উন্নয়ন সাংবাদিক ও গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব শাইখ সিরাজ বলেছেন, ‘গণমাধ্যমের যাদুকরী শক্তিকে কাজে লাগিয়ে দেশ গঠনে ভূমিকা রাখা যায়। গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থীদের জন্য এটি অনেক বড় এক সুযোগ।’
রোববার রাজধানীর ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ আয়োজিত এক সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন।
এ সময় বিখ্যাত এক মনীষীকে উদ্ধৃত করে শাইখ সিরাজ বলেন, ‘‘দেশসেবা মানে নিজের কাজটি অত্যন্ত আন্তরিকতা ও যত্ন নিয়ে করা।’’
‘সেমিনার অন অ্যাগ্রিকালচার জার্নালিজম: অ্যা কেইস স্টাডি অন হৃদয়ে মাটি ও মানুষ’ শিরোনামে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির সাংবাদিকতা ও গণযোগাযোগ বিভাগের শিক্ষার্থীরা ধানমন্ডি ক্যাম্পাসে ওই সেমিনারের আয়োজন করে।
সেমিনারে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্বিবদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক গোলাম রহমান, ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির উপাধ্যক্ষ প্রফেসর এস. এম. মাহবুব-উল-হক মজুমদার, অধ্যাপক এ. এম. এম. হামিদুর রহমান, সহকারী অধ্যাপক ড. তাওফিক ই এলাহি, ড্যাফোডিল ফ্যামিলির সিইও মোহাম্মদ নুরুজ্জামান, ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির গণযোগযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগি অধ্যাপক ড. শেখ শফিউল ইসলাম, চ্যানেল আই অনলাইনের ডিজিটাল অ্যান্ড মাল্টিমিডিয়া এডিটর তৌফিক আহমেদসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও গণমাধ্যমের সংবাদকর্মীবৃন্দ।
চ্যানেল আইয়ের প্রামাণ্য অনুষ্ঠান “ হৃদয়ে মাটি ও মানুষ” নিয়ে পিএইচডি সম্পন্ন হওয়ায় ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীরা এ সেমিনারের আয়োজন করেন।
শিক্ষার্থীদের এই আয়োজনে উচ্ছ্বসিত বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষও। পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেছেন সহযোগি অধ্যাপক ড. শেখ শফিউল ইসলাম।
“Perception of Farmers on the Impact of Television Programme in Sustainable Agricultural Development of Bangladesh: A Case Study on Hridoye Mati O Manush” এই অভিসন্দর্ভের জন্য তিনি এ ডিগ্রি অর্জন করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. গোলাম রহমানের তত্ত্বাবধানে প্রায় সাড়ে ৪ বছর ধরে মাঠ পর্যায়ে ৮২৫ জন কৃষককে নিয়ে কাজ করেছেন তিনি।
সেমিনারে উদ্বোধনী বক্তব্য রাখেন, ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির উপাধ্যক্ষ প্রফেসর এস. এম. মাহবুব-উল-হক মজুমদার।
তিনি বলেন, ‘শাইখ সিরাজের কৃষি সাংবাদিকতাই পাল্টে দিয়েছে বাংলাদেশের কৃষি। আজকে আমরা ভাতের সঙ্গে সবজি খাচ্ছি, মাছ খাচ্ছি। এই শাক সাবজি, মাছ-মাংস, ডিমকে কৃষিখাতে আনতে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা শাইখ সিরাজের। উনার নির্মিত অনুষ্ঠানের উপর গবেষণা করে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেছেন শফিউল স্যার, এটা আমাদের জন্য গর্বের।’
সহকারী অধ্যাপক ড. তাওফিক ই এলাহি বলেন, ‘শাইখ সিরাজ সবুজ বিপ্লবের কর্ণধার। তার ‘হৃদয়ে মাটি ও মানুষ’ আমাদের বৃহত্তর জনগোষ্ঠীকে সমৃদ্ধ করেছে তথ্য দিয়ে। যার কারণে স্বাধীনতা উত্তর বাংলাদেশের কৃষির সম্প্রসারণ গতি পেয়েছে। শাইখ সিরাজের বিশাল কর্মকাণ্ড নিয়ে আরও গবেষণার সুযোগ রয়েছে।’
গবেষক ড. শেখ মোহাম্মদ শফিউল ইসলাম গবেষণা শুরুর প্রেক্ষাপট হিসেবে বলেন, আমি দেখছি বাংলাদেশের ভূমি কমেছে এক তৃতীয়াংশ, মানুষ বেড়েছে প্রায় তিনগুণ কিন্তু উৎপাদন বেড়েছে। এর পেছনে প্রধান কারণ কৃষকের জ্ঞান বৃদ্ধি, কৃষি সচেতন, উৎসাহ, নতুন প্রযুক্তি সম্পর্কে ধারণা। আর এসবই তারা পাচ্ছে একটি টেলিভিশন অনুষ্ঠান থেকে। তাই আমি গবেষণা করে দেখতে চেয়েছি বাংলাদেশের কৃষকের কাছে এবং কৃষিতে এই অনুষ্ঠানটির ভূমিকা কতটুকু।
চ্যানেল আইয়ের মতো অন্য গণমাধ্যমে উন্নয়ন ইস্যু তথা কৃষি ও কৃষকের কথা, জলবায়ু পরিবর্তন, দেশীয় কৃষ্টি, সংস্কৃতি প্রাধান্য পাবে এমন চাওয়া শিক্ষার্থীদের।