করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব মোকাবেলায় যখন পুরো বিশ্ব দিকবিদিক শূন্য, কোনভাবেই লাগাম টানা যাচ্ছে না ‘২০১৯-এনসিওভি’র; ঠিক তখন প্রাণঘাতী ভাইরাসটি থেকে নিজেকে রক্ষা এবং সহযাত্রীদের সুরক্ষায় দৃষ্টান্ত স্থাপন করে আলোচনায় এসেছেন চীনের দুই নাগরিক। ফ্লাইটে বসে নিজেদের মুড়িয়ে নিয়েছিলেন পলিথিন ফুয়েলে।
শুরুটা চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহরে, এরপর ছড়িয়ে পুরো চীনে; সর্বোশেষ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা’র (ডব্লিউএইচও) রিপোর্টে বলা হচ্ছে,‘চীন ছাড়াও বিশ্বের ২৭টি দেশে অস্তিত্ব জানান দিয়েছে প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাস’। এ বাস্তবতাকে সামনে রেখে করোনা আতঙ্ক এবং তা রোধে নিত্যনতুন শিরোনাম ওঠে আসছে আন্তর্জতিক গণমাধ্যমগুলোতো।
যদিও গবেষকরা বলছেন, করোনার পূর্ণ প্রতিষেধক তৈরিতে লেগে যেতে পারে আরও কয়েক মাস।
এমন যখন বাস্তবতা, তখন অস্ট্রেলিয়ার কুইন্সল্যান্ড প্রদেশের প্রসিদ্ধ পর্যটনস্থান ‘হ্যামিল্টন আইসল্যান্ড’র উদ্দেশ্যে রাজধানী সিডনি ছেড়েছিলো দেশটির অভ্যন্তরীণ রুটের একটি উড়োজাহাজ। ওই ফ্লাইটে ভ্রমণ করছিলেন দু’জন চীনা নাগরিক।
ওই দুই চীনা ভ্রমণকারী করোনা ইস্যুতে সচেতনতার অংশ হিসেবে নিজেরাই নিজেদের মাথা থেকে পা পর্যন্ত পলিথিন ফুয়েলে মুড়িয়ে নেন। ফ্লাইটে দুই ব্যক্তির এমন কাণ্ড মোবাইল ফোনে ধারণ করে রাখেন ফ্লাইটে থাকা এক নারী সহযাত্রী।
হ্যামিল্টন আইসল্যান্ডে অবতরণের পর ওই নারী চীনা দুই নাগরিকের এমন সচেতনতামূলক ‘কাণ্ড’র ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট করেন। মাত্র ১৫ সেকেন্ডের ওই ভিডিও মুহূর্তে ভার্চুয়াল দুনিয়ায় সাড়া ফেলে, ভাইরাল হয়।
ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করে ওই নারী যাত্রী ক্যাপশনে লেখেন,‘সম্প্রতি উড়োজাহাজে আমার পেছনে, যখন (তুমিও) করোনা ভাইরাসে চরমভাবে ভীত’।
[‘Currently behind me on the plane. When [you’re] super scared of coronavirus.’]
চীনের বাইরে যে দেশগুলোতে করোনা ছড়িয়েছে, তার মধ্যে অন্যতম অস্ট্রেলিয়া। দেশটিতে এখন পর্যন্ত ১৫ জনকে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত বলে শনাক্ত করা হয়েছে। অস্ট্রেলিয়ায় শনাক্ত হওয়া ১৫টি ঘটনা পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, সবকটিতেই সরাসরি চীনের উহানের সঙ্গে যোগসূত্র রয়েছে।
এমন পরিস্থিতি মোকাবেলায় কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। শেষ দু’সপ্তাহে যেসকল পর্যটকেরা চীনের ভূখণ্ডে প্রবেশ করেছেন, তাদের অস্ট্রেলিয়াতে ঢোকার ক্ষেত্রে কড়াকড়ি আরোপ করেছে দেশটি। দেশটির এমন কঠোর পদক্ষেপ চীনসহ বিশ্বের সকল দেশের নাগরিকদের জন্য প্রযোজ্য হচ্ছে। অর্থ্যাৎ, শেষ ১৪ দিনে চীনে প্রবেশকরা কোন দেশের পর্যটকই অস্ট্রেলিয়ায় প্রবেশ করতে পারবেন না।