কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির কার্যনির্বাহী পরিষদ নির্বাচন ২০২১-কে ঘিরে সমিতির গঠনতন্ত্র পরিপন্থী কাজ ও স্বেচ্ছাচারিতার পাল্টাপাল্টি অভিযোগ তুলেছে দুটি পক্ষ। কার্যনির্বাহী পরিষদের মোট ১৫ জনের ৮ জন ও ৭ জনের দুটি পক্ষ তৈরি হয়েছে। দুই পক্ষই নির্বাচন সম্পন্ন করার লক্ষ্যে আলাদা দুটি নির্বাচন কমিশন গঠন করেছেন।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় পৃথক দুটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ৭ জনের পক্ষটি অপর পক্ষের বিরুদ্ধে স্বেচ্ছাচারিতার ও গঠনতন্ত্র ভঙ্গের অভিযোগ এনে একটি নির্বাচন কমিশন গঠন করেন। তবে তাদের এ নির্বাচন কমিশনকে গঠনতন্ত্র পরিপন্থী কাজ বলছেন ৮ জনের পক্ষটি।
তাদের অভিযোগ, গঠনতন্ত্র অনুযায়ী ৩০ নভেম্বরের মধ্যে নির্বাচন কমিশন গঠন করতে হয়। তারা গঠনতন্ত্র না মেনে ও সংখ্যাগরিষ্ঠের মতামতে গঠিত নির্বাচন কমিশনকে উপেক্ষা করেন। একই দিনে নির্বাচন করতে অবৈধভাবে আলাদা নির্বাচন কমিশনও গঠন করেন।
গত ৩০ নভেম্বর শিক্ষক সমিতির কার্যনির্বাহী পরিষদের সভায় পরিষদের ৮ জন সদস্য ১৩ ডিসেম্বর নির্বাচনের তারিখ নির্ধারণ হয়। সে সভায় রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. একেএম রায়হান উদ্দিন প্রধান নির্বাচন কমিশনার, ইংরেজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক নকীবুন নবী এবং ব্যবস্থাপনা শিক্ষা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. সিদ্দিকুর রহমানকে নির্বাচন কমিশনার করে কমিশন গঠন করা হয়। সেই নির্বাচন কমিশন গত ২ ডিসেম্বর নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে। তবে গতকাল ৩ ডিসেম্বর সমিতির ৭ জনের অপর পক্ষ প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে ১৩ ডিসেম্বর নির্বাচনের তারিখ ঠিক রেখে নতুন আরেকটি নির্বাচন কমিশন গঠন করে। এতে নৃবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ আইনুল হককে প্রধান নির্বাচন কমিশনার, ফার্মেসি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. এনামুল হক এবং রসায়ন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. জুলহাস উদ্দিনকে নির্বাচন কমিশনার করা হয়।
৭ জনের পক্ষে নেতৃতে দেওয়া সমিতির সাধারণ সম্পাদক ড. স্বপন চন্দ্র মজুমদার বলেন, আমরা ফেডারেশনের সভার জন্য অপেক্ষা করেছি, এ জন্য আমরা দেরি করেছি। উনারা মাত্র ১ ঘণ্টার ব্যবধানে সভা ডেকেছেন এটি গঠনতন্ত্র পরিপন্থী। নির্ধারিত সময়ের পর নির্বাচন কমিশন গঠনের মাধ্যমে গঠনতন্ত্র উপেক্ষা করা হয়েছে কিনা এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, নির্বাচন কেন্দ্র করে করোনাকালীন সংকটে ফেডারেশনের ১ তারিখের সভার সিদ্ধান্তের জন্যই আমাদের এটি উপেক্ষা করতে হয়েছে।
৮ জনের পক্ষের নেতৃত্বে থাকা সমিতির সভাপতি রশিদুল ইসলাম শেখ বলেন, শিক্ষক সমিতির গঠনতন্ত্রের ১০-এ খ ধারা অনুযায়ী ১৫ থেকে ৩০ নভেম্বরের মধ্যে নির্বাচন কমিশন গঠন করতে হলেও নিয়মতান্ত্রিকভাবে ৩০ নভেম্বর গঠন হওয়া কমিশনকে উপেক্ষা করে তারা অবৈধভাবে আরেকটি কমিশন গঠন করে। এ ছাড়া গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সভা আহ্বানের ক্ষেত্রে সভাপতির পরামর্শ নিতে হয়। তাও তারা নেয়নি। এ ছাড়া আমি ক্যাম্পাসে থাকার পরও আমার স্বাক্ষর তারা জালিয়াতি করেছে। এটি অপরাধ। বিজ্ঞপ্তির প্যাডটিরও অনুমোদন নেই।
শিক্ষক সমিতির দুই পক্ষের এমন অবস্থার কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবারে আলোচনা সমালোচনার তৈরি হয়েছে।
যোগাযোগ করা হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এমরান কবির চৌধুরী গণমাধ্যমকে বলেন, এমন পরিস্থিতি কোনোভাবেই কাম্য নয়। তাদের দুপক্ষেরই উচিত সাধারণ সভা ডেকে সব শিক্ষকের মতামতের ভিত্তিতে একটি সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়া। এটি সবার জন্য শুভকর হবে।