্ট ট্রাস্টে আামার ৫ হাজার শেয়ার ছিলো। কিন্তু ২০১০ সাল নাগাদ ওই শেয়ার ৩১ হাজার পাউন্ডে বিক্রির কথা বলেন ক্যামেরন।
বিক্রির লভ্যাংশের উপর আয়কর শোধ করারও দাবি করেছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী।
এদিকে ডেভিড ক্যামেরন দেশবাসীকে ভুলপথে পরিচালিত করেছেন বলে অভিযোগ করেছেন বিরোধী লেবার দল নেতা জেরেমি করবিন। তিনি আরো বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী মানুষের আস্থা হারিয়েছেন।
এ বিষয়ে সোমবার পার্লামেন্টে ক্যামেরন একটি বিবৃতি দেবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
একই অভিযোগে মঙ্গলবার পদত্যাগ করেন আইসল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী সিগমুন্ড গুনলাগসন।
মোসাক ফনসেকায় থাকা নিজের গোপন তথ্য ফাঁসের পর থেকেই আর্জেন্টিনার জনগণের তোপের মুখে প্রেসিডেন্ট মরিসিও ম্যাকরি।
পানামা পেপারসে তথ্য ফাঁসের পর দুর্নীতির অভিযোগ বরাবরই প্রত্যাখান করেছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। প্রতিপক্ষরা রাশিয়াকে অস্থিতিশীল করতেই এমন বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে বলে দাবি করেছেন তিনি।
গত সোমবার বিশ্বের ধনী এবং ক্ষমতাধর ব্যক্তিদের কর ফাঁকির গোপন নথি ফাঁস করে বিশ্বব্যাপী তোলপাড় সৃষ্টি করে পানামার ওই আইনী প্রতিষ্ঠানটি।
এ পর্যন্ত কর ফাঁকির কেলেঙ্কারিতে যাদের নাম এসেছে তাদের মধ্যে আছেন চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং এর পরিবারের সদস্যরা, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ঘনিষ্ঠজন, ফুটবল তারকা লিওনেল মেসি, ফিফা প্রেসিডেন্ট জিয়ানি ইনফ্যান্টিনোসহ আরো অনেকের নাম।