কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে বাসে পেট্রোল বোমা মেরে ৮ জনকে হত্যার অভিযোগে করা মামলায় বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেছেন আদালত।
মঙ্গলবার দুপুরে কুমিল্লার ৫ নন্বর আমলি আদালতের বিচারক কুমিল্লার অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোস্তাইন বিল্লাহ এ আদেশ দেন।
বেগম খালেদা জিয়ার আইনজীবী সানাউল্লাহ মিয়া বিষয়টি নিশ্চিত করে সাংবাদিকদের বলেছেন, উচ্চ আদালতে এ মামলায় খালেদা জিয়ার জামিন চাওয়া হবে।
তিনি বলেন, ‘বাসে আগুন বিএনপি দেয়নি। আওয়ামী লীগই বাসে আগুন দিয়েছে। এসবের প্রমাণ আমাদের কাছে আছে। রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে এ মামলার চার্জশীটে বেগম খালেদা জিয়ার নাম অর্ন্তভুক্ত করা হয়েছে।’
খালেদা জিয়ার কুমিল্লার আইনজীবী কাইমুল হক রিংকু জানান, শারীরিক অসুস্থতার কারণে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে খালেদা জিয়াকে কুমিল্লার আদালতে হাজির করা হয়নি। আদালতে আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এই মামলায় গত ৮ এপ্রিল খালেদা জিয়াকে (সি ডাব্লিউ) গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
খালেদা জিয়ার পক্ষে জিআর ৫১ মামলাটি শুনানি করেন অ্যাডভোকেট সানাউল্লাহ মিয়া। এছাড়া এই শুনানিতে অ্যাডভোকেট কাইমুল হক রিংকুসহ নেতৃত্বে শতাধিক আইনজীবী অংশ নেন।
জানা গেছে, কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার জগমোহনপুর এলাকায় যাত্রীবাহী বাসে পেট্রলবোমা হামলায় ৮ যাত্রী হত্যা মামলায় ঢাকার কারাগারে থাকা বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়াকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে তাকে আদালতে উপস্থাপনের জন্য জারি করা প্রজেকশন ওয়ারেন্ট প্রত্যাহার ও জামিন আবেদনের শুনানি ২৮ মার্চ নির্ধারণ করেছিল আদালত।
কুমিল্লার ৫নং আমলী আদালতের দায়িত্বপ্রাপ্ত বিচারক মো: মুস্তাইন বিল্লাহ ওই আদেশ দিয়েছিলেন।
তবে সেদিন বিএনপি নেত্রীকে আদালতে হাজির না করায় ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাকর্তৃপক্ষকে কারণ দর্শাতে বলেন কুমিল্লা ৫ নং আমলি আদালতের বিচারক কাজী আরাফাত।
২০১৫ সালের ২ ফেব্রুয়ারি রাত আনুমানিক সাড়ে তিনটার দিকে কক্সবাজার থেকে ঢাকাগামী আইকন পরিবহনের একটি বাস কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার জগমোহনপুর এলাকায় আসামাত্র দুর্বৃত্তরা পেট্রলবোমা নিক্ষেপ করে। এতে ঘটনাস্থলে সাতজন ও হাসপাতালে নেয়ার দুদিন পর আরও একজনসহ মোট আটজন মারা যান ও ২৭ জন আহত হয়।
এ ঘটনায় ৩ ফেব্রুয়ারি রাতে চৌদ্দগ্রাম থানার উপপরিদর্শক (এসআই) নুরুজ্জামান হাওলাদার বাদী হলে দণ্ডবিধির ৩০২/৩৪ ধারায় একটি হত্যা মামলা করেন। মামলা তদন্ত করেন চৌদ্দগ্রাম থানার এসআই মো. ইব্রাহিম।
২০১৭ সালের ৬ মার্চ কুমিল্লার আদালতে এই মামলার অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। এতে বিএনপির চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এম কে আনোয়ার, রফিকুল ইসলাম মিয়া, যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী ও সালাউদ্দিন আহমেদ, বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি ও জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি শওকত মাহমুদ ও বিএনপির উপদেষ্টা সাবেক সাংসদ মনিরুল হক চৌধুরী, চৌদ্দগ্রামের জামায়াতের সাবেক সাংসদ সৈয়দ আবদুল্লাহ মো. তাহের, চৌদ্দগ্রাম উপজেলা জামায়াতের আমির সাহাবউদ্দিন ও সাধারণ সম্পাদক শাহ মো. মিজানুর রহমান, চৌদ্দগ্রাম উপজেলা জামায়াতের সাবেক আমির শাহজাহান, চিওড়া ইউনিয়ন জামায়াতের সাবেক আমির ও ক্যাডার মেজবাহ উদ্দিন ওরফে নয়ন, চৌদ্দগ্রাম উপজেলা বিএনপির সভাপতি কামরুল হুদাসহ ৭৮ জনের নামে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়। খালেদা জিয়া মামলার ৫১ নম্বর আসামি।