প্রতিদিন পথে চলতে গিয়ে নারীদের হেনস্তার শিকার হওয়াটা যেন একটি সাধারণ বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। পাবলিক বাসে নারীদের ধাক্কা দেয়াটাও অভ্যাসে পরিণত হয়েছে অনেকের। কিছু বলতে গেলে উল্টো সেই নারীকেই শুনতে হয় নানা কুরুচিপূর্ণ কথা। ‘মেয়ে মানুষ’! তাই সব মুখ বুজে সহ্য করে নেয়া উচিত বলে মনে করেন সমাজের অনেকে। এমনকি পরিবার থেকেও সমর্থন পান না অনেক নারী। তাহলে হেনস্তার শিকার হলে কী করা উচিত?
যিনি হেনস্তার শিকার হন, তার কাছে অস্বস্তি লাগলেও অধিকাংশ সময়েই ঝামেলা এড়ানোর জন্য বিষয়টি চুপ করে সহ্য করে নেন। যদি মনে হয় প্রতিবাদ করা উচিত, তাহলে স্পষ্টভাবে জোর গলায় প্রতিবাদ করা উচিত। ‘আপনি যা করছেন, সেটা ঠিক না’, ‘আপনি যা বলছেন, সেটা বলা উচিত না’ কিংবা ‘নারীদের সম্মান করতে শিখুন,’ বলে প্রতিবাদ করা যেতে পারে। ব্রিস্টল জিরো টলারেন্স গ্রুপ এর মতে, এরকম সময়ে প্রথমে শান্ত এবং স্থির কণ্ঠে প্রতিবাদ করা উচিত। প্রথমেই রেগে গিয়ে চেঁচামেচি করলে পরিস্থিতি বিগড়ে যেতে পারে।
ব্রিস্টল জিরো টলারেন্স গ্রুপ আরও কিছু পরামর্শ দিয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় ঘটনা শেয়ার করে কিংবা সরাসরি প্রশ্ন করেও কিন্তু প্রতিবাদ করা যায়। এতে পরিস্থিতি শান্ত থাকার সম্ভাবনা থাকে। হেনস্তাকারিকেও বিব্রত করা যায়। যেমন-
- আপনার কেন মনে হলো যে আপনি আমাকে স্পর্শ করতে পারবেন?
- আপনার পরিবারের কারও সঙ্গেও এমন হোক, সেটা কি আপনি চান?
যে কোনো ধরনের হেনস্তার শিকার হলে আগে নিজের নিরাপত্তার কথা ভাবুন। নির্জন জায়গায় থাকলে দ্রুত নিরাপদ এবং জনবহুল স্থানে যাওয়ার চেষ্টা করুন। পাবলিক ট্রান্সপোর্টে একা থাকলে এবং নিরাপদ বোধ না করলে পরের স্টপে দ্রুত নেমে যান। কেউ যদি পিছু নেয়, তাহলে নিজের বাড়িতে প্রবেশ না করে পরিচিত অন্য কারও বাড়িতে যান। বিষয়টা যদি নিয়মিত ঘটে তাহলে অবশ্যই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে জানিয়ে রাখুন। এছাড়াও তাৎক্ষণিক বিপদে সাহায্য পেতে ৯৯৯ এ ফোন করে সাহায্য চাইতে পারেন।
অযাচিত স্পর্শ কিংবা যৌন হেনস্তার শিকার হলে অনেক নারীই বিষণ্ণতায় ভোগা শুরু করেন। আত্মহত্যার পথও বেছে নেন অনেকে। কিন্তু, অন্যের ভুলের জন্য নিজের জীবন নষ্ট করা উচিত নয়। এটা ভেবে দেখুন যে, অন্যের কুরুচিপূর্ণ আচরণের জন্য আপনি কেন হতাশায় ভুগবেন! বিবিসি
প্রতীকি ছবি