চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ

কোচদের নির্যাতন, কোরিয়ান অ্যাথলেটের আত্মহনন

কোচিং স্টাফদের বিরুদ্ধে একের পর এক নির্যাতনের অভিযোগ এনেছিলেন সাউথ কোরিয়ান নারী ট্রায়াথলেট চই সুক-হিয়ুন। তা শুনেও না শোনার ভান করে বছরের পর বছর এড়িয়ে গেছে কর্তৃপক্ষ। সেই লজ্জা সইতে পারেননি সুক-হিয়ুন, মাত্র ২২ বছর বয়সে নিজেই শেষ করে দিয়েছেন নিজের জীবন।

গত সপ্তাহে আত্মহননের পথে হাঁটেন সুক-হিয়ুন। ২০১৫ সালে ১৭ বছর বয়সে কোরিয়ান ট্রায়াথলন জাতীয় দলে সুযোগ পেয়েছিলেন তিনি। একাধিক নারী অ্যাথলেট অভিযোগ করেছেন, বছরের পর বছর ধরে চইয়ের উপর অত্যাচার করেছেন কোচিং স্টাফরা।

চইয়ের মৃত্যুর পর ওয়াইটিএন টিভির হাতে একটি অডিও টেপ তুলে দেন তার বাবা-মা। টেলিভিশনটির কাছে তারা অভিযোগ করেছেন, বিভিন্ন সময়ে চইয়ের গায়ে হাত তোলা, গালি ও হয়রানি করতেন তার কোচেরা। সেই অডিও টেপেও শোনা গেছে একজন পুরুষ চিৎকার করে বলছেন, ‘এই তুই, এদিকে আয়! মুখ বন্ধ রাখবি।’ এরপরই এক চড়ের শব্দ!

নিজের হয়রানির বিষয়গুলো ডায়েরিতে টুকে রাখতেন চই। সেখানে লিখে গেছেন ‘প্রতিদিন অত্যাচার সইতে না পেরে কীভাবে কেঁদেছেন’ এবং ‘কখনোবা কুকুরের মতো মার খেতে হয়েছে’ তাকে। অত্যাচার সইতে একাধিকবার আত্মহত্যার চিন্তাও এসেছে তার মাথায়।

নির্যাতন সইতে না পেরে এপ্রিল মাসে দেশের সবচেয়ে বড় স্পোর্টস গভর্নিং বডি কোরিয়ান স্পোর্ট এন্ড অলিম্পিক কমিটির (কেএসওসি) কাছে অভিযোগ করেছিলেন চই। আবেদন করেছিলেন তদন্তের জন্যও। স্থানীয় এক সংবাদমাধ্যম জানাচ্ছে, দেশের বড় বড় সরকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে সাহায্যও আশা করেছিলেন চই। কেউই তাতে কর্ণপাত করেনি।

এড়িয়ে যাওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে কেএসওসি বলেছে, চইয়ের অভিযোগের পরপরই একজন নারী তদন্তকারী এপ্রিলেই নিয়োগ করেছে তারা। কোরিয়ান ট্রায়াথলন ফেডারেশনও বিষয়টি নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে বলে জানিয়েছে।

নারী অ্যাথলেটদের প্রতি কোরিয়ায় যৌন নির্যাতন নতুন বিষয় নয়। গত বছর কোচদের প্রতি যৌন নির্যাতনের অভিযোগ আনেন একাধিক নারী স্কেটার, যা তখন কাঁপিয়ে দিয়েছিল দেশটির ক্রীড়াঙ্গনকে। আগেও দেশটির নারী টেনিস তারকা কিম উন-হি যৌন নির্যাতনের অভিযোগ আনেন তার কোচের বিরুদ্ধে। অভিযোগ প্রমাণ হওয়ায় ১০ বছরের জেল হয়েছে সেই কোচের।