যুদ্ধাহত সেক্টর কমান্ডার শহীদ কর্নেল আবু তাহের বীর উত্তমের ৪০তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ। ১৯৭৬ সালের এই দিনে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে বির্তকিত সামরিক আদালতে তাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়।
মুক্তিযুদ্ধের সময়ে তাহের পাকিস্তান থেকে পালিয়ে ভারতে এসে দেরাদুনে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রশিক্ষণ শিবিরে যোগ দেন। এরপর তিনি দেশে এসে টাঙ্গাইল ও ময়মনসিংহে পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে সরাসরি যুদ্ধে অংশ নেন। যুদ্ধে তিনি একটি পা হারান।
‘কর্নেল তাহের সংসদ’ এক বিবৃতিতে সরকারের প্রতি উচ্চ আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী তাহের দিবসকে রাষ্ট্রীয়ভাবে পালনসহ সকল নির্দেশনা বাস্তবায়নের আহ্বান জানানো হয়।
বিবৃতিতে রাষ্ট্রপ্রধান ও সরকার প্রধানের বাণী, জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখাসহ সরকারীভাবে শোক পালন, তাহের স্মরণে ডাক টিকেট প্রকাশ, দেশের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ও রাজপথ কর্নেল তাহেরের নামে অঙ্কিত করার পাশাপাশি শহীদ আবু তাহেরের সম্মানে পদক্ষেপ নিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়।
তাহেরের ফাঁসির ৪০তম বার্ষিকী স্মরণে ‘কর্নেল তাহের সংসদ’ আজ বৃহস্পতিবার সকালে নেত্রকোণা জেলার পূর্বধলা উপজেলার কাজলা গ্রামে তার সমাধিতে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করে।
দিবসটি উপলক্ষে জাসদের পক্ষ থেকে এক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে। এতে সভাপতিত্ব করবেন দলের সভাপতি ও তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু।
এদিকে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ (জাসদ) দিবসটি উপলক্ষে সকাল ১১টায় মুক্তিযুদ্ধের ১১ নং সেক্টরের সেক্টর কমান্ডার তাহেরের খুনি জিয়াউর রহমানের মরণোত্তর ফাঁসির দাবীতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মিছিল ও সমাবেশ করবে।
১৯৭৬ সালের ১৭ জুলাই সামরিক ট্রাইব্যুনালের রায়ের ৩৪ বছর পর তার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ২০১০ সালের ২৩ অগাস্ট হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন তাহেরের স্ত্রী লুতফা তাহের ও তার পরিবারের সদস্যরা।
২০১১ সালের ২২ মার্চ এর রায়ে হাইকোর্ট তৎকালীন সামরিক শাসক জিয়াউর রহমানের পরিকল্পনায় মুক্তিযুদ্ধের সেক্টর কমান্ডার তাহেরকে বিচারের নামে ঠাণ্ডা মাথায় হত্যা করা হয়েছিল বলে উল্লেখ করে।
ওই রায়ে তাহেরকে শহীদের মর্যাদা দেয়ার পাশাপাশি কথিত সামরিক আদালতের বিচারকের বিরুদ্ধে খুনের মামলা করারও নির্দেশ দেয়া হয়।
রায়ে জিয়া জীবিত না থাকায় তার বিচার সম্ভবপর না হলেও সরকারের উচিত হবে এই হত্যার জন্য দায়ী কেউ জীবিত থাকলে তাকে খুঁজে বের করে হত্যার দায়ে অভিযুক্ত করা হয়।