করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউয়ের নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে দেশের প্রধান রপ্তানি আয়ের তৈরি পোশাক ও চামড়া খাতে। এর ফলে চলতি অর্থবছরের প্রথমার্ধে এ খাতে রপ্তানি আয় কমেছে প্রায় ৩ শতাংশ। আর চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যের রপ্তানি কমেছে ৬ দশমিক ২৪ শতাংশ।
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সর্বশেষ হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
ইপিবির তথ্যমতে, চলতি অর্থবছরের প্রথম ৬ মাসে (জুলাই-ডিসেম্বর) ১ হাজার ৫৫৪ কোটি ৫৫ লাখ ডলারের পোশাক রপ্তানি হয়েছে। যা গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় প্রায় ৩ শতাংশ কম। আর লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৪ দশমিক ১২ শতাংশ কম।
চলতি বছরের প্রথম ৬ মাসে পোশাক রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১ হাজার ৬২১ কোটি ডলার। উল্লেখিত সময়ে ওভেন পোশাকের রপ্তানি ১০ দশমিক ২২ শতাংশ কমলেও নিট পোশাকের রপ্তানি বেড়েছে ৩ দশমিক ৯০ শতাংশ।
এছাড়া গত অর্থবছরের তুলনায় চলতি অর্থবছরের একই সময়ে হোম টেক্সটাইলের রপ্তানি বেড়েছে ৪৭ দশমিক ৯৩ শতাংশ। বেড কিচেন, টয়লেট লাইনসের পোশাকের ১২ দশমিক ৯৯ শতাংশ ও অন্যান্য পোশাকের রপ্তানি বেড়েছে ১০৮ দশমিক ০৭ শতাংশ।
পোশাকখাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, গত বছরের মার্চ থেকেই পোশাক রফতানির ক্রয়াদেশ বা অর্ডার বাতিল হতে থাকে। একইসঙ্গে ক্রয়াদেশ স্থগিতও হতে শুরু করে। গত বছরের ৩ এপ্রিল পর্যন্ত করোনার প্রভাবে পোশাকের ক্রয়াদেশ স্থগিত ৩০০ কোটি ডলার ছাড়িয়ে যায়। এর ফলে চলতি অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে (জুলাই-নভেম্বর) তৈরি পোশাক রফতানি থেকে আয় হয় এক হাজার ২৮৯ কোটি ৪৫ লাখ ডলার। যা গত বছরের একই সময়ের চেয়ে এক দশমিক ৪৮ শতাংশ কম।
চামড়াখাতের রপ্তানিনেতেও লেগেছে করোনার ধাক্কা। চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য রপ্তানি করে বিগত অর্থবছরের প্রথম ৬ মাসের তুলনায় চলতি অর্থবছরের প্রথম ৬ মাসে কমেছে ৬ দশমিক ২৪ শতাংশ কম।
এই সময় ৪৪ কোটি ৬১ লাখ ডলারের চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য রপ্তানি হয়েছে। এরমধ্যে ৫ কোটি ৪৬ লাখ ডলারের চামড়া, ১১ কোটি ২৭ লাখ ডলারের চামড়াপণ্য ও ২৭ কোটি ডলারের চামড়ার জুতা রপ্তানি হয়েছে। তবে জুতা রপ্তানি দুই শতাংশ কমেছে, চামড়া ও চামড়াপণ্য রপ্তানি কমেছে যথাক্রমে ১৭ ও সাড়ে ১০ শতাংশ।
একক মাস হিসেবে গত বছরের ডিসেম্বরে পণ্য রপ্তানি থেকে মোট আয় এসেছে ৩৩১ কোটি ডলার। যা ২০১৯ সালের ডিসেম্বরের চেয়ে ৬ দশমিক ১১ শতাংশ কম। আর লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে কম ৬ দশমিক ১৩ শতাংশ।
চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরের প্রথম ৬ মাসে (জুলাই-ডিসেম্বর) গত ২০১৯-২০ অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে সার্বিক রপ্তানি কমেছে শূন্য দশমিক ৩৬ শতাংশ। লক্ষ্যের চেয়ে আয় কমেছে ২ দশমিক ২৫ শতাংশ।