মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষাসহ অন্যান্য এলেই প্রশ্নফাঁসের প্রলোভনের ঝাঁপি খুলে বসে বিভিন্ন কোচিং সেন্টার। সেই প্রশ্নপত্র হয় ভুয়া, আর সেটা না বুঝেই অভিভাবকরা সেই ফাঁদে পা দেয়। কোচিং সেন্টারের সংশ্লিষ্টরা বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিজ্ঞাপন দিয়ে আকৃষ্ট করেন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের। তারপরেই কথিত প্রশ্নফাঁসের সেই চক্রটি হাতিয়ে নেয় লাখ-লাখ টাকা।
শুক্রবার দেশজুড়ে অনুষ্ঠিত মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজ ভর্তি পরীক্ষায় ভুয়া প্রশ্নপত্র সরবরাহ করে এমনই একটি চক্র বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নেয়। গোপন তথ্যের ভিত্তিতে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে ওই চক্রের ৫ সদস্য ও প্রশ্ন গ্রহীতা ৬ শিক্ষার্থীকে আটক করে র্যাব-১০।
আটকরা হলেন- প্রশ্ন সরবরাহকারীরা মহিদুল কবির লিমন, সারওয়ার হোসেন বিপ্লব, সাদ্দাম হোসেন, মাসুদ, উজ্জ্বল রবি দাস ও প্রশ্ন গ্রহীতা রিফাত সরকার, ফয়সাল আহমেদ, মোস্তাকিন ফুয়াদ, আবু সাঈদ, ইশা আলম, তারেক হাসান।
এ সময় প্রশ্ন সরবরাহকারী ৫ জনের কাছ থেকে এক কোটি ২৪ লাখ ৫০ হাজার টাকার ১২টি চেক, মেডিকেল ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের ৯১টি প্রবেশপত্র ও রেজিস্ট্রেশন কার্ড, ১৫টি ট্রান্সক্রিপ্ট ও প্রশংসাপত্র, ৫ সেট ভুয়া প্রশ্ন, ১৬টি মোবাইল ও ১ টি ল্যাপটপ উদ্ধার করা হয়।
শনিবার বিকেলে রাজধানীর কারওয়ানবাজারে র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র্যাব-১০ এর অধিনায়ক (সিও) অতিরিক্ত ডিআইজি মো. কাইয়ুমুজ্জামান খান।
তিনি বলেন: আটককৃত প্রশ্ন সরবরাহকারী ৫ জনই বিভিন্ন কোচিং সেন্টারের সঙ্গে জড়িত। রাজধানীর ফার্মগেট, পান্থপথ, কল্যাণপুর, মিরপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় সেসব কোচিং সেন্টারের শাখা রয়েছে। তারা বিভিন্ন ভর্তি পরীক্ষার আগে ভুয়া প্রশ্ন প্রণয়ন করে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের সঙ্গে যোগাযোগ করে।
‘প্রশ্ন সরবরাহের আশ্বাস দিয়ে তাদের কাছ থেকে অগ্রিম চেক, একাডেমিক কাগজপত্র নিজেদের জিম্মায় নিয়ে নেয়। তারপর চক্রটি বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে (ভাইবার, হোয়াটস অ্যাপ) ভুয়া প্রশ্নপত্র সরবরাহ করে।’
চক্রটি অগ্রিম চেক ও একাডেমিক কাগজপত্র নিজেদের জিম্মায় নিয়ে অভিভাবকদের কাছ থেকে নগদ টাকা আদায় করতো বলেও জানান র্যাব-১০ এর সিও।
তিনি আরো বলেন: মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষা সম্পন্ন হলেও সামনে আরো ভর্তি পরীক্ষা রয়েছে। তাই আমরা চাই, কোন ছাত্র এবং অভিভাবক যেন এসব প্রলোভনের ফাঁদে না পড়েন।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন: এ চক্রের সঙ্গে যদি সংশ্লিষ্ট কোচিং সেন্টার জড়িত প্রমাণ হয় তাহলে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেয়া হবে। এছাড়া, প্রশ্নফাঁসের সঙ্গে যারাই জড়িত থাকবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। ভুয়া এসব প্রশ্নের উৎসের বিষয়টিও তদন্তাধীন রয়েছে।