প্রায় সাড়ে ১২ বছর আগের কুষ্টিয়ার একটি আলোচিত ট্রিপল হত্যা মামলায় ৩ আসামীর আমৃত্যু এবং ৮ আসামীর যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। সেই সাথে তাদের প্রত্যেককে ২৫ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো ১ বছরের কারাদণ্ডাদেশ দেয়া হয়।
দণ্ডপ্রাপ্ত আসামীরা সবাই পলাতক থাকায় তাদের অনুপুস্থিতিতে এই রায় ঘোষণা করা হয়।
মঙ্গলবার বেলা ১২ টার দিকে কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক তাজুল ইসলাম এই রায় প্রদান করেন। দণ্ডপ্রাপ্তরা সবাই নিষিদ্ধ ঘোষিত বিভিন্ন চরমপন্থি বাহিনীর সক্রিয় সদস্য।
মামলার আমৃত্যু কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামীরা হলেন, কুষ্টিয়া সদর উপজেলার পুতলা ডাঙ্গা গ্রামের আসকর আলীর ছেলে ফারুক সদ্দার, সদর উপজেলার পশ্চিম আব্দালপুর গ্রামের ইছাহাক আলী মাস্টারের ছেলে কালু ওরফে কফিল উদ্দিন, পৌরসভার আড়ুয়াপাড়া এলাকার কালো মজনুর ছেলে রোহান।
যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত আসামীরা হলেন, ঝিনাইদহ জেলার হরিনাকুন্ডু উপজেলার বাহাদুরপুর গ্রামের মৃত খোরশেদ মন্ডলের ছেলে ফারুক মন্ডল, ভায়না গ্রামের জবেদ আলীর ছেলে লিয়াকত আলী, কুষ্টিয়ার সদর উপজেলার করিমপুর গ্রামের জলিল শেখ এর ছেলে লিয়াকত শেখ, এছেম শেখের ছেরে মনোয়ার শেখ, আনছার শেখের ছেলে আকামউদ্দিন, ওয়াহেদ আলী জোয়াদ্দারের ছেলে জমিরউদ্দিন, ইবি থানার খোর্দ্দবাখইল গ্রামের আবু বক্করের ছেলে নুরাল ওরফে নুরুল, সদর উপজেলার মাঝপাড়া গ্রামের ওম্মাদ মন্ডলের ছেলে খাকচার মন্ডল।
অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় এই মামলার ১১ আসামীকে বেকসুর খালাশ প্রদান করা হয়।
মামলার এজাহার সূত্রে জানাযায়, ২০০৯ সালের ৯ আগষ্ট গভীর রাতে সদর উপজেলার ভবানীপুরের আকবর আলীর ছেলে কাউয়ুমসহ আরো দুই জনের মাথা কেটে কুষ্টিয়া শহরের সাদ্দামবাজার মোড়ের গণপূর্ত অফিসের সামনের গেটে ঝুলিয়ে রেখে যায় সন্ত্রাসীরা। পরে পুলিশ এসে ওই তিনজনের কাটা মাথা উদ্ধার করে এবং ইবি থানার সোনাইডাঙ্গা গ্রাম থেকে মস্ককবিহীন ওই তিনজনের মরদেহ উদ্ধার করে এবং তাদের শনাক্ত করে। নিহত অপর দুইজন হলেন, আইউব আলী এবং সামসুজ্জামান।
ওই ঘটনায় নিহত কাইয়ুমের ভাই আব্দুল হাই বাদী হয়ে ১০ আগষ্ট কুষ্টিয়া মডেল থানায় অজ্ঞাত ব্যাক্তিদের আসামী করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। সেই মামলার দীর্ঘ তদন্ত শেষে ২২ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। পরে দীর্ঘ শুনানী শেষে আজ মঙ্গলবার এই মামলার রায় ঘোষণা করা হয়।
কুষ্টিয়া জজ আদালতের পিপি অনুপ কুমার নন্দী বলেন, এটি শুধু কুষ্টিয়া জেলা নয়, সারা দেশ ব্যাপী একটি আলোচিত হত্যাকাণ্ড ছিলো। ট্রেন্ডাবাজী এবং ট্রেন্ডারের দখল নেওয়া জন্যই মূলত চরমপন্থি সন্ত্রাসীরা এই হত্যাকাণ্ড সংগঠিত করে। এই মামলায় ৩ জনকে আমৃত্যু এবং ৮ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে বিজ্ঞ আদালত। সাজাপ্রাপ্ত আসামীরা সবাই পলাতক। তবে দীর্ঘদিন পর রায় ঘোষণা হলেও দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি হয়েছে।