করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে যুক্তরাষ্ট্রে চলছে লকডাউন। তবে দেশটির প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প লকডাউন প্রত্যাহার নিয়ে রাজ্য সরকারগুলোর সঙ্গে দ্বন্দ্বে জড়িয়েছেন। তিনি চাইছেন, দেশব্যাপী লকডাউন তুলে নেওয়ার সর্বাত্মক ক্ষমতা দেওয়া হোক তাকে। তবে অনেক রাজ্যের গভর্নর ও আইন বিশেষজ্ঞরা ট্রাম্পের এমন দাবির ঘোর বিরোধী।
বিবিসি অনলাইনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, স্থানীয় সময় সোমবার হোয়াইট হাউসে করোনাভাইরাস নিয়ে নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে হাজির হন ট্রাম্প। এই সংবাদ সম্মেলনে ‘সর্বাত্মক ক্ষমতার’ বিষয়টি নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে রীতিমতো কথা কাটাকাটি হয়েছে তার।
যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানে বলা হয়েছে, জননিরাপত্তা ও শৃঙ্খলা বজায় রাখার ক্ষমতা রাজ্যের হাতে থাকবে। এই বিধান অনুযায়ী দেশটির পূর্ব ও পশ্চিম উপকূলের ১০টি রাজ্য লকডাউন তুলে নেওয়ার পরকিল্পনা করছে। তবে যেসব রাজ্যের গভর্নর লকডাউন বজায় রাখতে চান তাদের চাপ দেওয়ার এখতিয়ার প্রেসিডেন্টের নেই।
ট্রাম্প বলেন, করোনাভাইরাসের কারণে স্থবির হয়ে যাওয়া অর্থনীতির চাকা আবার কীভাবে সচল করা যায় সে পরিকল্পনা করছে তার প্রশাসন।
আগামী ১ মে থেকে লকডাউন শিথিল করার ইঙ্গিত দিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন। এর আগে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত মানুষকে প্রয়োজনীয় কাজ ছাড়া বাইরে বের হতে নিষেধ করা হয়েছে। কোনো জায়গায় ১০ জনের বেশি জড়ো না হতে ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে চলতে আহ্বান জানানো হয়েছে।
সাংবাদিকরা এক পর্যায়ে ট্রাম্পকে জিজ্ঞাসা করেন, যে লকডাউনের সিদ্ধান্ত রাজ্যের গভর্নররা নিয়েছেন তা প্রেসিডেন্ট তুলে নেওয়ার এখতিয়ার রাখেন কিনা। এমন প্রশ্নের জবাবে বেশ চটে গিয়ে প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘যখন কোনো ব্যক্তি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট, তখন সমস্ত ক্ষমতাই তার হাতে থাকে।’
তবে আইন বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, রাজ্য বা স্থানীয় পর্যায়ে জনস্বাস্থ্য বিষয়ক বিধিনিষেধ তুলে নেওয়ার এখতিয়ার কোনোভাবেই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের নেই।
যুক্তরাষ্ট্রে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন প্রায় ছয় লাখ মানুষ। তাদের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ২৩ হাজার ৬৪৪ জনের। ১০ হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে শুধু নিইউয়র্কে। এ রাজ্যটিতে আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ২ লাখ। সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৩৬ হাজার ৯৪৮ জন।