করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে এখন দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গ্র্যাজুয়েশন সম্পন্ন করা মেধাবী এবং উচ্চশিক্ষা প্রত্যাশী শিক্ষার্থীরাও চরম হতাশা এবং অনিশ্চয়তার সম্মুখীন হচ্ছে।
আমেরিকান দূতাবাস থেকে জানানো হয়েছে যে- সরকার থেকে কোন ধরণের অনুমতি না পেলে তারা এ ব্যাপারে কোন সমাধান করতে অপারগ।
স্বাস্থ্যবিধি মেনে ভিসা প্রদানে দূতাবাসের কার্যক্রম সচল রাখার দাবি জানিয়েছে শিক্ষার্থীরা।
চুয়েট থেকে পাস করা শিক্ষার্থী আমেরিকান এফ-ওয়ান ভিসা প্রত্যাশী জ্যোতির্ময় সাহা জানান, “করোনাভাইরাসের জন্য দুইবার আমি আমার ভর্তি পিছিয়েছি; প্রথমবার ফল ‘২০ থেকে স্প্রিং ‘২১ এ, আর এখন ফল ‘২১ এ। যুক্তরাষ্ট্রে পিএইচডি নিজ খরচে পড়া অসম্ভব বিষয়। আমার প্রফেসর আমাকে দুইবার ছাড় দিয়েছেন, কিন্তু এবার না যেতে পারলে আমার ফান্ডিং বাতিল হওয়ার তীব্র শংকায় আছি। এটি খুব হতাশাজনক বিষয় |”
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন গ্র্যাজুয়েট বলেন- “আমি দেশের একটি স্বনামধন্য বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ছিলাম কিন্তু বাংলাদেশের শিল্প-ব্যাবস্থাপনার পশ্চাৎপদতা আর উন্নত প্রযুক্তির অভাব অনুধাবন করে আমি এ বিষয়ে উচ্চতর ডিগ্রী নেবার সিদ্ধান্ত নেই। গত বছর একাধিক আমেরিকান বিশ্ববিদ্যালয়ে সুযোগ পেয়েও সময়মত ভিসা না পাওয়ায় আমার স্কলারশিপ বাতিল হয়ে যায়, হতাশা ভুলে এ বছর আমি আবার আবেদন করি এবং এবারও একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ে আমি স্কলারশিপ পেয়েছি। কিন্তু এবারও কি আমাকে একই পরিণতির শিকার হতে হবে।”
অপর একজন শিক্ষার্থী জানান- “প্রত্যেকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন করতে আবেদন ফি এবং স্কোর সাবমিশন বাবদ ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা খরচ হয়, দিতে হয় জি আর ই, টোফেল, আইইয়েলটিএস এর মত পরীক্ষা যেগুলোর প্রত্যেকটির ফি ১৭ হাজার টাকা করে এবং এগুলোর মেয়াদ শেষ হয়ে যাবে এবছরই। আমার পরিবার আর্থিকভাবে সচ্ছল ছিল না বিধায় আমি প্রাইভেট টিউশনি করে এই টাকা জমিয়ে আবেদন করেছিলাম। কিন্তু এই ভিসা জটিলতায় আমার স্বপ্ন আজ ভেঙ্গে যাবার উপক্রম।”
একই ভাবে বিশ্বের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ বলে খ্যাত এম আই টি, স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়, সুযোগ প্রাপ্ত একাধিক শিক্ষার্থী আজ অনিশ্চয়তা আর স্বপ্নভঙ্গের দ্বারপ্রান্তে।
সংকট নিরসনে উচ্চ শিক্ষা প্রত্যাশী শিক্ষার্থীরা নিজ উদ্যোগে একসাথে হয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে যোগাযোগের চেষ্টা করলে তাদের প্রতিনিধি দলকে আশ্বাস দেয়া হয়েছে কিন্তু এখনও এ বিষয়ে কোন সুরাহা হয়নি। আমেরিকান দূতাবাস থেকে জানানো হয়েছে যে- সরকার থেকে কোন ধরণের অনুমতি না পেলে তারা এ ব্যাপারে কোন সমাধান করতে অপারগ।
জাতির ভবিষ্যৎ মেধাবী এ তরুণ সমাজের স্বপ্ন বাঁচিয়ে রাখতে সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তর এবং আমেরিকান দূতাবাসের যৌথ উদ্যোগে শিক্ষার্থী দের ভিসা প্রদানে দূতাবাসের কার্যক্রম লকডাউনের আয়তামুক্ত রাখা এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে এই সেবা সচল রাখার জোর দাবী শিক্ষার্থী, অভিভাবকসহ সকলের।