টেস্টের ভেতর টেস্ট। চোখে চোখে যুদ্ধ। যুদ্ধ মুখের কথায়। টেস্ট ক্রিকেট মানেই এমন রোমাঞ্চ। যেটা দেখা গেছে মিরপুরে। ব্যাটে-বলের লড়াইয়ের পাশাপাশি শারীরিক ভাষায়ও অস্ট্রেলিয়াকে প্রতি মুহূর্তে কাবু করেন মুশফিকরা। দ্বিতীয় টেস্টের আগে বাংলাদেশ অধিনায়ক জানিয়ে দিলেন, এবারও আগ্রাসী ক্রিকেট আর কাউন্টার অ্যাটাক করে খেলবে তার দল।
‘প্রথম টেস্টের আগেও আমি বলেছি, আমাদের চেষ্টা থাকবে প্রতিটা ম্যাচ জয়ের। অবশ্যই ২-০ করার জন্য যা যা করা দরকার আমরা করবো। এখানে নিরাপদ থাকা বলতে কোনো অপশন নাই। আপনি যতই নিরাপদ খেলেন না কেন এমন দলের সঙ্গে কখনও জিততে পারবেন না। ওরা যতই আগ্রাসী ক্রিকেট খেলুক আমরা তার চেয়ে বেশি ভালো ও আগ্রাসী ক্রিকেট খেলার চেষ্টা করবো। কাউন্টার অ্যাটাক করে খেলার চেষ্টা করবো।’ বলছিলেন মুশফিক।
এই আগ্রাসী ক্রিকেট খেলেই মিরপুর টেস্টে ২০ রানের জয় পায় বাংলাদেশ। ম্যাচের শুরুতেই ১০ রানে বাংলাদেশের তিন উইকেট ফেলে দিয়ে চাপে ফেলেছিল অজিরা। সেখান থেকে সাকিব-তামিম ১৫৫ রানের জুটি গড়ে পাল্টা জবাব দেন। ম্যাচের শেষ ইনিংসে স্মিথ-ওয়ার্নার বড় জুটি গড়ে ম্যাচ নিয়ে যাচ্ছিলেন সফরকারীদের দিকে। সেই জুটি ভেঙে আবার খেলায় ফিরে আসে বাংলাদেশ।
‘আমাদের কাজগুলো ঠিকঠাক করতে হবে। আমার মনে হয় প্রথম টেস্টে আমরা যা করেছি; তা করতে হবে। অনেক চাপের মুহূর্ত থেকে আমরা বেরিয়ে এসেছি। যেমন ১০ রানে তিন উইকেট পড়ে যাওয়ার পরও আমরা সেখান থেকে ঘুরে দাঁড়িয়েছি। দ্বিতীয় ইনিংসে স্মিথ-ওয়ার্নারের জুটিটাও আমরা ভাঙতে পেরেছি। এই বিশ্বাসগুলো, আমাদের আত্মবিশ্বাসী করেছে। এই আত্মবিশ্বাসগুলো আমাদের থাকতে হবে।’
মুশফিক বেশিরভাগ সময় নিজেদের জয়গান গাইলেও প্রতিপক্ষকে সমীহ করতে ভোলেননি, ‘ফলের পর অনেকে খুশিতে আত্মহারা হয়ে যায়। শেষ টেস্টের পরই বলেছি… আমরা সব সময় বলে এসেছি, এরকম সুযোগ আমাদের সব সময় আসে না। আবার এরকম ফলও আসে না। এটা ভালো দিক যে আমরা ১-০ তে এগিয়ে আছি। তারপরও অস্ট্রেলিয়া অনেক শক্তিশালী দল। তারা জানে চাপের মধ্যে কীভাবে খেলতে হয়। আমরা শেষ দুই সিরিজে প্রথম টেস্ট হারার পর তো ভালোভাবে দ্বিতীয় ম্যাচে ফিরেছি। মানসিকভাবে আমরা কতটুকু উন্নতি করেছি এটাও কিন্তু তার প্রমাণ দেয়।’
চট্টগ্রাম টেস্ট জিতলে অধিনায়ক হিসেবেও খ্যাতি পাবেন মুশফিক। অস্ট্রেলিয়াকে হোয়াইটওয়াশ করা দলের অধিনায়ক হতে পারা তো কম গর্বের হবে না। এমন মাইলফলকের সামনে দাঁড়িয়ে মুশফিক হাঁটলেন পেছনে। জানালেন টেস্টে যে সাফল্য আসতে শুরু করেছে সেটি ছিল অবধারিত ও সময়ের ব্যাপার।
‘টেস্টে বাংলাদেশ যেভাবে উন্নতি করছে তাতে এটা অবধারিত ছিল। কারণ আমাদের দলে এমন কয়েকজন খেলোয়াড় আছে যারা ধারাবাহিকভাবে ভালো করছে। এমন একটা দল ভালো করলে টেস্টে উন্নতি করতে বাধ্য। এখানে ব্যক্তিগত মাইলফলকের কোনো ব্যাপার নেই। ব্যক্তিগতভাবে আমি অবশ্যই চাইবো অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজ জিততে, আর সেটা যেন ২-০ হয়।’
ছবি: সাকিব উল ইসলাম।