আগের সব রেকর্ড ভেঙে একদিনে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত শনাক্তের বিশ্ব রেকর্ড গড়েছে ভারত। শেষ ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে নতুন ৩ লাখ ১৫ হাজার ৮০২ জন রোগী শনাক্ত হয়েছে।
একদিনে আক্রান্তের হিসাবে এই সংখ্যা শুধুমাত্র ভারতেই নয়, বিশ্বেও সর্বোচ্চ। এর আগে চলতি বছরের ৮ জানুয়ারি সর্বোচ্চ শনাক্তের সংখ্যা ছিল যুক্তরাষ্ট্রে। সেদিন দেশটিতে শনাক্ত হয়েছিল ৩ লাখ ৭ হাজার ৫৮১ জন।
ওয়ার্ল্ডোমিটার্স ডট ইনফো-এর পরিসংখ্যান বলছে, যুক্তরাষ্ট্রকে সরিয়ে দৈনিক সংক্রমণের নতুন রের্কড এখন ভারতের।
দেশটিতে এই প্রথম একদিনে ৩ লাখের বেশি মানুষের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। শুধু তাই নয়, মোট শনাক্ত রোগী সংখ্যায় গত সপ্তাহে ব্রাজিলকে টপকে দ্বিতীয় স্থানে উঠে আসা ভারত এখন কেবল যুক্তরাষ্ট্রেরই পেছনে।
ভারতের সরকারি হিসাবেই আক্রান্ত সংখ্যা ১ কোটি ৫৯ লাখ ছাড়িয়ে গেছে। ২৪ ঘণ্টায় আরও ২ হাজার ১০২ জন যোগ হয়ে মৃত্যুর সংখ্যাও ১ লাখ ৮৪ হাজার ৬৭২ জনে দাঁড়িয়েছে।
এমন পরিস্থিতিতে আরও একটি খারাপ খবর দিয়েছেন বিশষজ্ঞরা। তারা বলছেন, ভারতের বর্তমান ভাইরাসটি ‘ট্রিপল মিউট্যান্টের’। যা আগের চেয়েও তিনগুণ শক্তিশালী।
তাদের দাবি, তিনবার জিনের গঠন বিন্যাস বদলে এই প্রজাতি আরও সংক্রামক ও ছোঁয়াচে হয়ে উঠেছে। পশ্চিমবঙ্গ, দিল্লি ও মহারাষ্ট্রে করোনা আক্রান্ত রোগীদের নমুনায় এই নতুন প্রজাতি চিহ্নিত করা হয়েছে।
সংক্রমিত ব্যক্তির থুতু-লালায় পাওয়া ওই ভাইরাল স্ট্রেনের জিনোম সিকুয়েন্স অর্থাৎ জিনের বিন্যাস পরপর সাজিয়ে দেখা গেছে, নতুন প্রজাতিতে রূপ বদল হয়েছে তিন বার। স্পাইক প্রোটিন এমনভাবে বদলে গিয়েছে যে ভাইরাস আরও দ্রুত ছড়িয়ে পড়ার ক্ষমতা পেয়েছে। এটি এখন সুপার স্প্রেডারে রূপ নিয়েছে। নতুন ভ্যারিয়েন্টের কারণে আবারও বদলাতে শুরু করবে করোনার উপসর্গ।
যে উপসর্গ এখনকার ভেরিয়েন্টের সংক্রমণের ফলে হচ্ছে, তা আর নাও থাকতে পারে। এর সঙ্গে যুক্ত হতে পারে একাধিক নতুন উপসর্গ। তবে নতুন এই মিউট্যান্টের বিরুদ্ধে ভ্যাকসিন কতটা কার্যকরী তার জন্য পরীক্ষার প্রয়োজন রয়েছে বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
গত বছরের ৩০ জানুয়ারি ভারতে প্রথম করোনা আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। জনস হপকিনস ইউনিভার্সিটির করোনাভাইরাস রিসোর্স সেন্টারের তথ্য অনুযায়ী, সংক্রমণের দিক থেকে বর্তমানে বিশ্বে ভারতের অবস্থান প্রথমে। ভারতের পরে রয়েছে ব্রাজিল ও যুক্তরাষ্ট্র।