চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

কাউন্সিলর প্রার্থীর টাকা ভাগাভাগি নিয়ে দ্বন্দ্ব, লাথিতে নিহত ব্যবসায়ী

আবুল কাশেম হৃদয়: কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে কাউন্সিলর প্রার্থীর দেয়া টাকা ভাগাভাগিকে কেন্দ্র করে বাক-বিতন্ডার এক পর্যায়ে লাথিতে কুমিল্লা শহরের কাটাবিল এলাকায় একজন নিহত হয়েছেন। নিহত খোরশেদ আলম (৬০) একজন চাল ব্যবসায়ী।

সোমবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।

জানা গেছে, নির্বাচনে খরচের জন্য নগরীর ১৫ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ৫শ টাকা দেন হারুন নামের অপর এক ভোটারকে। সেই টাকা থেকে ২শ’ টাকা চেয়েছিলেন নিহত খোরশেদ আলম। টাকা নিয়ে বাক-বিতন্ডার এক পর্যায়ে খোরশেদ আলমের বুকের মাঝখানে লাথি মারলে সে মাটিয়ে লুটিয়ে পড়ে। এ অবস্থায় খোরশেদ আলমকে নড়তে চড়তে না দেখে এলাকার লোকজন দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

নিহত খোরশেদ আলমের ছোট ভাই জামাল হোসেন জানান, আমার ভাই খোরশেদ আলম প্রতিবাদ করতে গিয়ে জীবন গেল। মো: হারুন ও তার ছেলে তানিম আমার ভাইয়ের সাথে বাক-বিতন্ডা হয়। আমার ভাই বলেছিল তোমরা বিভিন্ন প্রার্থী থেকে টাকা-পয়সা নিলে মানসম্মানে আঘাত আসে। টাকা-পয়সা কারো কাছ থেকে না নেয়ার জন্য প্রতিবাদ করায় তার উপর চড়াও হয়ে হারুনের ছেলে লাথি মারে এবং হারুন ঘুষি মারে। এমতবস্থায় আমার ভাই পড়ে গিয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যায়।

এদিকে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে লাশ উদ্ধার করেছে। কোনো কাউন্সিলর প্রার্থীর টাকা নিয়ে এ ঘটনা ঘটেছে তা জানা যায়নি।

কোতয়ালী থানার পুলিশ পরিদর্শক সালাউদ্দিন জানান, প্রাথমিকভাবে পরিবারের লোকজনের কাছে জানতে পারলাম হারুন ও তার ছেলে তানিমের সাথে টাকা নিয়ে ঝগড়া হয়েছে। খোরশেদ আলমের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য কুমেক হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

খোরশেদ আলমের মৃত্যুকে তার স্বজনদের আহাজারিতে এলাকা ভারী হয়ে উঠে। তার স্ত্রী, চার মেয়ে ও এক ছেলের কান্নায় আশেপাশের লোকজন এসে ভিড় জমায়। খোরশেদ আলমের পরিবারকে সাত্ত্বনা জানাতে ওই ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থীরা তার বাড়িতে ছুটে যান।

গুড়ি গুড়ি বৃষ্টির মধ্যেই ব্যস্ত প্রচারণা
কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টির মধ্যেই ব্যস্ত প্রচারণা চালাচ্ছেন দুই হেভিওয়েট মেয়র প্রার্থী আওয়ামীলীগের আঞ্জুম সুলতানা সীমা ও বিএনপির মনিরুল হক সাক্কু। নির্বাচনে সীমা তার পক্ষে ব্যাপক জনসমর্থনের কথা পুনরুল্লেখ করে বলেছেন, কুমিল্লার মানুষ পরিবর্তন চায়।

অপর দিকে বিএনপির প্রার্থী মনিরুল হক সাক্কু অভিযোগ করে বলেছেন গোয়েন্দা সংস্থার লোকজন এলাকায় এলাকায় অবস্থান নিয়েছে।

আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থীর পক্ষে কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগের নেতৃবৃন্দদের গনসংযোগ ও উঠান বৈঠকে চলছে এখন কুমিল্লা সিটি নির্বাচনে। তারা আ’লীগ সমর্থিত প্রার্থী আঞ্জুম সুলতানা সীমা এর পক্ষে গণসংযোগ ও ভোট চেয়ে বেড়াচ্ছেন পাড়া-মহল্লায়।

সোমবার সকালে নগরীর ১৯, ২০, ২১, ২২নং ওয়ার্ডের উঠান বৈঠক ও গণসংযোগ করেন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের চেয়ারম্যান ও পরিকল্পনামন্ত্রী আহম মুস্তফা কামালের মেয়ে নাফিসা কামাল। এসময় কেন্দ্রীয় আ’লীগের চট্টগ্রামের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক এনামুল হক শামিম, কুমিল্লা জেলা পরিষদের সাবেক প্রশাসক আলহাজ মো: ওমর ফারুকসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

সীমার পক্ষে ভোট চেয়ে নাফিসা কামাল বলেন, কুমিল্লার মানুষ সবসময় উন্নয়নের পক্ষে ক্জ করে। নৌকা প্রতীক সবসময় মানুষর কল্যানে কাজ করে। নৌকায় ভোট দিতে আপনারা কেউ ভুল করবেন না। সীমা আপাকে নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে আপনাদের পাশে সেবা করার সুযোগ দিন। আমিও এসেছি আপনাদের পাশে। আমাদের পছন্দের প্রার্থী আঞ্জুম সুলতানা সীমাকে সবাই মিলে ভোট দিয়ে প্রমাণ করবো কুমিল্লার মানুষ উন্নয়নের পক্ষের মানুষ। জনগণ সিদ্ধান্ত নিতে কখনোই ভুল করে না।

এসময় উপস্থিত ছিলেন সদর দক্ষিণ উপজেলার চেয়ারম্যান গোলাম সারোয়ার, মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল হক, সদর দক্ষিণ উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল হাই বাবলু, কাশীনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেনসহ কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দরা।

বিএনপি মনোনীত মেয়র প্রার্থী মনিরুল হক সাক্কু ১৯নং ওয়ার্ডে গণসংযোগ করেন। তিনি সাধারণ ভোটারদের কাছে ভোট চেয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন। তার সাথেও বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দরা গণসংযোগ করছেন। এ ছাড়া কুমিল্লা শহরের মোগলটুলি এলাকায় গণ সংযোগ করেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান সাংবাদিক শওকত মাহমুদ।

বিএনপি মনোনীত মেয়র প্রার্থী মনিরুল হক সাক্কু বলেন, আমি মানুষর জন্য অনেক কাজ করেছি। আমাকে ভোটাররা হতাশ করবে না। আগামী ৩০ তারিখ সবাইকে কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দেয়ার অনুরোধ জানাচ্ছি এবং নির্বাচন কমিশনের কাছে দাবি ভোটাররা যেন তাদের ভোটের অধিকার প্রয়োগ করতে পারে সে ব্যবস্থা নেয়। যদি সুন্দর ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন হয় বিপুল ভোটে আমি বিজয়ী হব।