বিশ্বের বিভিন্ন দেশে করোনা ভাইরাসে মৃত্যুর ঘটনা ঘটলেও বাংলাদেশ ছিল সেই তালিকার বাইরে। এবার বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো করোনা আক্রান্ত একজন রোগীর মৃত্যুর কথা নিশ্চিত করেছে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর)।
বুধবার সংবাদ সম্মেলনে আইইডিসিআর এর পরিচালক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা এ তথ্য জানিয়েছেন। মৃত্যুবরণ করা ওই রোগীর বয়স ৭০ বছরের বেশি ছিল। তিনি উচ্চ রক্তচাপ, কিডনি এবং ডায়াবেটিসের রোগে ভুগছিলেন, মৃত্যুর আগে তিনি কোয়ারেন্টাইনে ছিলেন। বিষয়টি খুবই চিন্তার।
করোনা ভাইরাস সংক্রমণ ঠেকাতে সরকার নানামুখী পদক্ষেপ নিলেও জনগণের একাংশ অনেকটা বেখেয়ালি হয়ে কোনো সতর্কতা মানছে না বলে সংবাদ প্রকাশ হচ্ছিল। জনসমাগম এড়িয়ে চলতে যতই পরামর্শ-নির্দেশনা দেয়া হোক না কেন, কোনো কাজই যেন হচ্ছিল না। এরই মধ্যে এই মৃত্যুর খবর এলো।
কোভিড-১৯ নামধারী এই করোনা ভাইরাস খুবই ছোঁয়াচে বলে দ্রুত সংক্রমণ ঘটে। ইটালি ও ইরানের ঘটনা বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, প্রথম প্রথম তারা এই ভাইরাসকে খুব একটা পাত্তা না দেয়াতে এই রোগ খুব দ্রুত সেসব দেশে ছড়িয়ে যায় এবং অনেক মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে।
বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে জনসমাগম হয়েছে গত কয়েকদিন এবং অনেকটা ‘ছুটি’র আমেজে অনেকে অনেক জায়গায় ঘুরতে বেড়িয়ে যাচ্ছেন। করোনা মুক্তির জন্য অর্ধলাখ মানুষের সমাবেশ-দোয়া মাহফিলও করতে দেখা গেছে, যেখানে সৌদি আরব ও মালয়েশিয়াসহ বিভিন্ন মুসলিম দেশগুলোতে মসজিদে জামাতে নামাজ পর্যন্ত নিষিদ্ধ করা হয়েছে সাময়িক সময়ের জন্য।
একটি বিষয় লক্ষ্যণীয়, করোনা ভাইরাসের উৎপত্তিস্থল চীন বেশ সফলতার সঙ্গে সে দেশে করোনার প্রকোপ নিয়ন্ত্রণ করতে পেরেছে। কিন্তু অন্যান্য উন্নত দেশে এই ভাইরাস দ্রুত ছড়াচ্ছে। সেই হিসেবে আমাদের দেশ আরও ঝুঁকির মধ্যে, কারণ আমরা বিষয়টিকে হালকাভাবে নেয়া থেকে শুরু করে সাবধান হচ্ছি না। প্রয়োজনে আমাদের দেশে জরুরি আইন ও নিয়ম করে এই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা জরুরি বলে আমরা মনে করি।
এ বিষয়ে সংশ্লিষ্টরা যতো দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নেবেন, ততই আমাদের জন্য উপকার হবে।