কোটা সংস্কার, নিরাপদ ক্যাম্পাস ও আটক নেতাদের মুক্তির দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের আবারও ছাত্রলীগের নেতা কর্মীরা মারধর করেছে বলে অভিযোগ করেছেন আন্দোলনকারী।
রোববার বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাষ্কর্যে এক বিক্ষোভ কর্মসূচি থেকে ফেরার পথে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ও নিউ এলিফ্যান্ট রোড এলাকায় ছাত্রলীগের নেতারা তাদের মারধোর করে বলে আন্দোলনকারীরা অভিযোগ করেছেন।
আন্দোলনকারীদের যুগ্ম-আহ্বায়ক সোহরাব হোসেনকে ছাত্রলীগ তুলে নিয়ে গেছে বলে অভিযোগ করেছে আরেক যুগ্ম-আহ্বায়ক রাতুল সরকার। তবে পরে কাউসার সুমন নামে এক নেতা ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে জানান, আক্রমণ করলেও কাউকে তুলে নেয়নি ছাত্রলীগ, সবাই নিরাপদ আছে।
রোববার বিকেল সোয়া পাঁচটায় ফেসবুকে দেয়া এক লাইভে রাতুল বলেন, ‘আমি নিয়াজী আর সোহরাব পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচী পালন করে সিএনজিতে করে ফিরছিলাম। ফেরার পথে শাহবাগ থেকে ধানমন্ডি যাবার রাস্তায় ছাত্রলীগের ৮/১০ জন সন্ত্রাসী আমাদের সিএনজি আটকায়। তারা সোহরাব ভাই আর নিয়াজী ভাইকে তুলে নিয়ে যায় এবং আমাকেও নেয়ার চেষ্টা করে। প্রায় ৫/৭ মিনিট তাদের সাথে আমার ধ্বস্তাধস্তি হয়। আমার জামা ছিঁড়ে যায়। আমি কোন রকমে পালিয়ে এসেছি।
প্রতিবেদকের মোবাইলে ধারণ করা ভিডিওতে দেখা যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সাইদুর রহমান উজ্জ্বল, শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক ছাত্রলীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আমির হামজাসহ প্রায় আটজন নেতাকর্মী সেখানে ছিলেন।
এদিকে ছাত্রলীগের সদ্য সাবেক কমিটির সহ-সভাপতি দিদার মুহাম্মদ নিজামুল ইসলাম, জিয়া হল ছাত্রলীগের উপ-কর্মসূচী ও পরিকল্পনা বিষয়ক সম্পাদক হাসিবুল হোসেন শান্ত’র নেতৃত্বে কয়েকজন নেতা-কর্মী এক আন্দোলনকারীকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের ভেতর মারধর করেন। পরে তিনিও পালিয়ে যান।
এর আগে বিকেল তিনটায় কোটা সংস্কারের আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা, মামলা এবং বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ছাত্র-শিক্ষক নিপীড়নের প্রতিবাদে ছাত্র সমাবেশ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল শিক্ষার্থী।
রাজু সন্ত্রাসবিরোধী ভাষ্কর্যের পাদদেশে আয়োজিত এই সমাবেশের শেষ পর্যায়ে উপস্থিত হন আন্দোলনের যুগ্ম-আহ্বায়ক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র বিন ইয়ামিন মোল্লা।
তিনি সেখানে বক্তব্য রাখেন ও ২৫ জুলাই বুধবার সারা দেশের সকল বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ কর্মসূচী ঘোষণা করেন।
তবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সাইদুর রহমান উজ্জ্বল চ্যানেল আই অনলাইনের কাছে মারধরের বিষয়টি অস্বীকার করেন।
তিনি বলেন, ‘আমরা তিনজন বাটা সিগনাল দিয়ে যাচ্ছিলাম। একটা সিএনজি আমার বাইকের পেছনে ধাক্কা দেয়। আমরা তখন সিএনজি থামিয়ে ড্রাইভারের সাথে কথা বলি। ড্রাইভারের সাথে তর্কাতর্কি হয়। ভেতরে তিনজন ছেলে ছিলো ওদের আমি চিনি না। ওদের সাথে কোন ঝামেলা হয় নাই।’
আন্দোলনকারীদের ওপর হামলার ভিডিও: