গত ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাস শনাক্তের হার ২১ দশমিক ৫৬ শতাংশ। যা একদিনের হিসাবে এ যাবতকালের সর্বোচ্চ। গতকাল সোমবার পবিত্র ঈদুল ফিতর থাকায় আগের দিনের নমুনাসহ পাঁচ হাজার ৪০৭টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এতে শনাক্ত হয় এক হাজার ১৬৬ জন।
মঙ্গলবার দুপুরে করোনাভাইরাস বিষয়ক নিয়মিত হেলথ বুলেটিনে এ তথ্য জানান স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা।
তিনি বলেন, ‘গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা সংগ্রহ হয়েছে চার হাজার ৪১৬টি। নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে আগের দিনের নমুনাসহ পাঁচ হাজার ৪০৭টি। এ পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষা হয়েছে দুই লাখ ৫৮ হাজার ৪৪১টি। যা নমুনা পরীক্ষা হয়েছে, তাতে শনাক্ত হয়েছে এক হাজার ১৬৬ জন এবং এখন পর্যন্ত শনাক্ত হয়েছে ৩৬ হাজার ৭৫১ জন। আজ শনাক্তের হার ২১ দশমিক ৫৬ শতাংশ। গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যুবরণ করেছেন ২১ জন এবং এখন পর্যন্ত ৫২২ জন। ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন ২৪৫ জন এবং এখন পর্যন্ত সাত হাজার ৫৭৯ জন।’
তিনি বলেন, নতুন করে যারা মারা গেছেন, তাদের ১৪ জন পুরুষ, সাতজন নারী। এদের মধ্যে ঢাকা বিভাগের ১৫ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে চারজন এবং বরিশাল বিভাগের দুজন রয়েছেন। ২০ জন মারা গেছেন হাসপাতালে এবং একজন মারা গেছেন বাসায়। বয়সের দিক থেকে ১ থেকে ১০ বছরের একজন, ১১ থেকে ২০ বছরের একজন, ত্রিশোর্ধ্ব দুজন, চল্লিশোর্ধ্ব পাঁচজন, পঞ্চাশোর্ধ্ব সাতজন, ষাটোর্ধ্ব তিনজন, সত্তরোর্ধ্ব একজন এবং ৮১ থেকে ৯০ বছর বয়সী একজন রয়েছেন।
ঈদের দিন করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গেল যারা
অঞ্চলভিত্তিক বিশ্লেষণ তুলে ধরে অনলাইন স্বাস্থ্য বুলেটিনে নাসিমা সুলতানা বলেন, ‘এলাকাভিত্তিক বিভাজনে ঢাকা বিভাগে ১৫ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে চারজন এবং বরিশাল বিভাগে দুজনের মৃত্যু হয়েছে। হাসপাতালে মারা গেছেন ২০ জন এবং বাসায় মারা গেছেন একজন।’
‘‘এলাকাকে আরও ভাগ করলে দেখা যায়, ঢাকা মহানগরীতে তিনজন, ঢাকা জেলায় সাতজন, মুন্সিগঞ্জে একজন, নরসিংদীতে একজন, মানিকগঞ্জের একজন, গাজীপুরে একজন, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনে একজন, চট্টগ্রামে জেলায় একজন, কক্সবাজারে একজন, কুমিল্লায় দুজন, পিরোজপুরে একজন এবং ঝালকাঠিতে একজন মৃত্যুবরণ করেন।’’
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়মিত বুলেটিনে করোনার বিস্তার রোধে সবাইকে বাড়িতে থাকার এবং স্বাস্থ্য বিভাগের পরামর্শ মেনে চলার আহ্বান জানানো হয়।
চীনের উহান থেকে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাসে বিশ্বের ২১৩টি দেশ ও অঞ্চলে এখন পর্যন্ত ৫৬ লাখের বেশি মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন। এদের মধ্যে মারা গেছেন তিন লাখ ৪৮ হাজারের বেশি মানুষ। তবে সুস্থ হয়ে ঘরে ফিরেছেন সাড়ে ২৩ লাখের বেশি মানুষ।
করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে প্রথমে ২৬ মার্চ থেকে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে সরকার। পরে বিভিন্ন মেয়াদে ছুটি বাড়িয়ে সর্বশেষ ৩০ মে পর্যন্ত সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে সরকার।
ছুটির সময়ে অফিস-আদালত থেকে গণপরিবহন, সব বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। তবে কাঁচাবাজার, খাবার, ওষুধের দোকান, হাসপাতাল, জরুরি সেবা এই বন্ধের বাইরে থাকছে। জনগণকে ঘরে রাখার জন্য মোতায়েন রয়েছে সশস্ত্র বাহিনীও।