সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের প্রজ্ঞাপন জারি এবং কোটা সংস্কার আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত নেতাকর্মীদের উপর হামলা-মামলার প্রতিবাদে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে কেন্দ্রীয় ঘোষিত পতাকা মিছিল করতে দেয়নি শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।
মিছিল শুরুর প্রস্তুতির সময় বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আহ্বায়ক শাকিল উজ্জামানকে গ্রন্থাগারের সামনে থেকে টেনে হিঁচড়ে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে তাকে হলে আটকে রাখা হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সোমবার বেলা ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে থেকে পতাকা মিছিল হওয়ার কথা ছিলো। সকাল দশটা থেকে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা মিছিল প্রতিহত করতে সেখানে অবস্থান নেয়। বেলা ১১টার দিকে শাকিল উজ্জামান জাতীয় পতাকা হাতে গ্রন্থাগারের সামনে উপস্থিত হন। তিনি গ্রন্থাগারের দুই তলায় সাধারণ ছাত্রদের মিছিলে অংশ নিতে আহ্বান জানাতে যান।
এসময় ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি মামনুর রশিদের নেতৃত্বে কয়েকজন নেতাকর্মী সেখানে যান। তারা শাকিল উজ্জামানকে টেনে-হিঁচড়ে গ্রন্থাগার থেকে বের করেন। শাকিল উজ্জামানের হাতে থাকা জাতীয় পতাকা কেড়ে নেওয়া হয়। আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত রাজিব আহমেদকে চড়-থাপ্পড় দেয় ছাত্রলীগের এক নেতা। সাংবাদিকদেরকে ছবি তুলতে নিষেধ করা হয়।
পরে ছাত্রলীগের দুইজন কর্মী শাকিল উজ্জামানকে টেনে মওলানা ভাসানী হলে নিয়ে যায়। তাকে হল থেকে আর বের হতে দেয়নি ছাত্রলীগ।
কোটা সংস্কার আন্দোলনের সমন্বয়ক আবু সাঈদ বলেন, শাকিল উজ্জামানকে টেনে-হিচড়ে নিয়ে যাওয়ার সময় তার পায়ে আঘাত করা হয়। প্রগতিশীল ছাত্রজোটের নেতাকর্মীদেরকে এসময় আক্রমণাত্বকভাবে কথা বলা হয়েছে।
ঘটনার সময় সেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর ইখতিয়ার উদ্দিন ভূঁইয়া উপস্থিত ছিলেন। তিনি বলেন, শাকিল উজ্জামানের সাথে গল্প করতে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা নিয়ে যাচ্ছে। ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদেরকে বলেছি সাধারণ ছাত্রদের গায়ে যেন তারা হাত না তোলে।
শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি মামনুর রশিদ বলেন, আমরা আন্দোলন করতে নিষেধ করেছিলাম। তারপরও তারা আন্দোলন করে ক্যাম্পাসকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছিলো। তাই আমরা মিছিল করতে দেয়নি।
শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি জুয়েল রানা বলেন, আমরা আগেই খবর পেয়েছিলাম মিছিলে ছাত্রদল ও শিবিরের নেতাকর্মীরা অংশ নেবে। তাই এই মিছিল করতে দেওয়া হয়নি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সিকদার মো. জুলকারনাইন বলেন, প্রক্টরিয়াল টিমের সদস্যরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন। একজন ছাত্রকে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা সরিয়ে দিয়েছে। এছাড়া তেমন অপ্রীতিকর কোনো ঘটনা ঘটেনি।