করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে বিশ্বজুড়ে চলছে ‘লকডাউন’, আর এ অবস্থার মধ্যে আশঙ্কাজনক হারে বেড়ে গেছে নারী সহিংসতা এবং নির্যাতনের হার। ঘরে আটকে থাকার ফলে নারীরা মূলত তাদের বন্ধু বা স্বামীর নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন। জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস এ তথ্য জানিয়েছেন।
রোববার রাতে এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, করোনাভাইরাসের এই প্রাদুর্ভাবের সময় বিশ্বব্যাপী নারীর প্রতি পারিবারিক সহিংসতা বেড়ে গেছে বহু গুণ। অনেক নারী ও তরুণী তাদের নিজ বাড়ি থেকে সবচেয়ে বেশি সহিসংসতার হুমকির মুখে পড়েছে। বিষয়টি খুব দুঃখজনক। আমি বিশ্বজুড়ে সবাইকে নিজ বাড়িতে শান্তি বজায় রেখে বসবাসের অনুরোধ জানাচ্ছি।
পারিবারিক সহিংসতা বিষয়ে সহায়তা দেয়া ব্রিটেনের দ্য ন্যাশনাল ডমেস্টিক অ্যাবিউজ নামে একটি প্রতিষ্ঠান জানিয়েছে, সম্প্রতি তাদের হেল্পলাইনে সাহায্য চাওয়ার পরিমাণ বেড়ে গেছে। দুই সপ্তাহ আগে যখন লকডাউন ছিল না, তখনকার তুলনায় বর্তমানে সাহায্য চাওয়ার পরিমাণ বেড়েছে ২৫ শতাংশ।
করোনাভাইরাসের এই সময় সব দেশের সরকারকে নারীর প্রতি সহিংসতা রোধে ব্যবস্থা নিতে আহ্বান জানিয়েছেন গুতেরেস। করোনাভাইরাস মোকাবিলার কৌশলে সরকারগুলোকে এ বিষয়টিও যুক্ত করতে আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। বিবৃতি ও ভিডিও বার্তায় তিনি লড়াইরত পক্ষগুলোকে ফের যুদ্ধবিরতির আহ্বানও জানিয়েছেন।
ডমেস্টিক অ্যাবিউজের পক্ষ থেকে আরও জানানো হয়েছে, লকডাউনের সময় নির্যতনের শিকার নারীরা ঘর থেকে বের হতে পারছেন না। বাধ্য হয়ে তাদের ঘরেই থাকতে হচ্ছে। তবে কেউ কেউ নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে লকডাউনের মধ্যেই ঘর ছাড়ছেন।
ঘর ছেড়ে পালানো এক নারী বিবিসিকে বলেন, ছয় মাস ধরে তার স্বামী তাকে মানসিক ও শারীরিকভাবে নির্যাতন করে আসছে। তবে কয়েকদিন আগে লকডাউন শুরু হওয়ার পর থেকেই সেই নির্যাতন বেড়ে গেল বহুগুণ। বাধ্য হয়ে এই দুর্যোগের মুহূর্তে তিনি ঘর ছেড়েছেন।
পারিবারিক সহিংসতা নিয়ে কাজ করেন স্যান্ড্রা হোরলে। তিনি জানিয়েছেন, গত বছর শুধু ইংল্যান্ড ও ওয়েলসে ১৬ লাখ নারী পারিবারিক সহিংসতার শিকার হয়েছিলেন। এ বছর এ সংখ্যা বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কায় রয়েছেন তিনি।