‘কেন আমি তার পদধূলি নিতে পারিনি?’ বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরের মন্তব্য খাতায় লেখা লাইনটিতে চোখ পড়ে প্রথমেই। এই কেনো’র জবাব বাঙালির কাছে নেই। পুরো জাতির হয়েই যেনো মন্তব্যখাতায় নিজের মন্তব্য লিখেছেন এইচ এম জুয়েল।
জাতির হয়েই প্রশ্ন রেখেছেন তিনি জাতির কাছে। বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরের মন্তব্য খাতায় তিনি লেখেন ‘কি অন্যায় করেছে সে? কেন তাকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে? কি দোষ ছিলো তার? কেন তাকে হত্যা করেছে? সে এ দেশকে একটি উত্তম দেশ গড়তে চেয়েছিলো, এটাই কি তার দোষ ছিলো। আজ জাতির কাছে আমার একটাই প্রশ্ন, কি দোষ করেছিলাম আমি, কেন এই মহান ব্যক্তির পদধূলি নিতে পারি নাই? হে জাতি আমার প্রশ্নের উত্তর চাই। যদি উত্তর দিতে না পারো তাহলে এই মহান ব্যক্তিকে এনে দাও। আমি তার পদধূলি নিবো। কারণ আমি তার আদর্শে নিজেকে গড়তে চাই। কাঁদো বাঙালি কাঁদো মহান ব্যক্তির জন্য।’
একইভাবে নিজের মনের চাপা কষ্টের কথা জানিয়েছেন খুলনার কয়রা থেকে আসা মাসুদুর রহমান। তিনি লিখেছেন, ‘হে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, আপনার বাসায় আসতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করছি। আপনার বাড়ী যেখানে ঘাতকরা আপনাকে নির্মমভাবে হত্যা করেছিলো আজ সেখানে উপস্থিত হতে পেরে বার বার শুধু আপনার কথাই মনে পড়ছে।’
ইতিহাস আর নির্মমতায় এই বাড়িটি চার দশক পরেও জীবন্ত। বাড়ির প্রতিটি দেয়াল একেকটি গল্প শোনায়। জানায় অনেক অজানা তথ্য। বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর ঘুরে সৌরভ লেখেন: অসাধারণ এক অনুভূতি। অনেক অজানা তথ্যই আজ জানা হলো। মনের মধ্যে এক অন্য রকম আবেগ অনুভব করলাম। আর এ বাড়ির পরিবেশ ও চারপাশও আমাকে মুগ্ধ করেছে।
সৌরভের মতো মুগ্ধতা নিয়ে যেমন কেউ কেউ এই বাড়ি থেকে বের হন, তেমনই কেউ কেউ বের হন জলে ভেজা চোখ নিয়ে। সেই কথাই তুলে ধরলেন টঙ্গী গাজীপুরের আবুল খায়ের (মাহাদি): হে বাঙালি জাতির জনক, আজ তোমার বাসভবন পরিদর্শন করে অশ্রুসিক্ত নয়ন নিয়ে বাসায় ফিরতে হলো। তোমাকে জানাই হাজারো সালাম।
আবার নিজের অনুভূতি প্রকাশে কবিতার দ্বারস্থও হন কেউ কেউ। বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে নিজেদের লেখা কবিতা তুলে ধরেন কয়েকজন।১৫ আগস্ট ১৯৭৫ তুহিন মাজহার
বাঙালি জাতির ইতিহাস তাকিয়ে দেখ বাবা ঐ যে আসছে ঘাতক নরপশু অবশেষে… ঝড়ে গেলো সব তাইতো আমি হতবাক হয়ে চেয়ে আছে মর মর তোরা ঐ সব শালা।’
মন্তব্য খাতায় এভাবে কবিতায় তুলে ধরা প্রতিটি শব্দই একেকটি অমর কবিতা।