‘ভ্যাকসিন নেই, নেই নির্দিষ্ট কোনো ওষুধও। এমন পরিস্থিতিতে কোভিড -১৯ রোগের চিকিৎসায় প্লাজমা থেরাপি প্রয়োগের প্রক্রিয়া খুব একটা জটিল নয়। মাত্র দুই ঘণ্টার মধ্যে আক্রান্ত রোগীর শরীরে প্রয়োগ করা যায়।’
এভাবেই ভারতের দিল্লিতে প্লাজমা থেরাপির জন্য নিজের প্লাজমা দেওয়া (ডোনার) এক ব্যক্তি তার অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেছেন এনডিটিভির কাছে।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মতো ভারতের কয়েকটি রাজ্যে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত সংকটাপন্ন রোগীদের ক্ষেত্রে ‘ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল’ -এর ভিত্তিতে প্লাজমা থেরাপি শুরু হয়েছে।
প্লাজমা থেরাপি হলো, আগে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত সুস্থ হওয়া রোগীর শরীরে এই ভাইরাস প্রতিরোধে এক রকমের অ্যান্টিবডি তৈরি হয়। সেই অ্যান্টিবডি যুক্ত প্লাজমা সংগ্রহ করে করোনাভাইরাস আক্রান্ত অন্য রোগীর শরীরে প্রবেশ করিয়ে ভাইরাসটিকে মেরে ফেলা হয়।
গত শুক্রবার দিল্লিতে পরীক্ষামূলকভাবে চারজন করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগীকে প্লাজমা থেরাপি প্রয়োগ করা হয়েছিল। তাদের প্রত্যেকের ক্ষেত্রেই অত্যন্ত আশাব্যঞ্জক ফল পাওয়া গেছে।
দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল জানিয়েছেন, চার দিনের মাথায় এসেছিল প্রথম সাফল্যের খবর। আমরা আশা করছি ‘প্লাজমা থেরাপি’ এই ভাইরাস প্রতিরোধে কাজ করবে।
ওই রোগীদের জন্য প্লাজমা দাতা তাবরেজ খান তার অভিজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, ‘মাত্র দুই ঘণ্টা সময়ের মধ্যে শেষ হয় প্লাজমা থেরাপি। প্রথম ধাপে রক্ত পরীক্ষা, রিপোর্ট বিশ্লেষণ এবং শরীর থেকে রক্ত বের করা হয়। আর দ্বিতীয় ধাপে আমার শরীর থেকে প্লাজমা বের করে পুনরায় ওই রক্ত শরীরে প্রবেশ করানো হয়।
তাবরেজ খান মার্চ মাসের শেষের দিকে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হন।সৌদি ফেরত তার বোনের সংস্পর্শে গিয়ে তিনি সংক্রামিত হয়েছিলেন।তারপর দিল্লির একটা হাসপাতালে চিকিৎসার পর পুরোপুরি সুস্থ হয়ে ৫ এপ্রিল বাড়ি যান।
এরপর দিল্লির ইস্ট ইনস্টিটিউট অব লিভার অ্যান্ড বিলিয়াল সায়েন্সেস (আইএলবিএস) হাসপাতালে তাবরেজ নিজ উদ্যোগে প্লাজমা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।
তিনি বলেন, ‘তার শরীরের কোনও অংশ নিয়ে যদি কোনও ধরণের গবেষণা করতে চায় তিনি এটার জন্যও প্রস্তুত।’