ট্রাক চালকদের চলমান আন্দোলনের মুখে কানাডায় ইতিহাসে প্রথমবারের মতো জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে।
কোভিড ভ্যাকসিন বাধ্যতামূলক করার প্রতিবাদে ট্রাক চালকদের বিক্ষোভ ইতিমধ্যেই রাজনৈতিক রূপ নিয়েছে। আকস্মিক এমন পরিস্থিতিতে কানাডিয়ানদের পাশাপাশি প্রবাসী বাঙালিরাও উদ্বিগ্ন।
পূথিবীর সভ্য দেশের অন্যতম দেশ কানাডা। বহু সংস্কৃতি ও বহুজাতিক দেশ হিসেবে পরিচিত কানাডার জনপ্রিয়তার অন্যতম আরও একটি কারণ প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। মুসলিম দেশসহ বিভিন্ন দেশের অভিবাসীদের কানাডায় প্রবেশ ও তাদের আশ্রয় দেয়ায় কানাডার উগ্র ডানপন্থী এবং শ্বেতাঙ্গ আধিপত্যবাদীরা সহজভাবে না নিয়ে দিন দিন ট্রুডো বিরোধী হয়ে পড়ছেন। ভ্যাকসিন বিরোধীতার নামে সংগঠিত হয়ে তারা রাজধানী শহরে অবস্থান নিয়ে সরকার বিরোধী বক্তব্য দিতে শুরু করেছেন।
আচমকা এ ধরনের ঘটনায় কানাডীয়ানদের পাশাপাশি কানাডায় বসবাসরত বাংলাদেশিরাও উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন। বিক্ষোভকারীদের অবরোধে ডাউন টাউন অটোয়ায় অন্যান্যের সাথে বাংলাদেশি বেশ কয়েকটি দোকান এবং রেস্টুরেন্ট ব্যবসায়িকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ইতোমধ্যেই কানাডার ট্রাক চালকদের আন্দোলনের প্রধান তিন নেতা তামারা লিচ, ক্রিস বারবার এবং প্যাট কিং কে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। তিন জনের একজন জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থার সাবেক কর্মকর্তা, একজন সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা এবং একজন সাবেক সেনা কর্মকর্তা। এছাড়াও দেড়শতাধিক বিক্ষোভকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
আন্দোলন দমাতে জরুরী অবস্থা ঘোষণা, পুলিশি অভিযান চললেও উগ্র ডানপন্থীদের বড় ধরনের এই শো ডাউন বাংলাদেশিসহ অভিবাসীদের মধ্যে উদ্বেগ তৈরি করেছে। পাশাপাশি খোদ ডোনাল্ড ট্রাম্পসহ তার সমর্থকসহ আমেরিকান শ্বেতাঙ্গ আধিপত্যবাদী এবং উগ্র ডানপন্থীদের সমর্থন অভিবাসীদের ভাবিয়ে তুলেছে।
অন্যদিকে রাজনীতিক, গণমাধ্যম, সুশীল সমাজ তথা সাধারণ নাগরিকরা এক হয়ে এই আন্দোলনের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছে। অভিবাসীবান্ধব লিবারেল সরকারের পাশে দাঁড়িয়েছে আরেক অভিবাসীবান্ধব বিরোধী দল এনডিপি। যদিও প্রধান বিরোধী দল কনজারভেটিভ পার্টি এই আন্দোলনের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে। ‘ফ্রিডম কনভয় আন্দোলন’ অভিবাসীবান্ধব কানাডায় উদার রাজনীতি এবং অভিবাসীবান্ধব অবস্থানের ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন ছুড়ে দিয়েছে সাধারণ নাগরিকদের মধ্যেও।