বোলারদের নৈপুণ্যে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে দেড়শর ওপরে গুটিয়ে দিয়ে সিরিজের তৃতীয় ওয়ানডেতে ৯৩ রানের জয় তুলে নিয়েছে ভারত। তবে বোলারদের আগে লড়াইয়ের ভিতটা গড়ে দিয়েছিলেন রাহানে, ধোনি-যুবরাজরাই।
কয়েকদিন ধরে ভারতীয় মিডিয়া সরগরম ছিল কোহলির ‘ক্লাসে’ ধোনি-যুবরাজ এখন আর প্রিয় ‘ছাত্র’ নন বলে। না, অধিনায়কের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক খারাপের কোন খবর দিতে পারেনি নিন্দুকেরাও, তবে নতুনদের পরখ করে দেখতে সিনিয়রদের রয়ে-সয়ে খেলানোর নিতিতে কোপটা পড়ার তালিকায় নাকি সবার আগে ছিল দুই অভিজ্ঞ তারকার নামই। কেননা সামনের বিশ্বকাপ পর্যন্ত ধোনি-যুবরাজ চালিয়ে যেতে পারবেন কিনা, সেটা নিয়ে চলছে জোর ফিসফাস!
অ্যান্টিগায় শুক্রবার দুই অভিজ্ঞ তারকাকে তাই বিশ্রামে রাখার গুঞ্জন ছিল। তবে তাদের হালকাভাবে নেয়ার সময়টা যে এখনো আসেনি, ম্যাচে সেটাই মনে করিয়ে দিলেন আরেকবার। শুরুতে ব্যাটিংয়ে নেমে ভারত যে ৫০ ওভারে ৪ উইকেটে ২৫১ পর্যন্ত গেল, লড়াইয়ের পুঁজিটা পেল, তাতে অন্যদের সঙ্গে সর্বাঙ্গে থাকল ধোনি-যুবরাজের অবদান।
উদ্বোধনীতে রাহানে একটা ফিফটি করেছেন। কিন্তু ৪ চার ও এক ছয়ে ১১২ বলে তার ৭২ রানের ইনিংসটা ভারতীয়দের উল্টো চাপেই ফেলেছিল। ধাওয়ান ২ ও কোহলি ১১ না হয় দ্রুত ফিরেছিলেন, তাতে তো ভারতের ব্যাটিং লাইনআপের লেজ বেরিয়ে পড়েনি। রাহানে মন্থর ব্যাটিং করে তাই ডোবাতেই বসেছিলেন!
সেই রাহানের সঙ্গে ৬৬ রানের জুটি গড়ার পথে যুবরাজ প্রথম প্রতিরোধটা গড়লেন। রানের চাকা ঘোরালেন। ৪ চারে স্বভাবসুলভ ঢংয়ে ৩৯ রানের একটা ইনিংস খেললেন ৫৫ বলে। তার ফেরার পর যোগ হলেন ধোনি। রাহানেকে নিয়ে আরেকটি জুটি, ৭০ রানের।
রাহানে ৪২.২ ওভারের সময় যখন ফিরলেন, ভারতের সংগ্রহটা দাঁড়িয়ে ১৭০ রানে। সেখান থেকে কতদূরইবা যাওয়া যায়! কিন্তু উইকেটে যে ছিলেন পুরনো দিনের ধোনি। শেষ ৮ ওভারে এল ৮৪ রান, শেষ ১০-এ ১০০! মোট পেরল আড়াইশে। সেটাই বোঝা হয় গেল স্বাগতিকদের জন্য।
অবিচ্ছিন্ন পঞ্চম উইকেট জুটিতে ৮১ রান যোগ করে মহেন্দ্র সিং ধোনি ও কেদার যাদব যখন ফিরলেন, ৪ চার ও ২ ছয়ে ৭৯ বলে অপরাজিত ৭৮ তখন ধোনির নামের পাশে জ্বলজ্বল করছে। যাদব একটু আক্রমণাত্মক, ৪ চার ও এক ছয়ে ২৬ বলে অপরাজিত ৪০! ম্যাড়ম্যাড়ে ম্যাচটা জমিয়ে তোলার মত রসদ দিয়ে ধোনি-যুবরাজ নিশ্চয় একটু নির্ভার বোধ করছেন। আর কোহলির ‘ক্লাসে’ নিশ্চয় এখনও প্রিয় ‘ছাত্র’ই থাকছেন। কোচহীন ভারতের যে এখন একচ্ছত্র অধিপতি কেবল কোহলিই।
মাত্র আড়াইশর ওপর ছোঁয়া লক্ষ্য। উইন্ডিজ সেটাকেই পাহাড় বানিয়ে ফেলল এভিন লুইসকে ২, অভিষিক্ত কাইল হোপ ১৯, শাই হোপ ২৪, রোস্টন চেইজ ২ ও জেসন হোল্ডারের ৬ রানে বিদায়ে।
পরে জেসন মোহাম্মেদ ৪০ ও রোভম্যান পাওয়েল ৩০ রানের ইনিংস খেলে চেষ্টা করেছিলেন। শেষ পর্যন্ত সেটা কেবল পরাজয়ের ব্যবধানই কমিয়েছে।
ভারতের হয়ে অশ্বিন ১০ ওভারে মাত্র ২৮ রানে ৩টি, কুলদীপ যাদব ৪১ রানে ৩টি করে উইকেট নিয়েছেন। পান্ডিয়ার ঝুলিতে গেছে ২টি। সেখানে দুই যাদব উমেশ ও কেদারের নেয়ার সুযোগ হয়েছে একটি করে উইকেট।
এই জয়ে পাঁচ ম্যাচের সিরিজে ২-০ তে এগিয়ে গেল ভারত। প্রথম ম্যাচটি বৃষ্টিতে পরিত্যক্ত হয়েছিল। সিরিজের চতুর্থ ওয়ানডেটি হবে ২ জুলাই।