বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাস কিছুটা ম্লান করলেও দেশব্যাপী যথাযথ ধর্মীয় মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে পবিত্র ঈদুল আযহা উদযাপন করা হচ্ছে। গতবারের মতো এবারও করোনার কারণে ভিন্ন আবহে পালিত হচ্ছে ঈদ। এরমধ্যেই ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশন কোরবানির পশুর বর্জ্য অপসারণের চ্যালেঞ্জ নিয়ে কাজ শুরু করেছে।
চ্যানেল আই অনলাইনের প্রতিবেদনে জানা যায়, বুধবার ভাটারা সাঈদ নগর হাট এলাকায় ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম কোরবানির পশুর বর্জ্য অপসারণের কার্যক্রম উদ্বোধন করেন। একযোগে সব ওয়ার্ডেই দুপুর ২টা থেকে বর্জ্য অপসারণ কার্যক্রম শুরু হয়েছে। অন্যদিকে, একই সময় ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৭৫টি ওয়ার্ডে একযোগে বর্জ্য অপসারণ কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
ডিএনসিসি জনসংযোগ কর্মকর্তা আবুল বাশার মোহম্মদ তাজুল ইসলাম জানান, কোরবানির পশু জবাই করার জন্য ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন এ বছর ৩০৭টি স্থানে নগরবাসীকে পশু কোরবানি দেয়ার সুবিধার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। রাস্তার ওপর কিংবা ড্রেনের পাশে কোরবানি না করার জন্য বিশেষ সচেতনতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। কোরবানির জন্য সর্বমোট ২৫০ জন ইমাম ও ২৫০ জন মাংস প্রস্তুতকারীকে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। পবিত্র ঈদুল আজহায় পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম তদারকি ও ত্বরিত অপসারণ কাজের স্বার্থে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের ওয়ার্ড ভিত্তিক দায়িত্ব প্রদানের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। ঈদ উপলক্ষে বর্জ্য পরিবহন সক্ষমতা কমপক্ষে ১০ হাজার টনে উন্নীতকরণে প্রয়োজনীয় যান-যন্ত্রপাতি নিয়োজিত করা হয়েছে।
ডিএসসিসির জনসংযোগ কর্মকর্তা আবু নাছের জানান, পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে কোরবানির পশুর হাটের বর্জ্য এবং বৃহস্পতিবার দুপুর ২টা হতে শনিবার দুপুর ২টা পর্যন্ত দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের আওতাধীন এলাকা ও পশুর হাটগুলোর বর্জ্য ব্যবস্থাপনা সরেজমিন মাঠ পর্যায়ে তদারকির জন্য ১০টি টিম গঠন করেছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি)। আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তাদের নেতৃত্বে করপোরেশনের বিভিন্ন বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সমন্বয়ে এই টিমগুলো গঠন করা হয়েছে। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বর্জ্য অপসারণের লক্ষ্য নিয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে।
ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের এমন উদ্যোগ প্রশংসনীয়। বিগত বছরের ন্যায় তারা এবারও বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় সফল হবে বলে আমরা আশা করি। ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশন থেকে শিক্ষা গ্রহণ করে দেশজুড়ে স্থানীয় সরকারের প্রতিষ্ঠানগুলোকে এমন উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। এছাড়া কোরবানি দাতাদেরও এ বিষয়ে সচেতন হতে হবে।
আমরা সবাই জানি যে, আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে কোরবানি দেওয়া হয়। এর মাধ্যমে আমরা ত্যাগের মহান শিক্ষা পেয়ে থাকি। এজন্য পরিষ্কার, পরিচ্ছন্নতা ঈমানের অঙ্গ বলেও ইসলামে বলা হয়ে থাকে। সেক্ষেত্রে পরিবেশ দূষণ করলে সেই ত্যাগ ও সন্তুষ্টির লক্ষ্য অর্জন হবে না। এজন্য কোরবানির সাথে সাথেই বর্জ্য পরিষ্কার করতে হবে। স্থানীয় সরকার কিংবা বর্জ্য ব্যবস্থাপনার দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে সহায়তা করতে হবে। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টা থাকলে পরিবেশ দূষণ থেকে আমরা রক্ষা পাবো। এজন্য যথাযথ দায়িত্ব পালনের জন্য সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি আমরা আহ্বান জানাচ্ছি।