বালুচিস্তানের কোয়েটায় জঙ্গি হামলা নিয়ে আগেই ভারতের দিকে আঙুল তোলা পাকিস্তান দাবি করেছে, কোয়েটায় জঙ্গির হামলার পরিকল্পনা হয়েছে নয়াদিল্লিতে আর সেটা আগানিস্তানের থাকা ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’-এর সদস্যদের সহায়তায় জঙ্গিগোষ্ঠী লস্কর-ই-জাংভি বাস্তবায়ন করেছে।
ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে প্রাথমিক গোয়েন্দা প্রতিবেদনের কথা উল্লেখ করে এ দাবি করেছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরীফ।
পাকিস্তানের দুটি ইংরেজি দৈনিক ডন ও দ্য নেশনের প্রতিবেদনে এ খবর দেয়া হয়েছে।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে তা উড়িয়ে দিয়ে ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী মনোহর পারিকর বলেছেন, ভারত এসব করতেই পারে না।
মঙ্গলবার কোয়েটার পুলিশ প্রশিক্ষণ কলেজে ওই জঙ্গি হামলায় ৬১ জন নিহত ও ১৭০ জনের বেশি আহত হয়, যার বেশিরভাগই ক্যাডেট ছাত্র এবং বয়স ১৫-২৫ বছরের মধ্যে।
হামলার পরপরই এর দায় স্বীকার করে জঙ্গিগোষ্ঠী লস্কর-ই-জাংভি। যদিও পরে এ হামলার দায় স্বীকার করে জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটও (আইএস)।
হতাহতদের প্রতি সমবেদনা জানাতে প্রাদেশিক রাজধানী কোয়েটায় যান প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরীফ ও সেনা প্রধান রাহিল শরীফ।
দেশটির গোয়েন্দা সংস্থা ইন্টার সার্ভিস ইন্টেলিজেন্সের ডিরেক্টর জেনারেল খালিদ ফরিদ প্রধানমন্ত্রীকে জানিয়েছেন, হামলার ছক হয় নয়াদিল্লিতে, এরপর সেটা আফগানিস্তানে থাকা ‘র’ কর্মীদের কাছে পাঠানো হয়। ‘র’-এর অ্যাসাইনমেন্ট অনুযায়ী আফগান মাটি ব্যবহার করে হামলা বাস্তয়ন করে জঙ্গিগোষ্ঠী লস্কর-ই-জাংভি।
বালুচিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সরফরাজ বুগতি জানান, হামলা চালিয়েছিল ৩ জন আত্মঘাতী জঙ্গি। আর ফ্রন্টিয়ার কোর–এর আই জি মেজর জেনারেল শের আফগান জানান, ৩ জঙ্গিরই শরীরে বাঁধা ছিল বিস্ফোরক। সেই বিস্ফোরক ফেটেই মৃত্যু হয় ২ জনের। একজন মারা যায় নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে।
শের আরো জানান, লস্কর–ই–জংভি সংগঠনের আল–আমিমি গোষ্ঠীর সদস্য এরা। পাকিস্তানি তালিবানদের সঙ্গে এদের যোগ। হামলার সময় আফগানিস্তানের হ্যান্ডলারদের কাছ থেকে জঙ্গিরা নির্দেশ নিচ্ছিল। আর হামলাকারীরা আফগানিস্তান থেকে এসেছিল। বালুচিস্তানের অন্য হামলাগুলো প্রায় একই সূত্রে গাঁথা।
বালুচিস্তানের গিয়ে নিরাপত্তা বিষয়ে বৈঠক করেছেন নওয়াজ শরীফ, রাহিল শরীফ, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নিসার আলী খান, বালুচিস্তানের মূখ্য ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীসহ নিরাপত্তাবাহিনীর উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা। সভায় প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরীফ বলেছেন, এই ইস্যু আফগানিস্তানের কাছে তুলে ধরা হবে।
এ ঘটনার পর শোক জানায় ভারত। তবে পাকিস্তানকে খোঁচা দিতে ছাড়েননি ভারতীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রী।
তিনি বলেন, এই জন্যই এমন হিংসার জন্ম দেওয়া উচিত নয়, যা আর নিয়ন্ত্রণে থাকে না।