রাজশাহীতে বোরো ধানের জমিতে পানি না পেয়ে গোদাগাড়ি উপজেলায় ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর দুই কৃষক কীটনাশক পান করেছে বলে জানা গেছে। তাদের একজন মারা গেছেন। অন্যজন রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।
মৃত ব্যক্তির নাম অভিনাথ মারান্ডি (৩৬)। তিনি গোদাগাড়ী উপজেলার দেওপাড়া ইউনিয়নের নিমঘুটু গ্রামের মৃত বাবুচাঁদ মারান্ডির ছেলে। চিকিৎসাধীন অন্যজনের নাম রবি মারান্ডি (২৭)। তাঁর বাবার নাম গয়ানাথ মারান্ডি। অভিনাথ ও রবির বাড়ি পাশাপাশি। সম্পর্কে তারা চাচাতো ভাই।
স্থানীয় লোকজন জানান, বুধবার সন্ধ্যার একটু আগে অভিনাথ ও রবি গভীর নলকূপের কাছেই কীটনাশক পান করেন। এরপর দুজনকেই প্রথমে বাড়িতে নেয়া হয়। কিছুক্ষণ পর অভিনাথ মারা যান। এরপর রবিকে হাসপাতালে নেওয়া হয়। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রবির মা জানিয়েছিলেন, ছেলে বিষ খেয়েছে। কি কারণে বিষ খেয়েছে তা জানিনা। আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে অভিনাথের মরদেহ ময়নাতদন্ত শেষ করা হয়।
এলাকার রনজিত সাওরিয়া জানান, পানির জন্য অভিনাথ ১০-১২ দিন ধরে বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিএমডিএ) গভীর নলকূপে ঘুরছিলেন। কিন্তু নলকূপের অপারেটর সাখাওয়াত হোসেন সঠিকভাবে পানি দিচ্ছিলেন না। এ কারণে অভিনাথ ও চাচাতো ভাই রবি কীটনাশক পান করেন বলে শুনেছি।
রাজশাহী জেলা প্রশাসক মো. আবদুল জলিল জানান: গোদাগাড়ির কৃষকের বিষয়টি আমি শুনেছি এবং ইউএনওকে তদন্তের জন্য নির্দেশ দিয়েছি। পুলিশ সুপারের সঙ্গেও আমারকথা হয়েছে। পানির জন্য বা কি কারণে আত্মহত্যা করেছে তদন্ত ছাড়া বলা যাচ্ছে না। অপরজন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছে বলে জেনেছি।
রাজশাহীর পুলিশ সুপার এবিএম মাসুদ হোসেন জানান: তদন্ত শেষে বিষয়টি জানা যাবে।
এদিকে ঘটনাস্থলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জানে আলম, গোদাগাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুল ইসলাম ও স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বেলাল উদ্দিন সোহেল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন ।
হাসপাতালে গেলে চিকিৎসাধীন রবি স্বীকার করেছেন যে তিনি কীটনাশক পান করেছেন। গোদাগাড়ী থানার ওসি কামরুল ইসলাম বলেন: আমরা লাশ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছি। তদন্ত করে এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বরেন্দ্র বহুমূখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের এক প্রকৌশলী জানান: পানির অভাবে তাদের জমির ধান নষ্ট হয়নি। ধানের জমি ফেটেও যায়নি। জমিতে পানি রয়েছে।