চীনে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে দেশটিতে এ পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৭০-এ। চীনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বুধবার পর্যন্ত হিসাবে দেশজুড়ে ৭ হাজার ৭১১ জন আক্রান্তের খবর পাওয়া গেছে। চীন ছাড়াও সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়েছে অন্তত আরও ১৬টি দেশে।
২০০২ ও ২০০৩ সালে সমগোত্রীয় রোগ সার্সের মহামারীতেও এরচেয়ে কম মৃত্যু হয়েছিল বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। চীনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়: স্থানীয় সময় বুধবার পর্যন্ত দেশজুড়ে ৫ হাজার ৯৭৪ জনের নিশ্চিত আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। মৃতের সংখ্যা একদিনে বেড়েছে ২৬ জন।
ভাইরাসটি কোনো বৈশ্বিক স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করছে কিনা, এ বিষয়ে বৈঠক করবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। সংস্থাটির মহাপরিচালক টেড্রোস আধানম গেব্রেইয়েসাস বলেন: করোনা ভাইরাস নিয়ে এর আগে বৈশ্বিক স্বাস্থ্যঝুঁকির বিষয়টি বিবেচনা না করলেও গত কিছুদিনে ভাইরাসটি যে হারে ছড়াচ্ছে, বিশেষ করে একজন মানুষ থেকে আরেকজন মানুষের দেহে, তাতে এখন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা উদ্বিগ্ন।
এক্ষেত্রে জার্মানি, ভিয়েতনাম এবং জাপানের প্রতি ইঙ্গিত করে এসব কথা বলেন তিনি। ‘যদিও চীনের বাইরে আক্রান্তের সংখ্যাটি তুলনামূলকভাবে বেশ কম, কিন্তু সেটি বেড়ে গিয়ে শিগগিরই অনেক বড় মহামারির ক্ষমতা রাখে বলে মন্তব্য করেছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক।
ভৌগলিক অবস্থান এবং চীন থেকে আসা যাত্রীদের কারণে করোনা ভাইরাস বাংলাদেশে আসার ঝুঁকি রয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে বিমানবন্দরেরর সবকটি এরাইভেল গেটে স্থাপন করা হয়েছে থারমাল স্ক্যানার। বিদেশ থেকে সব ফ্লাইটে আসা যাত্রীদের বিশেষ করে ঢাকায় চীন থেকে আসা প্রতিদিনের ৪টি ফ্লাইটের যাত্রীদের বিশেষ গুরুত্বের সাথে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে ঢাকায় প্রবেশ করতে দেয়া হচ্ছে। করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে শাহজালাল বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের এ পদক্ষেপ প্রশংসনীয়। তবে করোনা ভাইরাস যেভাবে দ্রুত গতিতে বিশ্ব স্বাস্থ্যের জন্য হুমকি হয়ে উঠছে তা বিবেচনায় রেখে আরও সতর্কতা অবলম্বনের কোনো বিকল্প নেই।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা আজ এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে এই ভাইরাস আক্রমণকে মহামারী ঘোষণা দিতে যাচ্ছে। আমরা আশা করি যদি এই ঘোষণা আসে বাংলাদেশ যেন ত্বরিত ব্যবস্থা নিতে পারে। আমাদের মত জনসংখ্যাবহুল দেশে ভাইরাস সংক্রমণ মারাত্মক হতে পারে। মুহূর্তেই ছড়িয়ে যেতে পারে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে। এজন্য এখনই সরকারকে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
এই সময় আমাদের উচিৎ জরুরি স্বাস্থ্যসেবার সব প্রতিষ্ঠানকে সতর্ক অবস্থায় রাখা। যেন যে কোনো সময় ভাইরাস আক্রান্ত ব্যক্তিকে সঠিক চিকিৎসা সেবা দেয় যায়। আমরা আশা করি সরকার এই বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে অনুধাবণ করতে পারবে। তবেই জনস্বাস্থ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যাবে।