কানাডায় কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন এবং অন্যান্য জনস্বাস্থ্য বিধিনিষেধ বাতিলের দাবিতে পার্লামেন্ট হিলে বিক্ষোভ করেছে হাজার হাজার ট্রাক চালক এবং বিক্ষোভকারীরা। এ ঘটনার পরে নিরাপত্তার স্বার্থে জাস্টিন ট্রুডো এবং তার পরিবারকে তাদের সরকারি বাসভবন থেকে সরিয়ে নেয়া হয়েছে।
সিবিসি প্রতিবেদনে বলা হয়, গত শুক্রবার মধ্যরাত থেকে দেশটিতে প্রচণ্ড শীতের মধ্যেও ট্রাক চালকেরা পার্লামেন্টের সামনে জড়ো হতে শুরু করে। পরবর্তীতে তাদের সাথে যোগ দেয় অন্যান্য চালক এবং বিক্ষোভকারীরা।
পুলিশ সূত্র জানায়, দিনশেষে প্রায় ১০হাজার বিক্ষোভকারী সেখানে জমা হয়েছিলো। তবে যে সংগঠন এই ট্রাক চালকের দলকে এই আন্দোলন সংগঠিত করেছে, তারা রবিবার প্রার্থনার সময়সূচি এবং প্রেস কনফারেন্স করাসহ একটি ইভেন্টের সময়সূচি পাঠায়।
বিক্ষোভকারীদের কারণে দেশটির এই অঞ্চলে আটকে গেছে ট্র্যাফিক ব্যবস্থা। তাই পুলিশ এই অঞ্চলের আশেপাশে যাতায়াত না করতে অনুরোধ জানিয়েছেন সকলকে।
পার্লামেন্ট ভবনের সামনে ওয়েলিংটন স্ট্রিটে জড়ো হওয়া ট্রাক চালকেরা জাস্টিন ট্রুডো এবং জনস্বাস্থ্য বিধির নিন্দা জানায়। সীমান্ত অঞ্চলে ট্রাক চালকদের ভ্যাকসিন গ্রহণ বাধ্যতামূলক করা হয় বলে তারা এই বিক্ষোভ শুরু করে।
তারা এটা বলেও সতর্ক করে যে, কোভিড বিধিনিষেধ বাতিল না করলে দেশটিতে সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত করা হবে। বিক্ষোভকালে ট্রাক চালকেরা শনিবার সারা দিন এবং সন্ধ্যা পর্যন্ত হর্ন বাজায়।
তবে পুলিশ জানায়, এই বিক্ষোভে এখনো পর্যন্ত কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। তবে নিরাপত্তার স্বার্থে জাস্টিন ট্রুডো এবং তার পরিবারকে তাদের সরকারি বাসভবন থেকে সরিয়ে নেয়া হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী কার্যালয় থেকে জানানো হয়, নিরাপত্তার কারণে জাস্টিন ট্রুডোকে কোথায় রাখা হয়েছে, তা জানানো সম্ভব নয়। তবে তিনি রাজধানীতেই আছেন। তিনি তার করোনা আক্রান্ত সন্তানের সংস্পর্শে আসায় বর্তমানে আইসোলেশনে রয়েছেন বলেও জানানো হয়।
এই বিক্ষোভ প্রধানত শুরু হয় সীমান্তে ট্রাক চালকদের ভ্যাকসিন ম্যান্ডেট বাতিল করার জন্য, যা পরবর্তীতে আরও বিশাল আকার ধারণ করেছে। বর্তমানে বিক্ষোভকারীরা সকল জনস্বাস্থ্য বিধিনিষেধ বাতিলের দাবিতে আন্দোলন করে যাচ্ছে।
চালক নয় এমন বিক্ষোভকারীরা জানান, তারা মহামারি সংক্রান্ত সকল বিধিনিষেধ বাতিল করে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে যেতে সরকারকে চাপ দিতে চাইছিলেন। তাদের এই বিক্ষোভের সাথে আরও অনেকেই যুক্ত হয়েছে যারা দাবি আদায়ে সহিংসতার ডাক দিয়েছে।
আন্দোলনের অংশ হিসেবে ট্রাক চালকেরা দেশটির অটোয়ার যুদ্ধ স্মৃতিসৌধে অজ্ঞাতনামা শহীদদের সমাধিস্থলে তাদের যানবাহন পার্ক করে। যা পরবর্তীতে স্থানীয় পুলিশের নির্দেশে সরিয়ে নেয়া হয়। এই ঘটনাকে খুবই অসম্মানজনক বলে উল্লেখ করেন অটোয়ার মেয়র জিম ওয়াটসন।
পরবর্তীতে বিক্ষোভকারীদের সেই সমাধিস্থলে গিয়ে নাচতেও দেখা যায়। এই ঘটনার নিন্দা জানায় ভ্যাটেরান্স অ্যাফেয়ার্স মিনিস্টার লরেন্স ম্যাকওলে এবং কানাডার সর্বোচ্চ সৈনিক জেনারেল ওয়ানে আইরে।