কানাডায় ভ্যাকসিন গ্রহীতাদের মধ্যে এখন পর্যন্ত কোন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া পাওয়াা যায়নি। গত ১৪ ডিসেম্বর থেকে কানাডায় ভ্যাকসিন প্রয়োগ শুরু হয়েছে এবং এখন পর্যন্ত ২ লাখ ৩০ হাজার ডোজ ভ্যাকসিন প্রয়োগ করা হয়েছে।
ভ্যাকসিনগুলো পেয়েছেন সম্মুখসারির স্বাস্থ্যকর্মী, লং-টার্ম কেয়ার হোমের বাসিন্দা ও কর্মীরা। ইতিমধ্যে কানাডা সরকার নাগরিকদের আগামী সেপ্টেম্বরের মধ্যে সকলের ভ্যাকসিন প্রয়োগ সম্ভব হবে বলে আশ্বস্ত করেছেন।
হেলথ কানাডার চিফ মেডিকেল অ্যাডভাইজার ডা. সুপ্রিয়া শর্মা বলেছেন: কানাডায় নাগরিকদের ভ্যাকসিন প্রয়োগের পর থেকে এ পর্যন্ত কোনো পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। ভ্যাকসিন গ্রহীতাদের মধ্যে এখন পর্যন্ত তীব্র, মৃদু ও মাঝারি কোনো ধরনের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার খবর পাওয়া যায়নি।
কানাডায় ভ্যাকসিনেশন প্রক্রিয়া পর্যবেক্ষণের দায়িত্বে থাকা ডা. সুপ্রিয়া শর্মা আরও বলেন: ভ্যাকসিনেশনের ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞরা দুটি বিষয়ের ওপর নজর রাখেন। প্রথমেই তারা দেখেন ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে ঘটেনি এমন কিছু ভ্যাকসিন প্রয়োগের পর ঘটছে কিনা। দ্বিতীয়ত, তারা দেখেন ভ্যাকসিন প্রয়োগের পর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াগুলো ট্রায়ালের সময় নথিবদ্ধ করা পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার চেয়ে মারাত্মক বা সংখ্যায় বেশি কিনা। এখন পর্যন্ত উভয় ক্ষেত্রেই সন্তোষজনক ফলাফল পাওয়া গেছে। এর অর্থ হলো ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল ভালোমতোই হয়েছে।
ভ্যাকসিনের সাধারণ পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া গুলোর মধ্যে আছে স্বল্প-মেয়াদি জ্বর, ইনজেকশনের স্থানে ব্যথা, মাথা ব্যথা ও অবসাদগ্রস্থতা। ভ্যাকসিন নেওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই অবশ্য এসব সমস্যা প্রশমিত হয়ে আসে।
হেলথ কানাডা গত ডিসেম্বরে দুটি কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনের অনুমোদন দেয়। প্রথম অনুমোদন দেওয়া হয় ফাইজার-বায়োএনটেকের ভ্যাকসিন। এরপর মডর্নার ভ্যাকসিন অনুমোদন দেয় হেলথ কানাডা।
হেলথ কানাডা অ্যাস্ট্রাজেনেকা ও জনসন অ্যান্ড জনসনের ভ্যাকসিনও পর্যালোচনা করে দেখছে। অনুমোদনের জন্য পর্যাপ্ত তথ্য-উপাত্ত এখন পর্যন্ত কোম্পানিগুলোর কাছ থেকে সরবরাহ করা হয়নি। এগুলো অনুমোদনের ব্যাপারে কবে নাগাদ সিদ্দান্ত নেওয়া হবে সে ব্যাপারে কিছু বলতে পারেননি সুপ্রিয়া শর্মা।
দুটি কোম্পানিই এ মাসের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে ফেজ-৩ ট্রায়াল সম্পন্ন করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য কানাডায় এখন পর্যন্ত ১ লাখ ৯৫ হাজার কানাডিয়ান ভ্যাকসিন পেয়েছেন। যদিও সরবরাহ করা হয়েছে ৪ লাখ ২৫ হাজার ডোজ ভ্যাকসিন।
অন্যদিকে কানাডার প্রধান চারটি প্রদেশ অন্টারিও, বৃটিশ কলম্বিয়া, আলবার্টা, এবং কুইবেকে নাটকীয়ভাবে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। আর করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধির কারণে হাসপাতাল, নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্রে ব্যাপকহারে চাপ পড়ছে। সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি মানাসহ সরকারি বিভিন্ন বিধিনিষেধ দেওয়া সত্ত্বেও করোনাভাইরাস কোনোভাবেই নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না।
উল্লেখ্য, দেশটির সরকার করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় দ্রুততম সময়ে কিভাবে নাগরিকদের ভ্যাকসিনের আওতায় আনা যায় তার ওপর জোর গুরুত্বারোপ করছে।
সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, কানাডায় করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ৭ লাখ ৮ হাজার ৬শত ১৯ জন, মৃত্যুবরণ করেছেন ১৮ হাজার ১৪ জন এবং সুস্থ হয়েছেন ৬ লাখ ১৫ হাজার ৩ শ’ ২৪ জন।