যুক্তরাষ্ট্রে কোভিড থেকে সেরে ওঠা ১৫০ জনের মধ্যে গবেষণা করে দেখা গেছে, ওই ব্যক্তিদের ৭৩ শতাংশই ডেলিরিয়াম এ ভুগছেন। ডেলিরিয়াম মস্তিষ্কের এমন একটি অবস্থা যার কারণে ব্যক্তি যেকোন বিষয় নিয়ে দ্বিধান্বিত, হীনমন্য, অস্থির থাকেন। এমনকি কোন একটি বিষয়ে পরিষ্কারভাবে চিন্তা করতে পারেন না।
বিএমজে জার্নালে ওই গবেষণাপত্রটি প্রকাশিত হয়েছে। গবেষণায় দেখা গেছে, হাসপাতাল থেকে ফেরার পর কোভিড রোগীরা আগের তুলনায় দুর্বল থাকেন। অস্থিরতায় ভুগেন। তাদের মধ্যে ডায়াবেটিসও লক্ষ্য করা গেছে। তাদের মধ্যে কোভিড পরবর্তী জটিলতাও ভয়াবহ রূপ ধারণ করে।
গবেষণাপত্রের লেখক, যুক্তরাষ্ট্রের মিশিগান ইউনিভারসিটির ফিলিপ ভ্লিসাইডস বলেছেন, “কোভিড পরবর্তী জটিলতা এমন আকার ধারণ করে যে, কোভিড থেকে সেরে ওঠার পর ওই রোগীদের আবারও হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়েছে। অন্য যেকোন রোগ থেকে সেরে উঠতেও তাদের দীর্ঘ সময় লেগে যাচ্ছে।”
গবেষকরা রোগীদের হাসপাতালের রেকর্ড এবং হাসপাতাল ছাড়ার পর তাদের টেলিফোন জরিপের মাধ্যমে গবেষণাটি পরিচালনা করেছেন। ওই ১৫০ ব্যক্তির প্রতেকে ২০২০ সালে মার্চ থেকে মে মাসের মধ্যে কোভিড আক্রান্ত হবার পর হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্রে থেকেছেন। কোভিড থেকে সেরে ওঠার পর ডেলিরিয়াম দেখা গেছে এমন রোগীদের অভিন্ন লক্ষণগুলো চিহ্নিত করার চেষ্টা করা হয়েছে।
গবেষকরা লক্ষ্য করেছেন যে, কোভিডের কারণে মস্তিষ্কে অক্সিজেন চলাচল কমে যেতে পারে, রক্ত জমাট বাঁধতে পারে এমনকি স্ট্রোক হতে পারে।
ফিলিপ ভ্লিসাইডস আরো বলেছেন, ডেলিরিয়াম প্রতিরোধে করোনা মহামারীর শুরুতে তেমন কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি। এর অন্যতম বড় কারণ হলো, ভ্যাকসিন আসার আগে চিকিৎকদের কাছে কোভিড প্রতিরোধক কৌশল সীমিত ছিলো। মূল নজর ছিল করোনা সংক্রমণ রোধ করা। কোভিড এর পার্শপ্রতিক্রিয়া রোধে কাজ কম হয়েছে।
গবেষণার আওতাধীন রোগীদের এক তৃতীয়াংশের মধ্যে ডেলিরিয়াম দেখা দেয়নি। তাদের মধ্যে ৪০ শতাংশে জন্য খুব যত্নশীল স্বাস্থ্য সেবা প্রয়োজন ছিল।
এক চতুর্থাংশ রোগীর মধ্যে তাদের তত্বাবধায়করা ডেলিরিয়াম এর লক্ষণ ছিলো বলে জানিয়েছেন। কোন কোন রোগী কয়েক মাস ধরে এ সমস্যায় ভুগেছেন।
হাসপাতাল কর্মীদের সঙ্গে রোগীর পরিবারের সদস্যদের নিবিড় যোগাযোগের মাধ্য বাসায় রোগীর থেকেই সমস্যাগুলো কাটিয়ে ওঠা সম্ভব বলে জানিয়েছেন ফিলিপ ভ্লিসাইডস।