চট্টগ্রাম থেকে: জিতলেই শেষ চার। এমন ম্যাচে কুমিল্লার বিপক্ষে ১২ রানে হেরে পরের রাউন্ডে যাওয়ার জন্য ঢাকাপর্বে নিজেদের শেষ দুই ম্যাচের দিকে তাকিয়ে থাকতে হচ্ছে ডায়নামাইটসকে। বুধবার শেষ ওভারে জয়ের জন্য ঢাকার দরকার ছিল ২১। কিছুদিন ধরে ডেথ-ওভারের ‘খলনায়ক’ তকমা পাওয়া সাইফউদ্দিন এদিন শেষ ছয় বলে ৮ রান খরচ করে নায়ক।
বিপিএলের পঞ্চম আসরে চট্টগ্রাম পর্বের শেষ দিনে স্বাগতিকদের ম্যাচেও গ্যালারি একপাশে ফাঁকা ছিল। বিকেলে কুমিল্লার ম্যাচ আসলেই ফাঁকা চেয়ার আবার ভরে যায়। নাফিসা কামাল, তামিম ইকবালদের ম্যাচ থাকলেই এমন হয়েছে।
চট্টলায় কুমিল্লার ম্যাচে দর্শক বেশি হওয়ার বড় কারণ অবশ্যই ‘লোকালবয়’ তামিম ইকবাল। পাশাপাশি আরেকটি কারণের কথা শোনা যাচ্ছে। ম্যাচের দিন নিজেদের সমর্থকদের খেলা দেখার সুযোগ করে দিতে আলাদা গাড়িতে মাঠে লোক নিয়ে আসছেন কুমিল্লার কর্মকর্তারা। দুইয়ে-দুইয়ে চার হয়ে জমে উঠেছে কুমিল্লার ম্যাচ।
বুধবার ঢাকা টস জিতে আগে ফিল্ডিং নেয়। নির্ধারিত ওভারে ৬ উইকেটে ১৬৭ রান তোলে তারা। কুমিল্লার তামিম ইকবাল এদিনও শুরুতে ঝড় তুলে দেন। আগের দুই ম্যাচে ‘ব্যাক-টু-ব্যাক’ ষাট করার পর নিজের মাঠের শেষ ম্যাচে ৩৭ রানে থামেন। ২৩ বলে পাঁচ চারে এই রান করেন দেশসেরা ওপেনার। লিটন কুমার দাস সাকিব আল হাসানের বলে স্টাম্পিং হওয়ার আগে ৩০ বলে ৩৪ করে যান। ইমরুল কায়েস একটু ধীর গতিতে এগুতে যেয়ে কুপারের বলে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন। ২৪ বলে ২৬ করেন তিনি। মিডল-অর্ডারে স্যামুয়েলস ২৭ বলের ছোট একটা ঝড়ে দলের স্কোর বাড়ানোর চেষ্টা করেন। পাঁচ চার, দুই ছয়ে ৩৯ করেন তিনি। শেষ দিকে বাটলার (৪), ব্রাভোরা (৬) অল্পতে ফিরলে দুইশ রানের সম্ভাবনা নষ্ট হয় কুমিল্লার।
ঢাকার কেভিন কুপার ৪২ রান দিয়ে তিন উইকেট নেন। কুপারের মতো চার ওভার হাত ঘুরিয়ে দুই উইকেট নিতে সাকিবের খরচ ২৩।
জবাব দিতে নেমে দ্বিতীয় ওভারেই ধাক্কা খায় ঢাকা। শোয়েব মালিকের বলে ব্যক্তিগত ৬ রানের মাথায় লিটন দাসের হাতে স্টাম্পিং হয়ে ফেরেন লুইস। লড়াইটা ধরে রাখার চেষ্টা করেন ইংলিশ ক্রিকেটার জো ডেনলি।
মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনের বলে বোল্ড হওয়ার আগে দলকে ৮৩ রানে রেখে যান। ছয়টি চার, দুটি ছয়ের মারের সাহায্যে ৩৯ বল খেলে অর্ধশতক থেকে এক রান দূরে থাকার আক্ষেপ নিয়ে ফিরতে হয় তাকে। ঢাকার আশা বাঁচিয়ে রাখা পোল্যার্ড ২১ বলে ২৭ রান করে ১৭তম ওভারে বাউন্ডারি লাইনে ধরা পড়লে আরও ব্যাকফুটে চলে যায় দলটি। তার আগে ১৩ বলে ১৭ রান করে রানআউট হয়ে দলকে আরও বিপদে ফেলেন মোসাদ্দেক হোসেন। সেই বিপদ থেকে উদ্ধার পাওয়ার মতো অবস্থা কুপার, জহুরুলদের ছিল না। তারা পারেনওনি। ৮ উইকেট হারিয়ে ১৫৫ রানে থামে তারা।
কুমিল্লার ব্রাভো চার ওভারে ৩১ রান দিয়ে তিন উইকেট দখল করেন। দুই উইকেট নিতে তিন ওভারে সাইফউদ্দিনের খরচ ১৮ রান।
প্লেঅফের সমীকরণ
ঢাকা এই ম্যাচ জিতলে ১৩ পয়েন্টে চলে যেত। তাতে কুমিল্লা (১৪), খুলনার (১৩) পর শীর্ষ তৃতীয় দল হিসেবে স্থান দখল করতা তারা। সেটা না হওয়ায় রংপুর (১০), রাজশাহী (৮) এবং সিলেটের (৭) আশা একটু হলেও বেঁচে থাকল। ঢাকার (১১) ম্যাচ বাকি আছে আর দুটি। এই দুটির একটি জিতলেই কুমিল্লা, খুলনার পর তৃতীয় দল হিসেবে তাদের স্থান নিশ্চিত হয়ে যাবে।
তারা যদি সবকটিতে হারে। হিসাব জটিল হয়ে যাবে তখন। রংপুরের (১০) বাকি তিন ম্যাচ। রাজশাহীর (৮) বাকি আছে দুটি। সিলেটেরও (৭) ম্যাচ বাকি দুটি। এক ম্যাচ জিতলে দুই পয়েন্ট। এই মুহূর্তে যে অবস্থা তাতে যে দল ১৩ কিংবা তার বেশি পয়েন্টে চলে যাবে, তারাই শেষ চার দল হিসেবে টুর্নামেন্টে টিকে থাকবে।