বার্মিংহাম থেকে: যদি অন্য দলের একজন খেলোয়াড় নেয়ার সুযোগ থাকে, কাকে নেবেন? মাশরাফী বিন মোর্ত্তজা ঝটপট বলে দিলেন বিরাট কোহলির নাম। চাপের মধ্যে এ ভারতীয়র সেরা ব্যাটিং করার গুন মুগ্ধ করবে যে কাউকেই।
বিশ্বকাপ শুরুর আগে অধিনায়কদের বৈঠকিতে মাশরাফী যাকে চেয়েছেন তাকে নিজের দলে পাওয়া অসম্ভব। উল্টো কোহলিকে কীভাবে দ্রুত আউট করা যাবে সেটি নিয়েই এখন ভাবতে হচ্ছে বাংলাদেশ দলকে।
নিজের দিনে কোহলি কতটা ভয়ঙ্কর সেটি জানে গোটাবিশ্ব। বাংলাদেশের তা জানা আরও ভালো করেই! টাইগারদের বিপক্ষে ৯ ম্যাচে তিন সেঞ্চুরি, দুটি নব্বই ছোঁয়া ইনিংস। তিনটিতে অপরাজিত (১০২*, ১০০*, ৯৬*)। ব্যাটিং গড় অল্পের জন্য স্পর্শ করেনি তিন অঙ্ক (৯৭.৫০)।
ভারত অধিনায়কের ৭৮ বলে ৯৬ রানের অপরাজিত ইনিংসটা ইংল্যান্ডের মাটিতে বাংলাদেশের সঙ্গে মুখোমুখি শেষ দেখায়। বার্মিংহামের এজবাস্টনে ২০১৭ সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির সেমিফাইনালে। ২ বছর পর আগামী ২ জুলাই একই মাঠে আবারও মুখোমুখি হচ্ছে বাংলাদেশ-ভারত। এবারের মঞ্চ আরও বড়- বিশ্বকাপ।
বিশ্বের সব দেশের বোলারদের জন্যই বড় হুমকি কোহলি। ভারতীয় অধিনায়ক চলতি বিশ্বকাপেও আছেন দারুণ ফর্মে। পাঁচ ম্যাচের চারটিতে খেলেছেন ষাটোর্ধ্ব রানের ইনিংস। সেঞ্চুরি নেই, তবে খেলেছেন কার্যকরী চারটি ইনিংস (৭২, ৬৭, ৭৭, ৮২)।
বিশ্বকাপে টিকে থাকতে হলে মঙ্গলবার এজবাস্টনে ভারতকে হারাতেই হবে বাংলাদেশের। উত্তাপ ছড়ানো এ ম্যাচে লাল-সবুজের সামনে যত চ্যালেঞ্জ আছে তার একটি কোহলিকে দ্রুত প্যাভিলিয়নে পাঠানো। বিশ্বকাপে টানা চার ফিফটিতে দারুণ ধারাবাহিক এ ব্যাটসম্যান ২২ গজে কোনো সুযোগ দিলে সেটি কিছুতেই হাতছাড়া করা যাবে না বলে সতর্ক করে দিলেন বিসিবি পরিচালক ও মিডিয়া কমিটির চেয়ারম্যান জালাল ইউনুসও।
চ্যানেল আই অনলাইনের সঙ্গে আলাপে তিনি বলেন, ‘কোহলি ক্যাচ দিয়ে যেন পার পেতে না পারে। ক্যাচ তুললে সেটি ধরতেই হবে। অসাধারণ ফিল্ডিং করতে হবে। কোহলি দুর্দান্ত একজন ব্যাটসম্যান। তাকে তাড়াতাড়ি কীভাবে আউট করা যায় সেটি নিয়ে বেশি ভাবা উচিত।’
‘ভারতকে হারাতে হলে আমাদের তাদেরকে ৩০০ রানের মধ্যে আটকে রাখতে হবে। ২৭০-২৮০ এর মধ্যে রাখতে পারলে সুযোগ থাকবে। আমাদের ব্যাটিং খুব ভালো হচ্ছে। বোলিং আরও ভালো করতে হবে।’
জালাল ইউনুসের মতে, ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের আটকে রাখার পাশাপাশি তাদের বোলারদের খেলতে হবে পরিকল্পিত ছকে, ‘মোহাম্মদ সামি ও জাসপ্রীত বুমরাহ অসাধারণ বোলিং করছে। স্পিনেও ওদের চাহাল, যাদবদের নিয়ে ভারসাম্যপূর্ণ অ্যাটাক।’
বিসিবির এ পরিচালক মনে করেন বাংলাদেশ দলের এখন কেবলই সামনের দিকে আগানোর সময়, ‘বিশ্বকাপে তিনটা ম্যাচ জিতেছি, তাতে খুশি হয়ে বসে থাকলে চলবে না। ভালোর পথে আমাদের যাত্রা কেবল শুরু, যেতে হবে গন্তব্যে। ধীরে ধীরে আমরা প্রমাণ করেছি। এখন গর্ব করে বলতে পারি, আমরা ভালো খেলি। তার প্রতিফলন দেখাতে হবে প্রতিনিয়ত, সবখানে।’
ইংল্যান্ডের সব জায়গাতেই বাংলাদেশ দলের পারফরম্যান্স নিয়ে ইতিবাচক মূল্যায়ন। সেটি বিভিন্ন দেশের মানুষের কাছে। জালাল ইউনুস জানালেন, ভালো করার পেছনে বোর্ডের তরফ থেকে ক্রিকেটারদের যথেষ্ট স্বাধীনতা পাওয়াও অন্যতম একটি কারণ, ‘এখন সে দিন নেই। ক্রিকেটাররা পুরোই স্বাধীনভাবে নিজেদের মতো খেলে।’
বাংলাদেশ-ভারতের ম্যাচ দেখতে সোমবার বার্মিংহামে আসবেন বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন। উঠবেন ক্রিকেটাররা যেখানে আছেন সেই হায়াত হোটেলে। ম্যাচের আগে বিসিবি সভাপতি বসবেন ক্রিকেটারদের সঙ্গে। ভারত ম্যাচের আগে দলকে উজ্জীবিত রাখতে সবদিক থেকেই প্রচেষ্টা থাকছে। উৎসাহ যোগাতে ইংল্যান্ডে থাকা প্রবাসী বাংলাদেশিরাও নিয়েছে মাঠ গরম করে তোলার প্রস্তুতি।