গ্যারি কারস্টেনকেই হেড কোচ নিয়োগ দিতে যাচ্ছে ইংল্যান্ড। অ্যাশেজের পর ইংলিশদের দায়িত্ব ছেড়ে যাওয়া ট্রেভর বেলিসের জায়গা পূরণে বুধবার লর্ডসে কারস্টেনের সঙ্গে মুখোমুখি আলোচনা করবেন ইসিবি ডিরেক্টর অ্যাশলে জাইলস। আর সপ্তাহ শেষেই সাউথ আফ্রিকান কোচের সঙ্গে চুক্তি চূড়ান্ত করবে ইসিবি।
ইংলিশ বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বিশ্বজয়ী রুট-স্টোকসদের তিন ফরম্যাটের দলেরই দায়িত্ব নেবেন কারস্টেন।
গত সপ্তাহে ব্রিটিশ দৈনিক ‘দ্য টেলিগ্রাফ’ এক প্রতিবেদনে জানায়, হেড কোচ নিয়োগের চিন্তা-ভাবনা করছে ইংল্যান্ড। সাউথ আফ্রিকার সাবেক ব্যাটসম্যানকে সম্ভাব্য তালিকার একেবারে উপরের দিকে রেখেছেন ইসিবির ডিরেক্টর জাইলস।
তখন টেলিগ্রাফ আরও জানায়, ইংল্যান্ড এন্ড ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ডের পরিচালক জাইলস চলতি সপ্তাহেই দলের জন্য নতুন হেড কোচ নিয়োগের প্রক্রিয়া আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু করবেন এবং এখন পর্যন্ত কোচদের সম্ভাব্য যে তালিকা করা হয়েছে, তাতে শীর্ষে আছেন কারস্টেন।
পরিবারের সঙ্গে বেশি সময় কাটানোর কথা বলে ২০১৩ সাল থেকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের বাইরে কারস্টেন। তবে টেলিগ্রাফ বলছে, ইংল্যান্ড দলের পরিচালক জাইলস এবং ইসিবির প্রধান স্পন্সর সংস্থা কারস্টেনকে আশ্বস্ত করেছেন যে, উভয় পক্ষ আলোচনা করে তাকে দরকারী সময় দেয়া হবে।
কারস্টেনকে ব্যাকআপ দেয়ার জন্য দু’জন ইংলিশ সহকারী কোচ নিয়োগ দেবেন জাইলস। কারস্টেন যখন সরে যাবেন, তখন এই ব্যাকআপ কোচরা যাতে ইংল্যান্ড দলের দায়িত্ব নিতে পারেন সেই দৃষ্টিভঙ্গি থেকেই সহকারী নিয়োগ দেয়া হবে।
জাইলস ইংল্যান্ডের উত্তরসূরি পরিকল্পনায় উন্নতি করাতে চান এবং সেইসঙ্গে এটাও নিশ্চিত করতে চান যে, অস্ট্রেলিয়ার বেলিস ও সাউথ আফ্রিকার কারস্টেনের পর ভবিষ্যতে যাতে ইংলিশ ক্রিকেটের শীর্ষস্থানীয় কেউ পর্যাপ্ত অভিজ্ঞতা সম্পন্ন হয়ে চাকরিটি নিতে পারেন।
টেলিগ্রাফের আগের প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, কারস্টেন শুধু ওয়ানডে দলের কোচিংয়ের বিষয়ে আগ্রহী। এখন খবর, ইসিবি তাকে সব ফরম্যাটেই কোচের দায়িত্ব দিতে উত্সাহিত করেছে। তাতে তিনি রাজিও।
কোচ থাকাকালে বেলিস যে বেতন পেতেন তার চেয়ে বেশিই পাবেন কারস্টেন। বেতন-বোনাস মিলিয়ে বার্ষিক ৫ লাখ পাউন্ড পাবেন প্রোটিয়া কোচ। সেইসঙ্গে ইংল্যান্ড টেস্ট দলের উন্নতি ঘটাতে পারলে সেটা বাড়তেও পারে।
কারস্টেন ১০০ ওভারের ক্রিকেটে কার্ডিফের কোচের প্রস্তাব গ্রহণ করতে সম্মত হয়েছিলেন। তবে ইসিবি দলটিকে এখন কারস্টেনের জায়গায় একজন ইংলিশ কোচ নিয়োগের সুযোগ দিয়েছে। কারণ এই টুর্নামেন্টের আটটি দলের সবাই বিদেশি কোচ নিয়োগের জন্য ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছে।
ঘরের মাঠে অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপ শুরু হওয়ার আগেই ট্রেভর বেলিস জানিয়েছিলে, টুর্নামেন্ট শেষে সরে দাঁড়াবেন। ইংলিশদের প্রথমবারের মতো ওয়ানডে বিশ্বকাপ জিতিয়েছেন। পরে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে অ্যাশেজ সিরিজ ২-২তে ড্র করার পর কথামত সরে গেছেন বেলিস।
২০০৮-১১ পর্যন্ত ভারতের কোচ ছিলেন কারস্টেন। তার অধীনেই ২০১১তে ঘরের মাঠে ওয়ানডে বিশ্বকাপ জেতেন ধোনি-কোহলিরা। তিনি ২০১১-১৩ পর্যন্ত কোচিং করিয়েছেন নিজ দেশ সাউথ আফ্রিকাকেও। কারস্টেনের সময়েই টেস্ট র্যাঙ্কিংয়ে একনম্বর হয়েছিল প্রোটিয়ারা।
কারস্টেন ২০১৩ সাল থেকে ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ (আইপিএল), বিগ ব্যাশ দল হোবার্ট হারিকেনস এবং বিশ্বজুড়ে অন্যান্য ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগগুলোর কোচিং নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন।